টি-টোয়েন্টিতে অনেকদিন ধরেই দুশ্চিন্তার কারণ সাকিব আল হাসানের ব্যাটিং। চলতি বছর ৭ ম্যাচ খেলে কেবল ৬৯ রান করেছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে বল হাতে ৩ ওভারে ৩০ রান দিয়ে উইকেটহীন থেকেছেন সাকিব। পরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪ বল খেলে করেছেন স্রেফ ৮ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অবশ্য ১ ওভারের (৬ রান) বেশি বল করার সুযোগ পাননি। তবে ব্যাট হাতে নিজেকে আবারও ধরা দিয়েছেন ব্যর্থ রূপে। ৪ বলে ৩ রান করে শিকার হন আনরিখ নরকিয়ার।
এমন পারফরম্যান্সের পর অলরাউন্ডার র্যাংকিংয়ে শীর্ষস্থান হারিয়ে এক ধাক্কায় পাঁচে নেমে গেছেন সাকিব। তবে বাজে সময় পেছনে ফেলে এই অলরাউন্ডার জ্বলে উঠবেন, বলে বিশ্বাস তামিম ইকবালের। নেদারল্যান্ডস ম্যাচকে সামনে রেখে ইএসপিনক্রিকইনফোর সঙ্গে আলাপে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
তামিম বলেন, 'আমার পরামর্শের চেয়েও আমি মনে করি, এমন বাজে সময় সে তার ক্যারিয়ারে আগেও দেখেছে। তার প্রচুর অভিজ্ঞতা আছে এবং আমি অনেকটাই নিশ্চিত, সে ভালোভাবেই ফিরে আসবে। সে বাংলাদেশের অনেক বড় খেলোয়াড়। অনেক ভালো কিছু করেছে, ব্যক্তিগতভাবে অনেক কিছু অর্জন করেছে। শেষ এক বছর ধরে সে অতো বেশি রান করছে না। তবে আমার পুরোপুরি বিশ্বাস আছে যে, ব্যাট ও বল দুটো বিভাগেই অবদান রাখার জন্য সে কোনো একটা উপায় খুঁজে বের করবে। '
গতকাল নেপাল-শ্রীলঙ্কার ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় বাংলাদেশের জন্য সুবিধাই হয়েছে। কেননা আজ নেদারল্যান্ডসকে হারালেই সুপার এইটে এক পা দিয়ে রাখবে তারা। তবে পচা শামুকে পা কাটার ভয়ও আছে। কেননা গত ওয়ানডে বিশ্বকাপেই বাংলাদেশকে হারিয়ে অঘটনের জন্ম দিয়েছিল ডাচরা। তাই বাংলাদেশের স্বস্তিতে থাকার সুযোগ নেই বলে জানালেন তামিম।
তিনি বলেন, 'আমি মনে করি, বাংলাদেশ অনেক চাপে থাকবে। কারণ এই ম্যাচ জেতা তাদের জন্য আবশ্যক। সমর্থকদের সবাই প্রত্যাশা করে, আমরা নেদারল্যান্ডসকে হারাব। তাই শতভাগ চাপ থাকবে। বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার আসল কারণ হবে নেদারল্যান্ডস অধিনায়ক (স্কট এডওয়ার্ডস)। সে এমন একজন, যে স্পিন বেশ ভালো খেলে। আমরা সেটা ২০২৩ বিশ্বকাপে দেখেছি। সে স্কয়ারের দিকে বেশি খেলে। তাই বাংলাদেশের স্পিনারদের নিশ্চিত করতে হবে, স্কয়ারের দিকে বেশি না খেলে সে যেন স্ট্রেটে খেলে। সে যদি স্ট্রেটে খেলে থাকে, তাহলে বাংলাদেশের স্পিনাররা জিতে যাবে। তাই নেদারল্যান্ডসের জন্য সে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। '
সাকিবের মতোই ব্যাট হাতে রান পাচ্ছেন না অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে তার নেতৃত্বের প্রশংসা করে তামিম বলেন, 'শান্ত রান করছে না, তবে তার অধিনায়কত্ব নিখুঁত। শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুটো ম্যাচেই ফিল্ডিং যেভাবে সাজিয়েছে এবং যেসব বদল এনেছে, তা দেখলে মনে হয় বেশ ভালো কাজ করছে সে। একইসঙ্গে সে দারুণ একজন ব্যাটার। আশা করি, বাজে সময় কাটিয়ে দলের হয়ে রান করা শুরু করবে। '
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের খুব কাছাকাছিই ছিল বাংলাদেশ। তা ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আম্পায়ারের ভুল। ম্যাচের ১৭তম ওভারে ওটনিল বার্টম্যানের দ্বিতীয় বল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পায়ে লেগে চলে যায় বাউন্ডারির বাইরে। কিন্তু এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত দেন আম্পায়ার। যদিও মাহমুদউল্লাহ রিভিউ নিলে সিদ্ধান্ত বদলাতে হয় তার। তবে সেই চার আর ফেরত পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশও পরে হেরেছে ৪ রানেই। আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের বিষয়টি বাংলাদেশ দল মাথা থেকে ঝেরে ফেলতে পেরেছে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান ভারতের সাবেক অধিনায়ক অনিল কুম্বলে। এখনো তা নিয়ে চিন্তা করলে, সেটা বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকরই বলে মনে করেন তিনি।
কুম্বলের কথার সঙ্গে একমত পোষণ করে তামিম বলেন, 'আমি অনিল ভাইয়ের সঙ্গে একমত। ফেসবুক ও সমর্থকদের মধ্যে এ বিষয়টি আজীবন থেকে যাবে। তবে ক্রিকেটারদের বোঝা উচিত, আমি নিশ্চিত বাংলাদেশও জানে যে, নিয়মটা ম্যাচের আগে থেকেই বানানো। এর বিপরীতও হতে পারত। দক্ষিণ আফ্রিকার বেলায় এমনটা ঘটলে হয়তো তারাও অভিযোগ জানাত। নিয়মটির রাখা, না রাখা নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। কিন্তু আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, খেলোয়াড় এটা নিয়ে ভাববে না। পরের ম্যাচ নিয়ে ভাবা উচিত তাদের। আপনি (কুম্বলে) সঠিকই বলেছেন, যদি খেলোয়াড় কিংবা ম্যানেজমেন্ট এটা নিয়ে কথা বলে থাকে, তাহলে তাতে বাংলাদেশেরই ক্ষতি হবে। '
বাংলাদেশ সময় : ০১০০ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২৪
এএইচএস