ঢাকা: প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবতা বিবর্জিত এবং এ বাজেট দিয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের পর তাৎক্ষণিক এ প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, মূল্যস্ফীতির চাপ ও পণ্যের লাগাম টেনে ধরার জন্য বাজেটে যেসব সমাধান দেওয়া হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এমনকি মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার যে কথা বলা হয়েছে সেটাও এই বাজেটের মাধ্যমে করা সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় যে পণ্যগুলো আমদানি করা হয়, সেগুলোর ক্ষেত্রে যদি করের হার কমানো হতো, তাহলে জনগণ স্বস্তি পেত। এর প্রতিফলনও বাজেটে দেখা যায়নি।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর কথা আমরা বলেছিলাম। সীমারেখা তিন লাখ থেকে সাড়ে তিন লাখ করা হয়েছে, যা একটি ভালো দিক।
তবে ৩৮টি সরকারি সেবা নিতে গিয়ে যে সেবাগ্রহীতার ট্যাক্স রিটার্ন সাবমিট করতে হবে এবং আয় যাই হোক, ২ হাজার টাকা কর দিতে হবে, সেটা আমাদের কাছে অবিবেচনাপ্রসূত মনে হয়েছে। এই দুই হাজার টাকা ন্যূনতম কর তুলে দেওয়া উচিত- যোগ করেন তিনি।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বাজেটে স্বীকৃতি ও সমাধান দুটোই অপ্রতুল। সামষ্টিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব প্রস্তাব করা হয়েছে, তা বাস্তবতা বিবর্জিত।
এবারের বাজেটের মূল দর্শন হলো- ২০৪১ সালের মধ্যে সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। স্মার্ট বাংলাদেশ চারটি মূল স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট সোসাইটি ও স্মার্ট ইকোনমি।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট হবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে প্রথম বাজেট। এবারের বাজেটে সঙ্গত কারণেই স্বাস্থ্য, কৃষি, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অর্থবছরের পুরো সময়জুড়েই থাকবে সরকারের নানা ধরনের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং বাড়ানো হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বাজেটের আকার চূড়ান্ত করা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেট ছিল ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। তা সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি। আর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছর ছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা।
নতুন বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ব্যতীত) ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫০৭ টাকা। মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছর ছিল ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২৩
জেডএ/আরএইচ