ঢাকা: করোনার অভিঘাত ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট সংকটময় পরিস্থিতিতে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে কৃষি খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেটে কৃষি মন্ত্রণালয়কে ২৪ হাজার ২২০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনে অর্থমন্ত্রী এ প্রস্তাব করেন। এটি স্বাধীন বাংলাদেশের ৫১ তম বাজেট৷ বর্তমান সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের চতুর্থ বাজেট এবং অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের চতুর্থ বাজেট।
বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে ২০২০ সালের শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কোভিড-১৯ মহামারির বিরূপ প্রভাব এবং রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতি মোকাবিলাকে সর্বাপেক্ষা অগ্রাধিকার দিয়ে বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব করা হচ্ছে। খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি হচ্ছে আমাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার খাত। বিগত কয়েক বছর ধরে কৃষি খাতে যে অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে তা আরও বেগবান করে অধিক খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে গবেষণা ও সম্প্রসারণ, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, সেচ ও বীজে প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসন এবং সারে ভর্তুকি প্রদান চলমান থাকবে।
এ বছরের মতো আগামী বছরেও ভর্তুকি ব্যবস্থাপনায় চাপ পড়তে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এটি বাজেট ব্যবস্থাপনায় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, সামগ্রিক পরিস্থিতিতে সরকারের ভর্তুকি ব্যবস্থাপনার ওপরও চাপ সৃষ্টি হয়েছে। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটের প্রাথমিক প্রাক্কলনে এ বাবদ ব্যয় আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১ দশমিক ৯০ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস ও সারের মূল্যের সাম্প্রতিক যে গতিপ্রকৃতি তাতে ভর্তুকি ব্যয় আরও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। আর তা আগামী অর্থবছরের বাজেট ব্যবস্থাপনায় একটি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে।
কোভিড-১৯ অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের আকার হচ্ছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এবারের বাজেটের আকার যেমন বড়, তেমনি এ বাজেটে ঘাটতিও ধরা হয়েছে বড়। অনুদান বাদে এই বাজেটের ঘাটতি দুই লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, যা জিডিপির সাড়ে ৫ শতাংশের সমান। আর অনুদানসহ বাজেট ঘাটতির পরিমাণ দুই লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ৪০ শতাংশের সমান। গত বছর অর্থমন্ত্রী চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছিলেন। তবে সংশোধিত হয়ে এই বাজেটের আকার কমে দাঁড়ায় ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬ ঘণ্টা, জুন ০৯,২০২২
জিসিজি/এনএইচআর