ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাজেট

বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে বরাদ্দ ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৫ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২২
বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে বরাদ্দ ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা

ঢাকা: আগামী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জন্য ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ২৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয় ও ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ-আয়ের দেশে উত্তরণে বাংলাদেশ যে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য বিপুল পরিমাণে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। বলাই বাহুল্য, এসব কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাবে। উক্ত ক্রমবর্ধিষ্ণু চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে মানসম্মত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সংস্থান নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। কাজেই সবার জন্য বিদ্যুৎ পৌঁছানো ও দেশজুড়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং নিরাপদ ও টেকসই জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণে সরকার বদ্ধপরিকর।

তিনি বলেন, বিগত ১৩ বছর ধরে বিদুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের নিরলস প্রচেষ্টার ফলে দেশে সম্প্রতি মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ) ২৫,৫৬৬ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে।

বিগত ১৩ বছরে মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ২২০ কিলোওয়াট-আওয়ার হতে ৫৬০ কিলোওয়াট আওয়ারে উন্নীত করতে পেরেছি। এ সময়কালে ৫,২১৩ সার্কিট কিলোমিটার সঞ্চালন এবং ৩,৩৬,০০০ কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মাণ করা হয়েছে এবং বিদ্যুৎ বিতরণে সিস্টেম লস ১৪ শতাংশ থেকে ৮ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণে সরকার সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়নেও গুরুত্ব দিচ্ছে। পায়রা-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন এবং গোপালগঞ্জ-রামপাল ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইনদুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে ইতোমধ্যে কমিশনিং করা হয়েছে। এছাড়া, মোংলা-খুলনা (দক্ষিণ) ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মিত হয়েছে। গোপালগঞ্জ-আমিনবাজার ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইনের ৭.৫ কিমি পদ্মা রিভার ক্রসিং অংশের পদ্মা রিভার বেডের ৭টি টাওয়ারের ফাউন্ডেশনের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাওয়ার ইভ্যাকুয়েশনের জন্য ৪০০ কেভি ও ২৩০ কেভি ভোল্টেজের ৬টি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।

দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি জ্বালানির চাহিদাও দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার একটি বড় অংশ মূলত প্রাকৃতিক গ্যাসের মাধ্যমে পূরণ করা হচ্ছে। দেশে আবিষ্কৃত ২৮টি প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে ২০টিতে উৎপাদন চলছে। ২০০৯ সালে দেশে দৈনিক ১,৭৮৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হতো, যা বেড়ে বর্তমানে ২,৫২৫ মিলিয়ন ঘনফুট হয়েছে। পাশাপাশি গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে দৈনিক প্রায় ৬০০-৭৫৩ মিলিয়ন ঘনফুট তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) হিসেবে আমদানিপূর্বক রিগ্যাসিফাইকরত জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হচ্ছে। দেশের জ্বালানি তেলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড-এর শোধন ক্ষমতা আরও ৩০ লক্ষ টন বৃদ্ধির জন্য ইআরএল ইউনিট-২ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক পরিশোধন ক্ষমতা ৪৫ লক্ষ মেট্রিক টনে উন্নীত হবে।

মুস্তফা কামাল বলেন, আগামী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জন্য ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি, যা বর্তমান ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ছিল ২৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২২
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।