ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

ফাইনালে সামগ্রিক দুর্বলতায় হার, বিশ্লেষণ হীরা-বেলিমের

মহিবুর রহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৬
ফাইনালে সামগ্রিক দুর্বলতায় হার, বিশ্লেষণ হীরা-বেলিমের ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম/ফাইল ফটো

ঢাকা: ম্যাচ নিয়ে সঠিক পরিকল্পনার অভাবের কারণেই বাংলাদেশ এশিয়া কাপের ফাইনালে হেরে গেছে। একইসঙ্গে দায়ী মিডল অর্ডারদের ব্যাটিং ব্যর্থতা, সাকিব আল হাসান ও আবু হায়দার রনির ব্যয়বহুল বোলিং স্পেল এবং দুর্বল ফিল্ডিং, অর্থাৎ সামগ্রিক দুর্বলতা।



এই বিশ্লেষণ ক্রিকেটবোদ্ধাদের। তাদের বক্তব্য, সঠিক পরিকল্পনা মতো খেলতে পারলে শিরোপার কাছে এসে দ্বিতীয়বারের মতো খালি হাতে ফিরতে হতো না বাংলাদেশকে।

রোববার (৬ মার্চ) মিরপুর শেরে‍বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের কাছে ৮ উইকেটে হেরে শিরোপাবঞ্চিত হয়েছে টুর্নামেন্টের স্বাগতিক বাংলাদেশ।

বৃষ্টিবিঘ্নিত ১৫ ওভারের ম্যাচে টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ১২০ রান সংগ্রহ করেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা। ১২১ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে প্রথমে ধাক্কা খেলেও ব্যাটিং দৃঢ়তায় ষষ্ঠ শিরোপা ঘরে তোলে ভারত।

সম্ভাবনা জাগিয়েও এভাবে হেরে যাওয়ার কারণ হিসেবে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক শফিকুল হক হীরা দুষছেন মিডলঅর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতাকে। আর সাবেক ওপেনার জাবেদ ওমর বেলিম হারের কারণ হিসেবে বলছেন ‘পরিকল্পনার অভাব’কে।

বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে হীরা বলেন, ‘যেহেতু বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি কার্টেল ওভারের ছিল, তাই ব্যাটিংয়ে আগেভাগেই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে পাঠানো উচিত ছিলো। রিয়াদকে আগে নামানো হলে দলীয় সংগ্রহ ১৩৫ থেকে ১৪০ হতে পারতো, যা টপকানো প্রতিপক্ষের জন্য সহজ হতো না। ’
 
হীরার সুরে বেলিম বলেন, ‘এশিয়া কাপের এবারের পুরো আসরে মুশফিকুর রহিম ফর্মে ছিলেন না। তারপরও সাকিব আউট হওয়ার পর চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে তাকে নামানো হলো। এই সিদ্ধান্তটি ঠিক ছিল না। সমীকরণটি ছিল খুব সহজ; যেহেতু মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ফর্মে, সেহেতু মুশফিকের জায়গায় তাকে নামালে দলীয় সংগ্রহ আরও বেশি হতে পারতো, সেক্ষেত্রে লড়াইয়ের পুঁজিটা আরও বড় হতো। ’

হীরার মতে, এশিয়া কাপের ফাইনালের মতো হেভিওয়েট এ ম্যচে আবু হায়দার রনির মতো একেবারেই অনভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে খেলানো সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ছিল না।

তিনি বলছিলেন, ‘এ ম্যাচের পিচটি ছিল ‍অনেকটাই স্পিন সহায়ক। যেখানে আরাফাত সানিকে দিয়ে খেলালে দল উপকৃত হতে পারতো। কারণ একে তো আরাফাত সানি এমন হেভিওয়েট ম্যাচ খেলে অভ্যস্ত। আর তার স্পিনেও যথেষ্ট টার্নিং আছে, যা এই ম্যাচে ভারতকে কিছুটা হলেও ভোগাতে পারতো। এ কথা ঠিক যে, রনি বিপিএলে ভালো করেছেন, কিন্তু বিপিএল আর এশিয়া কাপ ফাইনাল এক বিষয় নয়। ’

এ ব্যাপারে বেলিমের কথা, রনির জায়গায় মাশরাফি বিন মুর্তজা বল করলে দল আরও ব্যালান্সড থাকতো।

ফাইনালে দলীয় পঞ্চম ওভারে বাংলাদেশের হয়ে বল করতে আসেন আবু হায়দার রনি।   দলের প্রথম চার ওভারে তাসকিন আহমেদ- আল আমিনরা ১৯ রান দিলেও পঞ্চম ওভারে রনি খরচ করে ফেলেন ১৪ রান।

কেবল রনির এই ওভারই নয়, দুই ক্রিকেট বিশ্লেষকের মতে, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ওভারগুলোও রান খরচের ক্ষেত্রে ‘উদার’ ছিল।

হীরা বলছিলেন, ‘সাকিবের এ দিন আরও সংযত হওয়া উচিত ছিল। তার মতো বিশ্বসেরা বোলারকে এ দিন একেবারেই টেকনিক্যাল হতে দেখা যায়নি। তিনি দেখছিলেন যে, কোহলি-ধাওয়ান দু’জনই বিগ শট খেলছেন, তখন ‍অন্তত আরও ইকোনমিক্যাল হওয়া উচিত ছিল তার। মূলত সাকিবের দুই ওভারে ২৬ রানেই ম্যাচ অনেকটা হাতছাড়া হয়ে যায়। ’

দলের হয়ে ষষ্ঠ এবং নিজের প্রথম ওভার বল করতে এসে ১৫ রান খরচ করে ফেলেন সাকিব আল হাসান। দ্বিতীয় ওভার যখন করতে এলেন তিনি, তখনও দিয়ে বসলেন ১১ রান।

কেবল এমন ব্যাটিং-বোলিংই নয়, হার তরান্বিত করতে টাইগারদের ফিল্ডিংও ভূমিকা রেখেছে ‘ভালোমতো’। দুই বিশেষজ্ঞের মন্তব্য, দুর্বল ফিল্ডিংয়ের কারণে বেশ কয়েকটি বাউন্ডারি হয়েছে। ফাইনালের মতো মঞ্চে এমন ফিল্ডিংই ম্যাচে হারার জন্য যথেষ্ট হয়।

অপরদিকে, একাধিকবার ধাক্কা সামলে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে নিয়ন্ত্রণ রেখে যোগ্য দল হিসেবেই ভারত শিরোপা ঘরে নিয়ে গেছে বলে মতামত দেন এই দুই ক্রিকেটবোদ্ধা।

বাংলাদেশ সময়: ০২১৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৬
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।