ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

‘সবাই তো আর মাশরাফি-সাকিব-তামিম হবে না’

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৮
‘সবাই তো আর মাশরাফি-সাকিব-তামিম হবে না’ মাশরাফি-সাকিব-তামিম/ছবি: বাংলানিউজটুয়েন্টিফোর.কম

আসন্ন জিম্বাবুয়ে আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে সিনিয়রদের খেলা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। সিনিয়রদের ছাড়া দলটি এখনও লড়াই করার উপযোগী নয়। তাদের কোনো বিকল্পও নেই। সিনিয়রদের যে নিবেদন তা জুনিয়রদের মধ্যে দেখা যায় না এটা কঠিন বাস্তবতা। সিনিয়রদের ইনজুরি নিয়ে খেলা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রায়শই সমালোচনার মুখে পড়তে হয় বিসিবিকে। কিন্তু বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের মতে, এ ছাড়া আর কোনো উপায়ও নেই দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির হাতে। 

বাংলাদেশ দলে একের পর এক ইনজুরি হানা দিচ্ছে। তামিম এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচ খেলেই দেশে ফিরেছেন।

সুপার ফোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আঙুলের চোট নিয়ে দেশে ফিরেছেন সাকিবও। ইনজুরি সমস্যা আছে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহরও। আর মাশরাফি তো খেলছেন মনের জোরে। কিন্তু তাদের না খেলিয়ে ম্যাচ জেতার সুযোগ কম।  

সাকিব হাতে সমস্যা নিয়েও খেলা চালিয়ে গেছেন। সাকিবের আঙুলের অবস্থা এখন সবারই জানা। এজন্য অনেকে বিসিবিকেই দায়ী করছেন। কিন্তু এমনটা মানতে নারাজ বিসিবি প্রধান। অনেকটা বাধ্য হয়েই তাদের দলে নিতে হয় বলেই জানালেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন।

'মুশফিক ইনজুরি নিয়ে খেলেছে। মিরাজও ফাইনালে সমস্যা নিয়েই খেলেছে। আর মাশরাফি যাকে বলে হাই রিস্ক নিয়ে কিন্তু খেলছে। আমার কথা হচ্ছে পারলে খেলব। যতক্ষণ পারি জান দিয়ে খেলব। এটার জন্য আমি হয়তো রেসপন্সিবল। সবাই কিন্তু আমাকেই বলছে। '

'এখন একটা কাজ করতে পারি যে এদের সবাইকে রেখে দিতে পারি। খেললে তো ব্যথা পেতেই পারে। না খেলালে মানুষ হয়তো খুশি হতে পারে। সবাই কিন্তু এটা বুঝে। তামিম কি কম রিস্ক নিয়েছে? ও তো নিজে থেকেই খেলেছে। কারণ দলের মধ্যে এটা এনরিচড। ও খেলবে। সাকিবকে জিজ্ঞাসা করেন আমি ওকে বলেছি কি না। '

মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে পাপন সংবাদ মাধ্যমকে এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ সলের তিনজন খেলোয়াড় আছেন যাদের কোনো বিকল্প আজ তৈরি হয়নি বলে মনে করেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট। এই তিন খেলোয়াড় হচ্ছেন তামিম, সাকিব আর মাশরাফি। কেন তাদের বিকল্প পাওয়া যাচ্ছে না তার জবাবও দিয়েছেন তিনি। তার মতে, যারা আসছে তারা তো আর মাশরাফি-সাকিব-তামিম হবে না।

'তিনজন খেলোয়াড় আমাদের মূল খেলোয়াড়। এদের কোনো বিকল্প আমাদের কাছে নেই। বাকিদের কথা আলাদা। ওপেনার হিসেবে তামিম। তামিম ইজ তামিম। ওপেনিংয়ে ওর কোনো বিকল্প নেই। সাকিব আছে অলরাউন্ডার হিসেবে। ও না খেললে হয় আমাদের একজন বোলার না হয় একজন ব্যাটসম্যান বাদ দিতে হয়। ফলে ও হচ্ছে দলের মূল খেলোয়াড়। আর একজন হলো মাশরাফি এজ আ ক্যাপ্টেন। '

'অনেকে বলেন পাইপলাইনে খেলোয়াড় নেই। অনেক আছে, কিন্তু সবাই তো আর তামিম, সাকিব, মাশরাফি হবে না। হতে পারে নি কেউ এখনও, আমি কি করব? ফলে সাকিব আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। ফলে ওর কোনো ক্ষতি হোক এটা কেউ চাইবে না। কারণ তাহলে তো আমাদের দলেরই ক্ষতি। দেশের জন্য ক্ষতি। '

আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজ আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের দলে সাকিব আর তামিম থাকছেন না এটা নিশ্চিত। তাহলে নতুন কাউকে দেখা যাবে নাকি পুরোনোদের কাউকে সুযোগ দেওয়া হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে পাপন বলেন, 'তামিম-সাকিব নেই, তাদের জায়গায় তো নতুন খেলোয়াড় ঢুকবেই। আমাদের কাছে মনে হয়েছে আমাদের যা এক্সপেরিমেন্ট করার এই সময়েই করব। বেশকিছু নতুন খেলোয়াড় আসবে। '

এশিয়া কাপের ফাইনালে ওপেনার হিসেবে ব্যাটিং করেছেন স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেসি হাসান মিরাজ। এমন কিছু আসন্ন সিরিজেও দেখা যাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'মিরাজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসলে আমাকেও অবাক করেছে। মাশরাফিকে বললাম তুমি ওপেন করো। পরে ও রাতে মিরাজকে বলল। সেও রাজি হলো। মিরাজ খুব সাহসী খেলোয়াড়। কিন্তু এখন আসন্ন সিরিজেও এমন হবে কি না এটা সেটা নিশ্চিত না। '

'আমাদের মিডিয়া তো অনেক ড্যাঞ্জারাস। এই যে ইমরুল আর সৌম্যকে পাঠালাম। যদি খারাপ করত তাহলে তো আমি শেষ। কিন্তু যারা পারছে না আমি কি বসে বসে দেখবো এই জিনিস? রিস্ক তো নিতেই হবে। কিন্তু ওরা আমাদের বেস্ট অপশন হলে তো মূল স্কোয়াডেই থাকতো। তার মানে আমরা কিন্তু এখনও সেরা তিন খুঁজছি। ' 

'তামিমের সঙ্গে  ওপেনিংয়ে একজন চাই। সাকিবকে তিনে খেলালে মুশফিককে চারে দিতেই হবে। সাতে বা ছয়ে রিয়াদকে দিতেই হচ্ছে। সো তামিমের একজন সঙ্গী খুব দরকার। এখন লিটন আছে। ওর হাতে ভালো মার আছে। নিদাহাস ট্রফিতে দারুণ খেলেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের শেষ ম্যাচ আর এশিয়া কাপের ফাইনালে সুপার ইনিংস খেলে ফেলেছে। '

'সৌম্য কিন্তু এমন প্রচুর ইনিংস খেলে আসছে। এখন পারে না। কারণ একেক খেলোয়াড়ের একেক সময় আসে। সাব্বিরের কম মাইর আছে হাতে? কিন্তু ওকে দিয়ে তো কম চেস্টা করলাম না। ওদের সবাইকে সুযোগ তো অনেক দিয়েছি। এখন লিটন দাসকে দিয়ে মনে হচ্ছে যে ও একটা অপশন। '

'একজন ফাস্ট বোলিং অলরাউন্ডার খুঁজছি যে মারতে পারে। আরিফুলকে আবার বোলার হিসেবে ধরা হয়না। ওকে আমরা এখন পরীক্ষা করে দেখিনি। সাইফ ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বোলিং করাই ভুলে গেছে। সাতে একজন দরকার। সাব্বিরকে ট্রাই করেছি। সৌম্যকে নিয়ে ট্রাই করে দেখতে পারি। নতুন নতুন ছেলেদের সুযোগ দেওয়া হতে পারে এবারই। '

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৮
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।