এই শ্রেণীর জনগোষ্ঠীর একাংশ বস্তিবাসী। তাদের কাছে বাজেট মন্তব্য জানতে চাইলে উল্টো প্রশ্ন আসে, ‘বাজেট কী? এইডা দিয়া পেট ভরে? বাজেট দিয়া কি ভালো ইফতার-সেহরি হয়? বাজেট হইলে ভালা ঘর পাওন যাইবো?’
বৃহস্পতিবার (৭ জুন) দুপুরে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বাজেট পেশ শুরু করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বাজেট নিয়ে বৃহস্পতিবারই রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানী ঘেঁষে গড়ে ওঠা কড়াইল বস্তি ঘুরে সেখানকার বাসিন্দাদের মন্তব্য চাওয়া হয়। এদের একজন নজিব মিয়া। বস্তির আশেপাশের এলাকায় সিগারেট বিক্রি করেন। দিন শেষে তার লাভ থাকে ১৫০-২০০ টাকা। মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে কড়াইল বস্তিতে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকেন নজিব।
নতুন বাজেট ঘিরে কোনো প্রত্যাশা? এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘বাজেট নিয়া শুনছি মন্ত্রী-এমপিরা কি জানি করে। তয় আমার ঝামেলা হয় অনেক। বাজেট আইলেই সিগারেটের দাম বাইড়া যায়। আর এইডা লইয়া মাইনষের লগে খালি গ্যাঞ্জাম হয়। আবার চাইল-ডাইলের দাম বাইড়া যায়। হেজন্য ইনকাম বাড়ানোর লাইগা ধান্দা বাড়ানো লাগে। নাইলে বউ-বাচ্চা লইয়া না খাইয়া থাকতে হয়। ’
একই প্রশ্নে কড়াইল বস্তির ‘দুই ঘরের মালিক’ ইলিয়াস মোল্যা বলেন, ‘আমার একখান পা নষ্ট দেইখা কাম করতে পারি না। এই ঘর ভাড়ার ট্যাহা দিয়াই চলি। এর লাইগা মাসের শেষ দিন পর্যন্ত খাইতে পাই না। ট্যাহা শেষ হইয়া যায়। আবার ঘরের ভাড়া হগলে টাইমমতন দিয়া পারে না। বাজেট হইলে কি তারা ভাড়া দিয়া পারবো?’
‘বাজেট দিয়া কি ভালা ইফতার আর সেহরি খাওন যায়?’ এমন প্রশ্ন ছুড়ে সাবেরা বেগম বলেন, ‘আমি মাইনষের বাসায় কাম করি। টিভিতে দেহি মাইনষে অনেক ভালা ভালা ইফতারি করে। আবার সেহরিও খায়। আমরা মুরি আর পানি দিয়া ইফতার আবার কহনও ভাত, নাইলে সেহরি না খাইয়াই রোজা রাখতাছি। ইচ্ছা আছিলো খুব ভালা খাবার দিয়া ইফতার সেহরি করুম। বাজেট দিয়া কি এইডা করন যাইবো?’
এই বস্তিতে বাস করেন বিভিন্ন ধরনের শ্রমিক সর্বোপরি দরীদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী একটি জনগোষ্ঠী। তারা জানেন না জাতীয় বাজেট কী? তারা জানতেও চান না। কেবল উপায় খোঁজেন- কিভাবে তিন বেলা খেয়ে দিনাতিপাত করা যায়? বাংলানিউজের সঙ্গে কথোপকথনে বললেনও সেটা, ‘বাজেট দিলে সরকার যেন আমাদের পাবলিকের কথা খেয়াল রাখে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৮
এমএএম/এইচএ/