ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাজেট

বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বেড়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৮ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৯
বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বেড়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা  প্রতীকী ছবি

ঢাকা: স্বাস্থ্যখাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৯ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে (২০১৮-১৯) এই খাতে বরাদ্দ ছিল ২৩ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। 

যা গতবারের থেকে ৬ হাজার ৮১ কোটি টাকা বেশি। এছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বরাদ্দ জিডিপির ১.০২ শতাংশ এবং মোট বাজেট বরাদ্দের ৫.৬৩ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে।

   

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বাজেট বক্তৃতায় এ প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন করা হয়।  

রীতি অনুযায়ী, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন। তবে অসুস্থতা বোধ করায় তার অনুরোধে অর্থমন্ত্রীর পক্ষে বাজেট বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন,  স্বাস্থ্যখাতে মোট বরাদ্দের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য ২৫ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি। বর্তমান অর্থবছরে (২০১৮-১৯) এর পরিমাণ ২২ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা। ‘মূলত স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সংক্রান্ত কার্যক্রমগুলো মোট ১২ টি বিভাগ বাস্তবায়ন করছে। আগামী অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতে মোট বরাদ্দ ২৯ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা। যা জিডিপির ১.০২ শতাংশ এবং মোট বাজেট বরাদ্দের ৫.৬৩ শতাংশ। ’      

স্বাস্থ্যখাতে চলমান অর্থবছরের উন্নয়ন কার্যক্রম ছাড়াও প্রস্তাবিত বাজেটে আগামী অর্থবছরের উন্নয়ন সম্পর্কে বক্তৃতায় বলা হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিশ্বমানের বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইউনিট এবং সাধারণ রোগীদের সেবার পরিধি বাড়াতে ওপিডি ভবন-১ ও ওপিডি ভবন-২ এর ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা হবে।  

‘এছাড়া বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি আইন প্রণয়নের কাজ বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আগামী বছরগুলোতে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ স্থাপন ও পরিচালন আইন এবং বাংলাদেশ প্যারামেডিক্যাল শিক্ষা বোর্ড আইন প্রণয়নের উদ্যোগও চলমান রয়েছে। ’

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দ্য মেডিক্যাল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিজ (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স ১৯৮২’ (১৯৮৪ সালের সংশোধিত) অধ্যাদেশ বাতিল করে ‘স্বাস্থ্য সেবা সুরক্ষা আইন, ২০১৯’ প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নার্সিং শিক্ষা সম্প্রসারণে আগামী অর্থবছরে ৩টি নার্সিং কলেজ এবং ৫টি ছাত্রদের হল নির্মাণ করা হবে। অটিস্টিকদের চিকিৎসা ও সামাজিক সুবিধা আরো বাড়ানো হবে।

তিনি বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশের ৮টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সস (ইনমাস) স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি বিদ্যমান ৬টি ইনস্টিটিউটের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। ইনস্টিটিউট অব ইলেক্ট্রনিক্সের গবেষণাগারে সুবিধা উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন এবং রেডিওথেরাপি, ডায়াগনস্টিক রেডিওলজি, নিউট্রন ক্রমাঙ্কন ও মান নিয়ন্ত্রণে স্ট্যান্ডার্ড গবেষণাগার স্থাপন করা হবে।  

‘মা ও শিশু মৃত্যু হার কমানোর সাফল্যে বিশ্বব্যাংকের ‘হিউম্যান ক্যাপিটাল ইনডেক্স ২০১৮’ তে ১৫৭ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে ১০৬ তম স্থানে। এ অগ্রযাত্রা বজায় রাখার কার্যক্রম আগামী অর্থবছরেও চলমান থাকবে। ’  

এর আগে দুপুরে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে  ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শীর্ষক প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়।  

এবারের বাজেটের আকার ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৮ দশমিক ১ শতাংশ। এর মধ্যে বাজেটে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা।  

বাজেটে ঘাটতি দাঁড়াবে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ শতাংশ। ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণ ৬৮ হাজার ১৬ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ উৎস হতে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে নেওয়া হবে ৩০ হাজার কোটি টাকা।

এবারের বাজেটে বড় আকারের ব্যয় মেটাতে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ১৩ দশমিক ১ শতাংশের সমান।

এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আদায় করবে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা; এনবিআর বহির্ভূত কর আদায় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কর ছাড়া আদায় বা প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার ৭১০ কোটি টাকা।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৯
এমএএম/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।