ঢাকা: বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রগতির ধারা সরকারের এ মেয়াদেও অব্যাহত থাকবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হলে আগামী পাঁচ বছরে দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
এছাড়াও জ্বালানিখাতের জন্যও বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১১ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৫ শতাংশ এবং জিডিপির প্রায় ১ শতাংশ। এর মধ্যে বিদ্যুৎখাতে ৯ কোটি ২৮ লাখ ৪১ হাজার ৭০০ টাকা এবং জ্বালানি খাতে ২ কোটি ২৫ লাখ ৬২ হাজার ৩০০ টাকা।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী জানান, ২০২১ সালে মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়েছে। এজন্য মাইল ফলক স্থির করেছি।
অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপশি প্রতিবেশী ভারত, ভুটান ও নেপালের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে উৎপাদন ও বণ্টনের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান মন্ত্রী।
২০১৭ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৮ হাজার ১৬২ মেগাওয়াট উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রও নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
বর্তমানে দেশের প্রায় ৭৮ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে। ২০১৭ সালের মধ্যে ১ হাজার ৪২৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন ও রূপপুরে ২ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।
২০১৫ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য একটি বিশেষ তহবিল ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই তহবিলে এই বছরের বরাদ্দ নিয়ে মোট ৪০০ কোটি টাকার কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে।
বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৬০ হাজারের অধিক প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করার কথাও জানান মন্ত্রী।
জ্বালানিখাতের জন্যও বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাসের যুক্তিসঙ্গত উত্তোলন ও ব্যবহারে দেশীয় সংস্থা বাপেক্সের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালিয়ে নতুন গ্যাস ও তেল ক্ষেত্র অনুসন্ধানে জোর দেব। এক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রেখে সমুদ্র উপকূল ও গভীর সমুদ্রে গ্যাস ও তেল অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করা হবে।
২০১৫-১৬ সাল নাগাদ ২১টি কূপ খননের মাধ্যমে গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেন মন্ত্রী।
গ্যাস ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধি করে অপচয় হ্রাস এবং বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানির প্রক্রিয়াও অব্যাহত থাকবে। মহেশখালী দ্বীপে এলএনজি টার্মিনালসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৭ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৪