শুক্রবার (১২ জুন) প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী ‘জাতীয় বাজেট ২০২০-২১: সিপিডি’র পর্যালোচনা’ শীর্ষক অনলাইন মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, কোভিড-১৯-এর পরিপ্রেক্ষিতে আরও কালো টাকা কীভাবে সিস্টেমের মধ্যে আসে, সেজন্য আরও কিছু খাতে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে কালো টাকাকে উৎসাহিত করা হয়েছে।
‘কিন্তু সেখান থেকে কোনো লাভ হয়নি। প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার মতো এসেছে। যেটা খুবই নগণ্য। এর মধ্যে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে তত্ত্বাধায়ক সরকারের আমলে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার ওপরে এসেছে। ’
কালো টাকার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ঘোষণা দেওয়ার পরও যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া হয় এবং একটি ম্যাসিভ ড্রাইভ না দেওয়া হয়, তাহলে ঘোষণা দেওয়ার পরও কেউ কালো টাকা সাদা করবে না।
‘এটা সহজাত বিষয়-তারা যদি এতদিন কর ফাঁকি দিয়ে আসতে পারে, তাহলে কেন আবার ঘোষণা দিয়ে কর জালের মধ্যে আসবে? এটার জন্য আসলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। ’
বাজেটের ঘাটতি অর্থায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, বাজেটের ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত ঋণ নেওয়া হবে। যা ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। তবে সরকার জাতীয় সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়িয়ে সেখান থেকে ঘাটতি মেটাতে পারতো। কিন্তু সেটা কেন করা হলো না সেটা বোধগম্য নয়। আর বিদেশি ঋণ ও সাহায্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়িত করতে হবে। তাহলে অর্থছাড় দ্রুত হবে।
তিনি বলেন, বাজেটে প্রধান পাঁচটি খাতের মধ্যে স্বাস্থ্য ও কৃষি প্রাধান্য পায়নি। কোভিড পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ কম দেওয়া হয়েছে। কৃষিখাতে ভর্তুকি দেওয়া হয় কিন্তু ব্যবহার হয় না। প্রকৃত কৃষককে সহায়তা দিতে হবে। করমুক্ত আয়সীমা তিন লাখ করা হয়েছে সেটা ভালো দিক।
জিডিপির প্রবৃদ্ধির নিয়ে ফাহমিদা খাতুন বলেন, আমাদের এই মুহূর্তে জিডিপির প্রবৃদ্ধি কতো হবে না হবে সেটা না ভেবে। কীভাবে আমরা জনগণের জীবন-জীবিকা বাঁচাবো সেটাই হওয়া উচিত মূল লক্ষ্য। কিন্তু আমরা আবার দেখলাম সরকারের এক ধরনের যে মোহ জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রতি সেটাই বারবার ঘুরে ফিরে আসছে।
তিনি বলেন, আমরা জানি পৃথিবীর উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো যে অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে রয়েছে। তারা কিন্তু জিডিপির প্রবৃদ্ধির নিয়ে চিন্তা করছে না। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান জিডিপির প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করেছে। তাতে দেখা গেছে অনেক বড় অর্থনীতির দেশে প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে যাচ্ছে। তাই প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে চিন্তার সময় এখন নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২০
জিসিজি/এএ