ঢাকা: অযথা গাড়ির হর্ন বাজানো রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে ‘শব্দত্রাস’ নামে একটি কর্মসূচি শুরু করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ আরএফএলের বাইসাইকেল ব্র্যান্ড ‘দুরন্ত’।
মঙ্গলবার (০৭ জুন) রাজধনীর বাড্ডায় আরএফএল গ্রুপের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরএন পাল।
এ কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে চালকদের প্রশিক্ষণ, গণমাধ্যমে শব্দ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে নিবন্ধ প্রকাশ, সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক বার্তা প্রচার ও শব্দদূষণ প্রতিরোধে গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন।
অনুষ্ঠানে আরএন পাল বলেন, শব্দদূষণ আমাদের দেশে অনেক বড় একটি সমস্যা। আর এ শব্দদূষণের বড় কারণ অপ্রয়োজনে গাড়ির হর্ন বাজানো। কারণ দেশে শব্দদূষণের প্রায় ৮০ ভাগের উৎস বিভিন্ন ধরনের যানবহনের হর্ন। আর এ শব্দদূষণের প্রভাব অত্যন্ত ভয়াবহ। উচ্চমাত্রার শব্দ মানুষের শ্রবণশক্তি ও স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। কানে শোনার ক্ষমতা কমে যায়, ঘুম কম হয়, বিরক্তির মাত্রা বেড়ে যায়। শব্দের কারণে শিশুদের শেখার ক্ষমতা কমে যায়। হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদির ঝুঁকি থাকে।
তিনি বলেন, নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে হলে আমাদের অপ্রয়োজনে হর্ন বাজানো বন্ধ করতে হবে। পৃথিবীর এমন অনেক দেশ আছে, যেখানে মানুষ হর্ন একদমই বাজায় না।
চাইলে আমাদের দেশেও এটি সম্ভব। এসব সমস্যার জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা নিজেরাই দায়ী।
তাই সমাধানের জন্য নিজেদের এগিয়ে আসতে হবে। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ হিসেবে আরএফএল গ্রুপের কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। সে দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে
চালকসহ দেশের সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে আমরা এ ক্যাম্পেইন চালু করেছি।
দুরন্ত বাইসাইকেলের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে গাড়ির চালকরা অপ্রয়োজনে হর্ন বাজায় এবং এ হর্ন স্বাস্থ্যের ওপর কী প্রভাব ফেলতে পারে সেটা তারা বুঝতে পারে না। গাড়ির অনিয়ন্ত্রিত হর্ন এবং এর ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করাই এই ক্যাম্পেইনের মূল উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, এই ক্যাম্পেইনের শুরুতে ডিজিটাল মাধ্যমে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে চারটি ভিডিও কন্টেন্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ইনফ্ল্যুয়েন্সারদের এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। যারা বিভিন্ন সময় গাড়ির হর্ন বন্ধের জন্য সামাজিক আন্দোলন সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছেন তাদের বক্তব্য দুরন্ত বাইসাইকেলের পক্ষ থেকে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হবে। এছাড়া সংবাদপত্রে দুরন্ত বাইসাইকেলের উদ্যোগে প্রকাশ হবে শব্দদূষণ সম্পর্কিত নিবন্ধ ও কলাম। গণমাধ্যমে শব্দদূষণ প্রতিরোধে গোলটেবিল বৈঠক করা হবে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে। তাছাড়া ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে আমরা দেশব্যাপী চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো যাতে তারা অপ্রয়োজনে হর্ন না বাজান।
তিনি আরও বলেন, আমরা এ বছরের মধ্যে ই-বাইক বাজারে নিয়ে আসতে যাচ্ছি যা মোটরসাইকেলের বিকল্প হবে। এটি কার্বন নিঃসরণ করে না। এর ফলে এটি পরিবেশের জন্য ভালো।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দুরন্ত বাইসাইকেলের হেড অব মার্কেটিং শরিফুল ইসলাম, সিনিয়র অপারেশন ম্যানেজার রবিন খান ও ব্র্যান্ড ম্যানেজার খন্দকার আরিফ হোসেনসহ প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০২২
আরআইএস