ঢাকা: বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তাদের যোগ সাজশে টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাসকে বিক্রির ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে সাবেক ক্রিকেটার, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা, ক্রীড়াপ্রেমী ও উদীয়মান ক্রিকেটাররা এ অভিযোগ করেন।
সেইভ বাংলাদেশ ক্রিকেট ও বাংলা টাইগারস্ ক্রিকেট ফ্যান ক্লাব নামের দুইটি সংগঠন এর আয়োজন করেন।
মানববন্ধনে ‘এক দাবি এক দেশ, ক্রিকেট খেলবে বাংলাদেশ’ ‘নো মানি, ইউ ওয়ান্ট ওনলি ক্রিকেট এনজয় ক্রিকেট’ ‘হাউ আইসিসি ওয়ার্ক’ বেশ কিছু শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে উদীয়মান ক্রিকেটার, ক্রীড়া প্রেমীরা প্রতিবাদ জানান।
বিসিবি’র বর্তমান কাউন্সিলর মোজাম্মেল হক চঞ্চল বলেন, বাংলাদেশের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বাংলাদেশ টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছে।
ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে একটি দেশের ‘এজেন্ট’ কৌশলে টাকার লোভ দেখিয়ে এ টেস্ট স্ট্যাটাস কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে।
এ ষড়যন্ত্রকারিদের বিষ দাঁত ১৬ কোটি মানুষ ভেঙে দেবে। তিনি ক্রিকেটকে বাঁচাতে এ ষড়যন্ত্রকারিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানান।
বিসিবি’র বর্তমান কাউন্সিলর সয়লাব হোসেন টিটু বলেন, বিসিবির মধ্যে টাকার বিনিময়ে ভারতের ‘দালালী’ করছে কয়েকজন কর্মকর্তা। অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের নামিদামি ক্রিকেটাররাও এ প্রস্তাবের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন।
ক্রিকেটের কারণে বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে টিকে আছে। এ টেস্ট স্ট্যাটাস না থাকলে বাংলাদেশের ক্রিকেট ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যাবে। তিনি বিসিবির এসব মুখোশধারিদের অবিলম্বে এ প্রস্তাবের নিন্দা ও বিপক্ষে শক্ত অবস্থান গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বিসিবি’র সাবেক কাউন্সিলর আদনান রহমান বলেন, বাংলাদেশের ক্রিকেট হাটি হাটি পা পা করে এগিয়ে যাচ্ছে দেখে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের সহ্য হচ্ছে না।
তারা পরিকল্পিতভাবে টেস্ট স্ট্যাটাস কেড়ে নেওয়ার ফন্দি করছে। টেস্ট স্ট্যাটাস না থাকলে উদীয়মান ক্রিকেটার, বর্তমান ক্রিকেটারদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস হয়ে যাবে। তিনি ‘কু-চক্রী’ এসব কর্মকর্তাদের পদত্যাগ ও প্রস্তাবের বিরোধীতার আহবান জানান।
বিসিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রইসউদ্দীন আহমেদ বলেন, টেস্ট স্ট্যাটাস না থাকলে বাংলাদেশের ক্রিকেট সংকুচিত হয়ে যাবে।
সবার অক্লান্ত পরিশ্রমে বাংলার ক্রিকেট আজ শেকড় থেকে শিকরে। এ প্রস্তাবের বিপক্ষে বিসিবির ২৩ সদস্যের মধ্যে ২০ সদস্য অবস্থান করলেও ‘টাকার’ লোভে একজন ক্রিকেট ধ্বংসের পায়তারা করছে।
এ প্রস্তাব গ্রহন করলে আগামি ৮-১০বছর পর বাংলাদেশ থেকে ক্রিকেট হারিয়ে যাবে। তিনি ক্রিকেট বোর্ডে ‘অনুপ্রবেশকারি’ টাকা খোরদের পদত্যাগ ও এ প্রস্তাব যাতে গৃহীত না হয় সে জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক শফিকুল হক হীরা বলেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কর্ষ্টাজিত এ টেস্ট স্ট্যাটাস কেড়ে নেওয়া হলে প্রয়োজনে ক্রীড়া প্রেমী, উদীয়নমান ক্রিকেটাররা প্রাণ দিয়ে দেবে।
এ ক্রিকেটের কারণে বিশ্বের মানুষ এক নামে বাংলাদেশকে চেনে। ক্রিকেট যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখনই দালাল কয়েকটি রাষ্ট্র বাংলার ক্রিকেট ধ্বংসের ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তিনি ক্রিকেট বাঁচাতে সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা ক্রীড়া প্রেমীদের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহবান জানান।
শফিকুল ইসলাম হীরার সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিসিবির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবু, কাউন্সিলর সামছুদ্দোহা চৌধুরী, বখতিয়ার উদ্দিন, ক্রীড়া সংগঠক ওয়াহেদুজ্জামান, প্রফেসর আসিফ নজরুল, রুহুল আমিন গাজী প্রমূখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, ২৭ জানুয়ারি ২০১৪