রোববার (১০ মার্চ) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় প্রাক-বাজেট আলোচনা শেষে অর্থমন্ত্রী এমন তথ্য জানান। এটি ছিলো আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম প্রাক-বাজেট আলোচনা।
প্রাক-বাজেট আলোচনায় বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই), ইকোনমিক রিসার্চ গ্রুপ (ইআরজি), বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) ও বাংলাদেশ জুট গুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘ তিনঘণ্টা আলোচনা শেষে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, আগামী বাজেট হবে সংক্ষিপ্ত, কিন্তু টাকার অংকে বড় হবে। বাজেট সবার জন্য হবে। সংক্ষিপ্ত বাজেট হলেও সবার কথা ঠাঁই পাবে বাজেটে। সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি বাজেটে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। প্রতিটা পরিবারের যেন একটা করে চাকরি পায় সেই ব্যবস্থা থাকবে বাজেটে। প্রতিটা পরিবারে কিভাবে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে সেটা সময় হলেই আপনারা দেখবেন, এখনই এ বিষয়ে কিছু বলবো না।
ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন নিয়ে এক প্রশ্নের জাবাবে মন্ত্রী বলেন, ১ জুলাই থেকে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হবে ঠিকই, কিন্তু সেটা স্বল্প পরিসরে। বিশ্বের কোথাও এমন কি ভারতে এক সঙ্গে বাস্তবায়ন হয়নি। এ জন্য আমরা ধীরে ধীরে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করব।
তিনি বলেন, ভ্যাট আইনে বাস্তবায়নে যদি সারাদেশে ৫০ হাজার মেশিন বসানো হয়, তাহলে সেই মেশিন পরিচালনা করতে গিয়ে জনবল দরকার হবে। এভাবেই কর্মসংস্থানের সুযোগের সৃষ্টি হবে।
আসন্ন বাজেট সংক্ষিপ্ত হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাজেটে কথা কম থাকবে কিন্তু কাজের কথা বেশি থাকবে। যেমন সিঙ্গাপুর ১৮ পাতার বাজেট দেয়, আমরাও ছোট কথার বাজেট পেশ করব। বাজেটের কথা হবে সহজ, যাতে করে দেশের সব মানুষ বুঝতে পারেন। বাজেট হবে প্রবৃদ্ধি বান্ধব, কর্মসংস্থান বান্ধব। প্রাধান্য পাবে রফতানি ও দারিদ্র বিমোচন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছে ‘আমার গ্রাম আমার শহর’। বাজেটেও এ বিষয় গুরুত্ব পাবে। গ্রামে সব ব্যবস্থা করে দেবো। অবকাঠামো উন্নয়নের সব ছোঁয়া লাগবে গ্রামে। গ্রামে এখন ৪জি আছে, কিছু দিন পরে দরকার হলে ৫জি চলে যাবে। গ্রামে বিদ্যুৎ চলে গেছে আমরা অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়ন করব। বিচার পেতে গ্রামের মানুষকে ঢাকায় আসতে হবে না, সেই বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
আগামী বাজেটে দু’টি বিষয় মূল এজেন্ডা উল্লেখ করে মুস্তফা কামাল বলেন, একটি গ্রামে শহরে সুবিধা অন্যটি যুবগোষ্ঠী কর্মসংস্থান। আমরা যুব সমাজকে প্রকৃত অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে তৈরি করতে চাই। এ জন্য সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক জোন করা হচ্ছে। বাস্তবে ইকোনোমিক জোনের সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে। এগুলো কাজ শেষ হলে গ্রামীণ অর্থনৈতিক অবস্থা চাঙ্গা হবে এবং লাখ লাখ যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. ফজলে কবির, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৯
এমআইএস/জিপি