ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

সাঁইত্রিশে পা রাখলেন ‘স্টেইন গান’

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৯ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২০
সাঁইত্রিশে পা রাখলেন ‘স্টেইন গান’ ডেল স্টেইন-ছবি: সংগৃহীত

বল করার জন্য যখন দৌড় শুরু করেন, তার চোখেমুখে তখন প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয়। রান-আপ শেষে যখন বল ছাড়েন তখন চোখ থেকে যেন আগুন ঠিকরে পড়ে। বল ছোড়ার পর সেই আগ্রাসন অনূদিত হয় গতি আর সুইংয়ের পসরায়। প্রচণ্ড গতির সঙ্গে এমন সুইং খুব কম পেসারের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। বলা হচ্ছে আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার ডেল স্টেইনের কথা। দক্ষিণ আফ্রিকার এই কিংবদন্তি পেসারের আজ ৩৭তম জন্মদিন।

১৯৮৩ সালের ২৭ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রান্সভাল প্রদেশের ফালাবোরায় জন্মগ্রহণকারী স্টেইনকে ‘স্টেইন গান’, ‘ফালাবোরা এক্সপ্রেস’ ও ‘দ্য মাস্টার’ নামেও ডাকা হয়। এসব নামের যথার্থতাও প্রমাণ করেছেন তিনি।

মাঠে তার ফাস্ট বোলারসুলভ আগ্রাসী ভূমিকা, প্রচণ্ড গতি আর সুইং মিলে তিনি এক অনন্য ফাস্ট বোলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাকে বলা হয় এই প্রজন্মের সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ ফাস্ট বোলার। যদিও বারবার ইনজুরির ধাক্কায় ক্যারিয়ার নিয়ে পূর্ণ তৃপ্তি পাননি তিনি, কিন্তু তা সত্ত্বেও যা অর্জন করেছেন তা রীতিমত ঈর্ষনীয়।

সংক্ষিপ্ত পরিসরের ক্রিকেট ক্যারিয়ার দীর্ঘায়িত করার জন্য সাদা পোশাকের ক্রিকেটকে বিদায় বলার আগে এই ফরম্যাটে ৯৩টি ম্যাচ খেলেছেন স্টেইন। তবে অবসরের আগে লাল বলে ৪৩৯ উইকেট নামের পাশে যুক্ত করেছেন তিনি। এছাড়া ১২৫ ওয়ানডেতে ১৯৬ উইকেট এবং ৪৭টি টি-টোয়েন্টিতে তার উইকেটসংখ্যা ৬৪টি। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে টেস্ট উইকেটের মালিক স্টেইন। আর সব আন্তর্জাতিক ফরম্যাট মিলিয়ে ৬৯৭ উইকেট নিয়ে তিনি দেশটির ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। শীর্ষে আছেন সাবেক প্রোটিয়া অধিনায়ক শন পোলক (৮২৩)।

টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে উইকেটসংখ্যার বিচারে অষ্টম স্থানে আছেন স্টেইন। তবে শীর্ষ ১০ জন বোলারের মধ্যে তার গড় (২২.৯৫) তৃতীয় সেরা। টেস্ট ক্যারিয়ারে ২৬ বার ৫ উইকেট এবং ১০ উইকেট পেয়েছেন ৫ বার। ২০০৮ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে আইসিসি’র টেস্ট র‍্যাংকিংয়ে ২৬৩ সপ্তাহ শীর্ষস্থান দখল করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। টেস্ট বোলারদের তালিকায় রেকর্ড ২ হাজার ৩৫৬ দিন শীর্ষে থেকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ফিটনেস ঠিক থাকলে তিনি গ্ল্যান ম্যাগ্রা এবং জেমস অ্যান্ডারসনকে পেছনে ফেলে দিতে পারতেন এই প্রোটিয়া।

২০০৮ সালে বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটারের পুরস্কার জেতার স্বাদ পান স্টেইন। এরপর ২০১৩ সালে উইজডেনের বর্ষসেরা ক্রিকেটারের তালিকায়ও নাম আসে তার। একই বছর উইজেডেনের শীর্ষ ক্রিকেটারের খেতাবও যুক্ত হয় তার নামের পাশে। স্টেইন সেই সব অল্প বোলারদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন যারা নিজ দেশের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি অর্জন করেছেন। টেস্টে ২৬ বার ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তিতে প্রোটিয়া বোলারদের মধ্যে তিনিই শীর্ষে আর পেসারদের মধ্যে ষষ্ঠ।

দীর্ঘদিন ইনজুরি কাটিয়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন স্টেইন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দেখা গেছে তাকে। এর আগে ২০১৯ সালের মার্চ থেকে মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার ক্ষুধা এখনও আছে তার। আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষে অবসরের ঘোষণা দেওয়ার কথা তার। কিন্তু খোদ বিশ্বকাপই করোনার কারণে পিছিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছে। ফলে তার অবসর ভাবনাও আপাতত স্থগিত রাখতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৯ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।