যশোর: বেশ কয়েকদিন ধরে যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে খুলনা বিভাগের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে।
এদিন বিকেল ৩টার দিকে যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমানঘাঁটির আবহাওয়া দপ্তর এ তাপমাত্রা রেকর্ড করে। এর আগে থেকেই প্রচণ্ড রোদের তাপে গলে যাচ্ছে পিচের রাস্তা।
আবহাওয়া অফিস জানায়, শুক্রবার যশোরের তাপমাত্রা ছিল ৪১ দশমিক ২ এবং বৃহস্পতিবার ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এভাবে একের পর এক তাপমাত্রা বাড়ার ফলে যশোরের কিছু সড়কের পিচ গলে যাচ্ছে। স্থানে স্থানে গাড়ির চাকা বা পথচারীর সেন্ডেল ও জুতার সঙ্গেও পিচ উঠে যাচ্ছে।
এদিকে. বিটুমিন গলে পিচ উঠে যাওয়ায় সড়ক সুরক্ষার জন্য মাঠে নেমেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। তারা গলে যাওয়া পিচের ওপরে বালি ও কুচি পাথর দিচ্ছে। যাতে গলে যাওয়া পিচ আবার পূর্বের অবস্থায় থাকে।
যশোর-নড়াইল সড়কের ঝুমঝুমপুর বাজারে রিকশাচালক রফিক হোসেন জানান, রোদ গরমে দুপুর থেকে রাস্তার পিচ গলতে শুরু করে। দুপুর গড়ানোর পর রাস্তার পিচ যেন কাদায় পরিণত হয়। ফলে রিকশার চাকা রাস্তায় আটকে যায়। এতে তাদের দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে, তেমনি রাস্তারও উঁচু-নিচু হয়ে যাচ্ছে।
ঝুমঝুমপুর বাজারের ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম জানান, রাস্তায় হাঁটতে গেলে জুতা পিচে আটকে যাচ্ছে। দু’একজন পিচ থেকে তুলতে না পেরে সেন্ডেল রেখেই চলে যাচ্ছেন। গাড়ির চাকার চাপায় তা রাস্তার পিচের সঙ্গেই আটকে থাকছে।
শুধু যশোর-নড়াইলই নয় যশোর-ঝিনাইদহ ও যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের কিছু কিছু স্থানেও একই অবস্থার খবর পাওয়া গেছে। তবে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহের কারণে বিটুমিন গলে যাওয়ায় সড়কের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সাধারণত সড়কে যে পিচ ব্যবহার করা হয় তা ৬০-৭০ গ্রেডের। এর গলনাঙ্ক ৪৮ থেকে ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে পিচ গলার কথা। কিন্তু তার অনেক আগেই পিচ গলে যাচ্ছে।
সওজ সংশ্লিষ্ট সূত্র পিচ গলার কারণ হিসেবে দাবি করেছে, তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ওপরে থাকলে বাতাসের আদ্রতার কারণে অনুভূতির পরিমাণ আরও কয়েক ডিগ্রি বেশি। সড়কের পিচের ওপরে এই তাপমাত্রা আরও প্রায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকে। আর কালো হওয়ায় এই পিচ সূর্যের তাপও শোষণ করে বেশি। এছাড়া সড়কে চাকার ঘর্ষণের ফলে উৎপাদিত তাপও এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় পিচ গলে যেতে পারে। তবে এর বাইরে সড়কের কাজ মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া জানান, যশোর-নড়াইল সড়কের যেসব স্থানে বিটুমিনের পরিমাণ বেশি পড়েছে, প্রচণ্ড গরমে সেসব জায়গা গলে যাচ্ছে। এজন্য সড়কের গলে যাওয়া স্থানে বালু ও নুড়িপাথর দেওয়া হচ্ছে। যাতে গলে যাওয়া পিচ আগের অবস্থায় থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৪
ইউজি/এএটি