ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

লঙ্কানদের চাপেই রেখেছে টাইগাররা

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২১ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৭
লঙ্কানদের চাপেই রেখেছে টাইগাররা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

টাইগারদের ছুঁড়ে দেওয়া ৩২৫ রানের বিশাল টার্গেটে ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কা। এ রিপোর্ট লেখা অবধি ১০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লঙ্কানরা তুলেছে ৩০ রান। প্রয়োজনীয় রান রেট উঠে গেছে প্রায় সাড়ে ৭ এর কোটায়।

উইকেটে অপরাজিত আছেন ওপেনার উপুল থারাঙ্গা (১৯) এবং দিনেশ চান্দিমাল (৬)। মাশরাফি ও মিরাজ একটি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন।

ফিল্ডিংয়ে নেমে বাংলাদেশের হয়ে বোলিং শুরু করেন মাশরাফি। লঙ্কানদের হয়ে ইনিংস শুরু করতে নামেন দাসুনকা গুনাথিলাকা এবং উপুল থারাঙ্গা। ইনিংসের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই ম্যাশের বলে এলবির ফাঁদে পড়েন গুনাথিলাকা। রিভিউ নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তার। দলীয় শূন্য রানেই প্রথম উইকেট হারায় লঙ্কানরা। মাশরাফি প্রথম ওভারে কোনো রান না দিয়েই উইকেট তুলে নেন।

ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে কুশল মেন্ডিসকে (৪) বিদায় করেন অভিষিক্ত মিরাজ। আগেই একবার মেন্ডিসকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেললেও এবার শুভাগতর তালুবন্দি করেন। দলীয় ১৫ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় লঙ্কানরা।

শনিবার (২৫ মার্চ) রনগিরি ডাম্বুলা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডেতে বেলা তিনটায় মুখোমুখি হয় শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন লঙ্কান দলপতি উপল থারাঙ্গা। তবে, টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মুর্তজা জানান, টস জিতলে তিনি ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তই নিতেন।

স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে সফরকারী বাংলাদেশ নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ৩২৪ রান। টাইগার ওপেনার তামিমের সেঞ্চুরির সঙ্গে ছিল সাকিব-সাব্বিরের দুর্দান্ত হাফ-সেঞ্চুরির ইনিংস।

সৌম্য সরকারের বিদায়ে দলীয় ২৯ রানে প্রথম উইকেটের পতন ঘটে। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে তামিম-সাব্বির যোগ করেন আরও ৯০ রান। দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হয়ে ফেরেন হাফ-সেঞ্চুরি করা সাব্বির। দ্রুত বিদায় নেন মুশফিকও। এরপর শত রানের (১৪৪) জুটি গড়েন তামিম-সাকিব।

আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে টাইগারদের হয়ে ইনিংসের শুরু করতে নামেন বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার। শুরুটা সতর্ক থেকেই করেছিলেন তামিম-সৌম্য। তবে, ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বিদায় নেন সৌম্য। লাকমলের করা চতুর্থ বলে ফ্লিক করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে দিনেশ চান্দিমালের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১০ রান। ১৩ বলের ইনিংসে দুটি চার হাঁকান সৌম্য। দলীয় ২৯ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

১৯তম ওভারে টাইগারদের দলীয় শতক পূর্ণ হয়। ২০তম ওভারে সাব্বির ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ অর্ধশতকের দেখা পান। ৪৮ বলে ৯টি চারের সাহায্যে ৫০ করেন সাব্বির। তবে, ইনিংসের ২২তম ওভারে বিদায় নিতে হয় সাব্বিরকে। গুনারত্নের বলে থারাঙ্গার তালুবন্দি হয়ে ফেরেন ৫৬ বলে ৫৪ রান করা সাব্বির। দশটি বাউন্ডারিতে তিনি এই ইনিংসটি সাজান। দলীয় ১১৯ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তামিম-সাব্বির মিলে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৯০ রান।

সাব্বিরের বিদায়ে মাঠে আসেন মুশফিক। সান্দাকানের করা ২৩তম ওভারে বোলারের হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ১ রান। দলীয় ১২০ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ২৬তম ওভারে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩৫তম অর্ধশতকের দেখা পান তামিম। পরে সেটি ক্যারিয়ারের অষ্টম শতকে রূপ নেয়। তিনি পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ৭৫ বলে, তাতে ছিল ছয়টি চারের মার। শতক ছুঁয়েছেন ১২৭ বলে, ১২টি চারের সাহায্যে। শ্রীলঙ্কা সফরে মোরাতুয়ায় বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের বিপক্ষে তামিম করেছিলেন ১৩৬ রান। এরপর গল টেস্টে করেছিলেন ৫৭ ও ১৯ রান। কলম্বো টেস্টে করেছিলেন ৪৯ ও ম্যাচ জেতানো ৮২ রান।

দলীয় ১২০ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সাময়িক বিপর্যয় কাটিয়ে সাকিব-তামিমের ব্যাটে এগুতে টাইগাররা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩৩তম অর্ধশতক হাঁকিয়ে সাকিব বিদায় নেন ৭২ রান করে। ৭১ বলে চারটি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান সাকিব। দলীয় ২৬৪ রানের মাথায় বাংলাদেশ চতুর্থ উইকেট হারায়। সাকিব-তামিম জুটি থেকে আসে ১৪৪ রান।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অষ্টম শতক হাঁকিয়ে ১২৭ রানে বিদায় নেন তামিম। কুমারার বলে ইনিংসের ৪৮তম ওভারে গুনাথিলাকার হাতে ধরা পড়েন তামিম। ১৪২ বলে ১৫টি চারের পাশাপাশি তামিমের ইনিংসে ছিল একটি ছক্কার মার। দলীয় ২৮৯ রানের মাথায় টাইগারদের পঞ্চম ব্যাটসম্যান হয়ে ফেরেন তামিম। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৭ বলে একটি ছক্কায় ১৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। শেষ সময়ে ব্যাটে ঝড় তুলেন মোসাদ্দেক হোসেন। ৯ বলে তিনটি চার আর একটি ছক্কায় ২৪ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।

এ ম্যাচের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে অভিষেক হয় মেহেদি হাসান মিরাজের। তার মাথায় ওয়ানডে অভিষেকের ক্যাপ পড়িয়ে দেন আরেক অফস্পিনিং অলরাউন্ডার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ১৯ বছর বয়সী মিরাজ বাংলাদেশের ১২৩তম ওয়ানডে ক্রিকেটার।

টেস্টে সিরিজ ড্র (১-১) হওয়ার পর এই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দিকে তুমুল আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে দুই দল। ডাম্বুলায় আজ থেকে শুরু হওয়া ওয়ানডে সিরিজে বাড়তি শক্তি বদলে যাওয়া টাইগারদের পারফর্ম। শেষবার এই মাঠে ২০১০ সালের এশিয়া কাপে খেলেছিল লাল-সবুজরা। সে আসরের সবক’টি ম্যাচই বাজে ভাবে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে।

তবে, ২০১০ সালের তুলনায় এই বাংলাদেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। ক্রিকেট বিশ্বকে এখন আর চমকিয়ে দিতে হয় না টাইগারদের। যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই জায়ান্ট দলগুলোর বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে নেয়। মাশরাফির নেতৃত্বে এই বাংলাদেশ এখন অনেক পরিণত আর অভিজ্ঞ।

বাংলাদেশ একাদশ:
তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ এবং মেহেদি হাসান মিরাজ।

শ্রীলঙ্কা একাদশ:
উপল থারাঙ্গা, দানুসকা গুনাথিকালা, দিনেশ চান্দিমাল, আসেলা গুনারত্নে, কুশল মেন্ডিস, সাচিথ পাথিরানা, থিসারা পেরেরা, সুরাঙ্গা লাকমাল, লাকসান সান্দাকান, মিলিন্দা সিরিবর্ধানে, লাহিরু কুমারা।

ডাম্বুলার এই মাঠে ২৮ মার্চ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেটি অনুষ্ঠিত হবে ১ এপ্রিল কলম্বোতে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, ২৫ মার্চ ২০১৭
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।