বাংলাদেশের ছুড়ে দেওয়া ২১২ রানের টার্গেটও যে এই উইন্ডিজের কাছে নিরাপদ নয় তা বুঝাতেই যেন আগ্রাসী ব্যাটিং জারি রাখেন উইন্ডিজ ওপেনার শাই হোপ। ওয়ানডে সিরিজের ফর্ম টি-টোয়েন্টি সিরিজেও টেনে এনেছেন তিনি।
তবে আজ হোপকে খুব বেশি দূর যেতে দেননি মেহেদি হাসান মিরাজ। ১৯ বলে ৬ চারে ৩৬ রান করে আউট হয়েছেন হোপ। এর আগেই অবশ্য নিকোলাস পুরানকে (১৪) বিদায় করে উইকেটের খাতা খুলেন সাকিব। নিজের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে ক্রমেই আগ্রাসী হয়ে উঠা শিমরন হেটমায়ারকে (১৯) সাইফউদ্দিনের ক্যাচে পরিণত করেন টাইগার দলপতি।
হেটমায়ারকে ফেরানোর পর নিজের তৃতীয় ওভারে দুই উইন্ডিজ ব্যাটসম্যান তথা ড্যারেন ব্র্যাভো ও কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকেও তুলে নেন সাকিব। নিজের শেষ ওভারে ফ্যাবিয়েন অ্যালেনকে বোল্ড করে ম্যাচে নিজের পঞ্চম উইকেট তুলে নেন তিনি। ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান খরচে ৫ উইকেট পেয়েছেন সাকিব, যা তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং।
উইন্ডিজ ইনিংসের শেষদিকে ১৬ বলে ২ ছক্কা আর ১ চারে ২৯ রান করে ঝড় তোলেন কিমো পল। কিন্তু তাকে আউট করে স্বস্তি ফেরান মোস্তাফিজ। ম্যাচে বল হাতে ৪ ওভারে ৫০ রান খরচ করে ২ উইকেট পেয়েছেন এই কাটার মাস্টার। বল হাতে খরুচে ছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও। ৪ ওভারে ৪২ রান খরচ করে কোনো উইকেট পাননি এই পেসার। ১ উইকেট করে পেয়েছেন আবু হায়দার, মেহেদি হাসান মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ। টাইগারদের বোলিং দাপটে ১৭৫ রানেই অলআউট হয়ে যায় উইন্ডিজ।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) মিরপুরের শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উইন্ডিজদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সমতায় ফেরার ম্যাচে টসে হারে বাংলাদেশ। টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন উইন্ডিজ অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েট।
ব্যাট হাতে দুর্দান্ত শুরু করেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। একে একে চার-ছয়ের মিছিলে যোগ দেন সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাদের ধারালো ব্যাটিংয়ে ২১২ রানের বড় লক্ষ্য ছুঁড়ে দেওয়া হলো উইন্ডিজদের সামনে। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে টি-২০তে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান। এর আগে সর্বোচ্চ ছিল গত নিদাহাস ট্রফিতে লঙ্কানদের বিপক্ষে করা ২১৫ রান।
তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের দুর্দান্ত শুরু পর বাংলাদেশ হারায় প্রথম উইকেট। ১৬ বলে ১৫ রান করে ফাবিয়ান অ্যালেনের বলে শেলডন কোটরেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল।
কিন্তু রানের চাকা থামতে দেননি সৌম্য সরকার। আরও দ্বিগুণ গতিতে ঘুরতে থাকে তা। ওপেনার লিটন দাস ও সৌম্য সরকারের ব্যাটে স্কোর বড় হতে থাকে বাংলাদেশের। ২৬ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লিটন দাস।
এক কথায় দুর্দান্ত। প্রথম চেষ্টায় হাত ফসকে গেলেও দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় ঠিকই ধরে ফেললেন। আর উইন্ডিজ অধিনায়ক কার্লোস ব্রাথওয়েটের এমনই এক দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার। ব্যক্তিগতভাবে ২২ বলে ৩২ রান করে শেলডন কোটরেলের বলে ফেরেন তিনি।
সৌম্যর বিদায়ের পর একই ওভারের শেষ বলে ফেরেন লিটনও। ৩৪ বলে ৬০ রান করে ফেরেন তিনি। পরে সাকিবের ২৬ বলে অপরাজিত ৪২, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ২১ বলে অপরাজিত ৪৩ ও সৌম্য সরকারের ২২ বলে ৩২ রানের ঝড়ো ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২১১ রানের দাপুটে সংগ্রহ পায় টাইগাররা।
ব্যাট হাতে অপরাজিত ৪২ রান আর বল হাতে ২১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসান।
আগামী শনিবার (২২ ডিসেম্বর) মিরপুরে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৮
এমএইচএম