ঢাকা: ‘২০২১ সালের অমর একুশে বইমেলার তারিখ নির্ধারণ হয়নি। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে শারীরিক উপস্থিতিতে বইমেলা হবে।
রোববার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টায় বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি, ১৭ মার্চ ও ২৭ মার্চ প্রস্তাবিত তিন তারিখ প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে। তিনি যে তারিখ নির্ধারণ করবেন সে তারিখেই মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মেলা শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। ফেব্রুয়ারিতে করোনার ভ্যাকসিন দেশে এলে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করছি। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে মেলা আরও পেছাতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের জন্য আমরা প্রস্তাবিত তিনটি তারিখ পাঠাবো। তিনি সিদ্ধান্ত জানাবেন। আমরা মেলা স্থগিত করেছি, বাতিল করিনি।
প্রস্তাবিত তিন তারিখের পরে মেলা হলে ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কার বিষয়ে তিনি বলেন, রোজার পরে মেলা হলে আবহাওয়াকে মাথায় রেখেই মেলার অবকাঠামো তৈরি করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনের পর বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত মেলা আয়োজনের প্রস্তাব বাংলা একাডেমি ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে আগেই পাঠিয়েছিলাম। সে তারিখে মেলা হওয়ার জন্য প্রস্তুত। তবে আমরা আশা করছি, ৭ মার্চের পর যেন মেলা অনুষ্ঠিত না হয়। এরপর রোজা ও ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা থেকে যায়।
বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি ঢাকা মহানগরের সভাপতি মাজহারুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আমরা শুনেছি। আমরা আশা করবো, প্রধানমন্ত্রী মার্চের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাবেন। মার্চের পর বৈরী আবহাওয়ায় আয়োজন করা সম্ভব নয়।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলা একাডেমির শহিদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে বইমেলার তারিখ নির্ধারণের বৈঠক শুরু হয়।
বৈঠকে সংস্কৃতি বিষয় মন্ত্রণালয়, মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির ঊর্ধ্বতনদের পাশাপাশি প্রকাশকদের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
১০ ডিসেম্বর বইমেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে ২০২১ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলা সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সেইসঙ্গে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ভার্চ্যুয়ালি বইমেলার আয়োজনেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন লেখক-সাহিত্যিকরা।
বাংলা একাডেমির এ সিদ্ধান্তকে ‘একতরফা’ ও ‘স্বেচ্ছাচারী’ বলে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন প্রকাশকরা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ ডিসেম্বর সকালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রকাশকদের দুই সংগঠন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির নেতারা।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ভার্চ্যুয়ালি নয়, শারীরিক উপস্থিতিতেই আয়োজিত হবে ২০২১ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলা। তবে প্রথা অনুযায়ী, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এবারের বইমেলা শুরু হচ্ছে না। এজন্য প্রকাশকদের কাছ থেকে প্রস্তাব চাওয়া হয় বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে। এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ ডিসেম্বর শারীরিক উপস্থিতিতে ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা আয়োজনের জন্য বাংলা একাডেমিকে লিখিত প্রস্তাব দেয় প্রকাশকদের দুই সংগঠন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি।
>> বইমেলার তারিখ নির্ধারণের বৈঠক শুরু
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২১, আপডেট: ১৬২৯ ঘণ্টা
ডিএন/এনটি/আরবি