শুরুটা হয়েছিল খুবই বাজে। প্রথম ওভারেই দুই উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। শুরুতে ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১১০ রান করে যুক্তরাষ্ট্র। পরে রান তাড়ায় নেমে ১০ বল আগেই জয় পায় ভারত।
ভারত এই জয়ে সুপার এইটে খেলা নিশ্চিত করেছে। ‘এ’ গ্রুপে থাকা পাকিস্তানের আশাও আরেকটু বেড়েছে। এখন পরের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের হারের প্রার্থনায় থাকতে হবে তাদের। এরপর নিজেদের শেষ ম্যাচে আইরিশদের বিপক্ষে জিততে হবে বড় ব্যবধানে।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের একদম প্রথম বলেই উইকেট হারিয়ে ফেলে যুক্তরাষ্ট্র। আর্শদ্বীপ সিংয়ের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান জাহাঙ্গীর, টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের পঞ্চম বোলার হিসেবে ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট পান তিনি। এই রেকর্ডের তালিকায় আছে বাংলাদেশের মাশরাফি বিন মুর্তজার নামও।
ওই ওভারের শেষ বলে আরও এক উইকেট তুলে নেন আর্শদ্বীপ। ৫ বলে ২ রান করে আন্দ্রেস গৌস ক্যাচ দেন হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে। এরপর দলের হাল ধরেন স্টিভেন টেলর ও অ্যারন জোন্স। পাওয়ার প্লের বাকি ৫ ওভারে তেমন রান না করতে পারলেও উইকেট হারায়নি যুক্তরাষ্ট্র। ৬ ওভারে ২ উইকেটে করে ১৮ রান।
অষ্টম ওভারে গিয়ে ফের উইকেট হারায় যুক্তরাষ্ট্র। ২২ বলে ১১ রান করে অ্যারন জোন্স ক্যাচ দেন হার্দিক পান্ডিয়ার বলে। এর মধ্যে স্টিভেন টেলর ধীরে ধীরে হাত খোলেন। কিন্তু তিনিও বেশিক্ষণ উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি।
হার্দিক পান্ডিয়াই ফেরান তাকে। আগের বলে ছক্কা মেরে পরের বলে বোল্ড হয়ে যান। এর আগে ৩০ বলে ২৪ রান করেন টেলর। তার বিদায়ের পর নীতিশ কুমার দলের রান বাড়ানোর চেষ্টা করেন। ২৩ বলে ২৭ রান করার পর তাকে আউট করেন আর্শদ্বীপ সিং। তার বলে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন হার্দিক পান্ডিয়া।
এরপর কয়েকজন ব্যাটারের ছোট ছোট ইনিংসে দলকে লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দেন। কোরি অ্যান্ডারসন ১২ বলে ১৪ ও হারম্রিত সিং ১০ বলে ১০ রান করেন। ৪ ওভারে স্রেফ ৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন আর্শ্বদ্বীপ সিং। তার তো বটেই, ভারতের কোনো বোলারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেরা বোলিং ফিগার এটি।
রান তাড়ায় নেমে দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। এবারের বিশ্বকাপে টানা তৃতীয় ম্যাচে ব্যর্থ হন বিরাট কোহলি। সৌরভ নেত্রভালকারের বলে উইকেটের পেছনে তিনি ক্যাচ দেন মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই। সৌরভের জন্য শুরুটা হয় স্বপ্নের মতো।
পরের ওভারে এসে ফের উইকেট পান তিনি। এবার তার বলে মিড অফে ক্যাচ তুলে দেন ৬ বলে ৩ রান করা রোহিত শর্মা। পাওয়ার প্লেতে আর উইকেট হারায়নি ভারত, তারা করে ৩৩ রান। যুক্তরাষ্ট্রকে পরের সাফল্য এনে দেন আলি খান। তার বলে বোল্ড হয়ে যান ২০ বলে ১৮ রান করা ঋষভ পান্ত।
এরপর শিভাম দুবেকে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন সূর্যকুমার যাদব। কিন্তু তখনও চাপ পুরোপুরিভাবে কাটিয়ে উঠতে পারেননি তারা। সেটিকে আরও বাড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সামনে। কিন্তু ভ্যান স্কালওয়াকের বলে সূর্যের ক্যাচ ফেলে দেন সৌরভ নেত্রভালকার।
তবুও চাপ পুরোপুরি কাটেনি ভারতের জন্য। শেষ ৫ ওভারে ৩৫ রান দরকার ছিল তাদের। নাসাউ কাউন্টির মাঠে সেটি করতে কষ্টই হওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। কিন্তু ১৬তম ওভার শুরুর আগেই ৫ রান পেনাল্টি পেয়ে যায় ভারত। ইনিংসে তৃতীয়বারের মতো এক মিনিটের ভেতর ওভার শুরু করতে না পারায় আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী এই শাস্তি দেওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রকে।
ভারতও এরপর খেলার ধরন বদলে ফেলে। ১৭তম ওভারে টানা দুই বলে ছক্কা ও চার হাঁকান সূর্যকুমার। জয়ের পথও সহজ হয়ে যায় ভারতের জন্য। ২ চার ও সমান ছক্কায় ৪৯ বলে ৫০ রান করে সূর্য ও ৩৫ বলে ৩১ রান করে অপরাজিত থাকেন দুবে।
বাংলাদেশ সময় : ১২০৮ ঘণ্টা, ১৩ জুন, ২০২৪
এমএইচবি