ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

একসময়ের স্ট্রাইকারের ভালোবাসা ক্রিকেটেই

মাজনুন হোসেন, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৪
একসময়ের স্ট্রাইকারের ভালোবাসা ক্রিকেটেই ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট থেকে: ক্রীড়াঙ্গনে অলরাউন্ডারই বলা চলে ম্যারি ওয়ালড্রোনকে। বর্তমানে ক্রিকেট মাতাচ্ছেন, একসময় ফুটবল মাঠও কাঁপিয়েছেন আয়ারল্যান্ডের এই উইকেটরক্ষক।

খেলেছেন ঘরোয়া হকিতেও। কলেজে উঠে হঠাৎই ব্যাট হাতে নিলেন, ক্রিকেটের প্রেমে পড়ে গেলেন ভালোভাবেই। খেলে যাচ্ছেন ভালোবাসা থেকেই।

আন্তর্জাতিক ওয়ানডে দলে ডাক পাওয়ার পর থেকেই লেগে আছেন ক্রিকেটের সঙ্গে। আর অদ্ভুত ধরনের হেলমেট পরে নজর তো কেড়েছেনই। শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে ক্রিকেটের প্রেমে পড়ার কাহিনীই শোনা গেল তার মুখে।

২০০১ ও ২০০২ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ দলের বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছিলেন ওয়ালড্রোন। ডাবলিনে নিজ ঘরের ক্লাব সেন্ট জেমস গেটের হয়ে খেলতেন ওই সময়। ২০০৩ সালে ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিনে স্পোর্ট স্কলারশিপ পান। এক বছর পর উইমেন্স কাপ ফাইনালও জেতে তার ইউসিডি।

উয়েফা উইমেন্স কাপে অভিষেক ২০০৪ সালের জুলাইয়ে, ইউসিডির হয়ে ওই ম্যাচটি ৫-০ গোলে জিতেছিলেন মন্টেপিলিয়ার এইচএসসির বিপক্ষে।

পারফরমেন্স দিয়ে মুগ্ধ করে দিয়েছিলেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ নোয়েল কিংকে। পুরস্কার হিসেবে ২০০৪ সালের অক্টোবরে দলটির নেতৃত্ব দেন। অবশ্য ফারাও আইল্যান্ডের সঙ্গে ওই প্রদর্শনী ম্যাচে ২-১ গোলে হেরে যায় দল। ২০০৯ সালেও ফুটবল মাঠেই দেখা গিয়েছিল তাকে।

এরপর একেবারেই অন্য এক জগতে পা রাখলেন ওয়ালড্রোন। ২০১০ সালে আয়ারল্যান্ড মেয়েদের ক্রিকেট দলের হয়ে ওয়ানডেতে অভিষেক হলো। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচ ছিল তার।

ফুটবলে খেলতেন আক্রমণভাগে, আর ক্রিকেটে উইকেটের পেছনে। ভিন্ন দুটি ক্ষেত্র হলেও সমস্যা হয় না তার,‘দুটাই ভিন্ন ধরনের। কিন্তু ফিটনেস ও ক্ষিপ্রতা থাকাটাই জরুরী এই দুই ভূমিকায়। সেটা আছে বলে সমস্যা নেই। ’

কীভাবে ক্রিকেটের প্রতি আসক্তি। কলেজের এক বন্ধুকেই কৃতিত্ব দিলেন এই ২৯ বছর বয়সী,‘দক্ষিণ আফ্রিকার এক বন্ধু ছিল আমার কলেজে। ও ক্রিকেট ভালোবাসত। এভাবেই আমি খেলতে শুরু করি। ’

নয় বছর ফুটবলের সঙ্গে, অন্যদিকে চার বছর ধরে ক্রিকেট। কম সময় খেলেও ক্রিকেটকে ভালো লাগার দিক থেকে এগিয়ে রাখছেন এই ডানহাতি ব্যাটার,‘অবশ্যই ক্রিকেট, আর কোনো পছন্দ নেই। বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাওয়া অসাধারণ। ক্রিকেটে কখন কী ঘটে জানা যায় না। কখনও আপনি ভালো খেললেন, আবার কখনও খালি হাতে ফিরতে হয়। এজন্যই এই খেলা ভালো লাগে। ’

ফুটবলের অভিজ্ঞতা নিয়ে ওয়ালড্রোন বলেন,‘হ্যা, মনে আছে। আমি অধিনায়ক ছিলাম। স্ট্রাইকার হিসেবে কয়েকটি গোল করে আমি দলে অবদান রেখেছিলাম। কিন্তু ক্রিকেটে ছিলাম বলেই বিশ্বকাপে আসতে পেরেছি। আমি ক্রিকেটের পেছনেই পুরো সময় দিয়েছি। ’

ক্রিকেটের প্রতি ভক্তদের টান ভালোই জানা আছে আইরিশ ক্রিকেটারের,‘ক্রিকেটেই বেশি আকর্ষণ বলে মনে করি আমি। বিশেষ করে বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে যে উৎসাহ দেখলাম সেটা সত্যিই দারুণ অভিজ্ঞতা। ভিন্ন কিছু এটা। ’

কোচ হিসেবে ট্রেন্ট জনস্টনকে প্রশংসায় ভাসালেন ওয়ালড্রোন,‘অসাধারণ কোচ উনি। ট্রেন্টের এসব অভিজ্ঞতা আছে। উনি সহযোগী দলের সদস্য হিসেবে বিশ্বকাপে ছিলেন। দারুণ মানুষ উনি। ’

উইকেটের পেছনে অন্য এক ধরনের হেলমেট পরে থাকেন ওয়ালড্রোন। সংবাদ সম্মেলনে এই রহস্যের উন্মোচন করলেন তিনি,‘এটা আসলে বাস্কেটবলের উইকেটরক্ষকরা পরে। ক্রিকেটের সচরাচর যে হেলমেট আছে সেগুলো খুব ভারী। আমাকে মাঝেমধ্যে ডাইভ করতে হয়। তাই ওগুলো আমার জন্য আরামদায়ক ছিল না। তাই ইন্টারনেটে একদিন লক্ষ্য করলাম এই হেলমেট। চার-পাঁচ বছর ধরে পরছি, স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, ২৯ মার্চ ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।