ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারে ওয়াসিম আকরামের অর্জন অতুলনীয়। মুত্তিয়া মুরালিধরনের পর ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক সাবেক এই পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার (৫০২)।
৪১৪টি উইকেট নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে নবম সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি আকরাম। বাঁহাতি বোলারদের মধ্যে তিনি এখনো শীর্ষে। একটি আন্তর্জাতিক দলের বিপক্ষে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সফল অভিষেক ঘটেছিল। ১৯৮৪ সালের নভেম্বরে রাওয়ালপিন্ডিতে মাত্র ১৮ বছর বয়সে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন পাকিস্তান (বিসিসিপি) একাদশের হয়ে অভিষেক হয় তার।
কিউইদের বিপক্ষে সেই ম্যাচেই সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক জাভেদ মিঁয়াদাদের চোখে পড়ে তার বোলিং পারফরম্যান্স। ওই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেট নিয়ে চমকে দেন তিনি এবং এর কয়েকদিন পরেই জাতীয় দলে ডাক পড়ে তার। এরপর শুধুই এগিয়ে যাওয়ার গল্প। তার দুদিকে সুইং করানোর ক্ষমতা এককথায় অবিশ্বাস্য।
বোলিং অবিশ্বাস্য সাফল্যের পাশাপাশি পাকিস্তান জাতীয় দলের নেতৃত্বও দিয়েছেন ওয়াসিম আকরাম। নিজ দেশের জাতীয় দলকে ২৫ টেস্ট এবং ১০৯টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়ে ১২টি টেস্ট এবং ৬৬টি ওয়ানডেতে জয়ের মুখ দেখেন তিনি। তার অধিনায়কত্বে ১৯৯৬ সালে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডকে টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হারায় পাকিস্তান। পাকিস্তান ১৯৯৯ বিশ্বকাপের ফাইনালেও উঠেছিল তার নেতৃত্বেই। কাউন্টি ক্লাব ল্যাঙ্কাশায়ের অধিনায়ক হিসেবে তার সাফল্য ছিল নজরকাড়া। তার অধীনে ক্লাবটি ইসিবি ট্রফি এবং অ্যাক্সা লিগের শিরোপা জয় করে এবং এক মৌসুমে সব টুর্নামেন্টে মাত্র ৫ ম্যাচ হেরেও চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে।
ওয়াসিম আকরাম শুধু বল হাতেই নয়, ব্যাট হাতেও তার সাফল্য রীতিমত অসাধারণ। ওয়ানডেতে তার রান ৩ হাজার ৭১৭ এবং টেস্টে তার সংগ্রহ ২ হাজার ৮৯৮ রান। ওয়ানডেতে তার সেরা ইনিংস ৮৬ রানের এবং টেস্টে ২৫৭ রান। ১৯৯৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তার অপরাজিত ২৫৭ রানের ইনিংসটি টেস্টে ৮ নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। ওই ইনিংসে ২২টি চার এবং ১২টি ছক্কা মারেন তিনি এবং সাকলাইন মুস্তাকের সঙ্গে তার জুটিটি ছিল ৩১৩ রানের।
২০১৩ সালের অক্টোবরে উইজডেন’র ১৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পাকিস্তানের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে সর্বকালের সেরা টেস্ট একাদশে নাম লেখান তিনি। ২০০৩ বিশ্বকাপের পর অসবর নিলেও কোচ এবং ধারাভাষ্যকার হিসেবে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন তিনি।
কিংবদন্তি ফাস্ট বোলারের জন্মদিনে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এবং আইসিসি শুভেচ্ছা জানিয়েছে। এছাড়া তার সাবেক সতীর্থ এবং বর্তমান ক্রিকেট তারকাদের অনেকেই তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তবে আকরাম নিজে নাকি এবার জন্মদিন মানছেন না! কারণ? বছরের এক চতুর্থাংশ সময় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয়েছে তাকে। এজন্য আরও এক বছর নিজের বয়স ৫৩-তেই আটকে রাখতে চান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৪ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২০
এমএইচএম