রোমাঞ্চ ছড়ালো শেষটুকুজুড়ে। থাকলো হার-জয়ের দোলাচলও।
রোববার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএলের প্রথম এলিমেনটরে ফরচুন বরিশালকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে রংপুর রাইডার্স। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রান করে সাকিব আল হাসানের দল। জবাব দিতে নেমে ৩ বল আগেই ম্যাচ জিতে নেয় রংপুর।
টসে জিতে সাকিব আল হাসানের বরিশালকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান রাইডার্স অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। এই ম্যাচ দিয়ে রংপুরের একাদশে যুক্ত হন দুই ক্যারিবিয়ান তারকা নিকোলাস পুরান ও ডোয়াইন ব্রাভো।
ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার মিরাজ ও আন্দ্রে ফ্লেচারের ব্যাটে ভালো শুরু পায় বরিশাল। দুজনের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৪৬ রান। একপ্রান্তে ঝড় তোলেন মিরাজ। তবে আরেক ওপেনার ফ্লেচার ছিলেন নিষ্প্রভ। রংপুরের স্পিনার রাকিবুল হাসানের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে এই ক্যারিবীয় ব্যাটার ১৬ বল খেলে করেন ১২ রান। তবে তিনে নেমে মিরাজকে যোগ্য সঙ্গ দেন মাহমুদউল্লাহ। তাদের জুটিতে আসে ৬৯ রান।
দলকে ১১৫ রানে রেখে রংপুরের লঙ্কান পেসার শানাকার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। এর আগে ২১ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। এরপর রানের চাকা কিছুটা ধীরগতির হয়ে পড়ে। চাপ সামলাতে গিয়ে শানাকার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ৪৮ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৬৯ রান করা মিরাজ।
শেষদিকে শানাকা ও ব্র্যাভোর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপের মুখে পড়ে বরিশাল। তবে ধীরে ধীরে হাত খুলতে শুরু করেন আফগান অলরাউন্ডার করিম জানাত। শেষ পর্যন্ত ২৫ বলে ৩৩ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন তিনি। এছাড়া লঙ্কান অলরাউন্ডার ভানুকা রাজাপক্ষে ১০ বলে করেন ১৭ রান করেন। বল হাতে রংপুরের শানাকা ২ উইকেট এবং রাকিবুল ১ উইকেট নেন।
জবাব দিতে নেমে শুরুতে বেশ বড় ধাক্কাই খায় রংপুর রাইডার্স। পাঁচ বল খেলে কোনো রান না করেই সাজঘরে ফেরত যান নাঈম শেখ। সাকিব আল হাসান এই উদ্বোধনী ব্যাটারকে আউট করার পর প্রথম ওভার করেন মেডেন। সেখান থেকে শামীম পাটোয়ারী ও রনি তালুকদারের ব্যাটে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ায় রংপুর।
তাদের দুজনের ৬১ রানের জুটি ভাঙে কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে সানজামুল ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে রনি ফিরলে। এই ব্যাটার ২ চার ও সমান ছক্কায় ১৭ বলে করেন ২৯ রান। এরপর ক্রিজে এসে ৩ চারে ১৩ বলে ১৮ রান করে আউট হয়ে যান অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান, সাকিবের বলে এলবিডব্লিউ আউট হন তিনি।
ক্যারিবীয়ান ব্যাটার নিকোলাস পুরান এবারের বিপিএলে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে আলো ছড়াতে পারেননি। ৮ বলে ৫ রান করে খালেদ আহমেদের ফুলটস বলে সাকিবের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান তিনি। তবে আরেক প্রান্তে দারুণ খেলতে থাকেন শামীম, খেলেন কিছু দুর্দান্ত শট।
হাফ সেঞ্চুরি করেও ছুঁটেছেন এই ব্যাটার। শেষ অবধি তিনি ৪ চার ও সমান ছক্কায় ৫১ বলে ৭১ রান করে আউট হন খালেদ আহমেদের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে। তার আউটের পর ম্যাচ কিছুটা কঠিন হয়ে পড়ে। শেষ তিন ওভারে রংপুরের দরকার হয় ২৯ রান।
১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে কামরুল ইসলাম রাব্বিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যবধান কমিয়ে আনেন দাসুন শানাকা। এই ওভার থেকে ১০ রান এলেও রংপুর হারায় ডোয়াইন ব্রাভোর উইকেট। পরের ওভারের তৃতীয় বলে খালেদ আহমেদকে বাউন্ডারি হাঁকান মাহেদী হাসান।
শেষ ওভারে রংপুরের প্রয়োজন হয় ৮ রানের। প্রথম বলে এক রান আসার পর মাহেদী হাসানের জোড়া বাউন্ডারিতে ম্যাচ জিতে রংপুর। ১ ছক্কায় শানাকা ১২ বলে ১৬ রান করে অপরাজিত থাকেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩
এমএইচবি/এমএইচএম