কারো হাতে লেখা, ‘আই লাভ মাশরাফি’। কারো হাতে ‘ভালোবাসা’ তৌহিদ হৃদয়ের জন্য।
এক-দুজন নয়, ‘ছায়াতল বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে সিলেট স্ট্রাইকার্স মাঠে নিয়ে এসেছে ১৮৪ জন শিশুকে। এদের কারও বাবা নেই, কারও নেই মা। থাকলেও ভাগ্য তাদের ঠেলে দিচ্ছে আভিজাত্য থেকে অনেক দূরে।
গায়ে সিলেটের জার্সির আড়ালে রুম্মান আলির ময়লা শার্ট দেখা যাচ্ছিল স্পষ্ট। মুখে রঙের পেছনে বিষাদের জীবনের ছাপটুকুও বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল না খুব একটা। কথায় রোমাঞ্চের ভাব এনে রুম্মান বলছিল, ‘এই প্রথমে মাঠে আসছি। অনেক আনন্দ লাগতাছে। প্রিয় ক্রিকেটার মাশরাফিকে এত কাছ থেকে দেখতাছি। ’
তার পাশেই বসে আছে রবিউল। শ্যামলীর গোল্ডেন স্ট্রিট ঠিকানা। ওখানেই প্রতিনিয়ত চলে জীবনযুদ্ধ। একদিন সবকিছু দূরে ঠেলতে পারার ভালোলাগা কতটুকু? বলছিল সে, ‘সারাজীবন টিভিতে দেখেছি এই মাঠ, গ্যালারি। আজ এত কাছ থেকে দেখে অনেক ভালো লাগতাছে। ’
রবিউল বা রুম্মনের মতোই সায়িম। প্রথম দুজনের বয়স দশ পেরোলেও তার সেটি হয়নি নিশ্চিতভাবেই। ঠিকঠাক চিৎকারও আসছে না মুখ থেকে। চারপাশে একসঙ্গে হাজার হাজার মানুষ দেখতে পারার বিস্ময় বোধহয় কাটেনি ঠিকঠাকভাবে।
অস্পষ্ট কণ্ঠে সায়িম বলছিল, ‘আমি মিরপুরেই থাকি। এই মাঠের সামনে দিয়েও গিয়েছি অনেকবার। কিন্তু কখনও এখানে ঢুকতে পারিনি। আজ ভেতরে আসতে পেরে আনন্দ লেগেছে। ’
এত এত ক্রিকেটারের উদ্যোগের পেছনের গল্প বলছিলেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের কর্মকর্তা সাইফুর। তিনি বলেন, ‘ছায়াতল বাংলাদেশের সঙ্গে মিলে আমরা ওদের মাঠে নিয়ে এসেছি। এদের দুঃখে-কষ্টের জীবন; একদিন আনন্দে রাখার চেষ্টা আর কী। কে জানে, এখান থেকেই ওরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করবে। একদিন সাকিব-মাশরাফি হবে!’
সিলেট স্ট্রাইকার্স শিশুদের মাঠে এনেছে ‘ছায়াতল বাংলাদেশ’ নামের স্বেচ্ছাসেবী একটি সংগঠনের মাধ্যমে। সংগঠকদের একজন কাকলী কাদের নিপা বলছিলেন, ‘আমরা ওদের শিক্ষা, চিকিৎসা সহ প্রয়োজনীয় সবকিছুই দেই। একদিন ওদের মাঠে নিয়ে আসতে পেরেছি সিলেট স্ট্রাইকার্সের কল্যাণে। ওরাও খুব খুশি হয়েছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২৩
এমএইচবি/এমএইচএম