ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

তৃতীয় দিনের মতো কর্মবিরতিতে চবির শিক্ষক সমিতি

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২৪
তৃতীয় দিনের মতো কর্মবিরতিতে চবির শিক্ষক সমিতি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষক সমিতি।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা।

পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তিকরণ ও শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
 
এ সময় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এবিএম আবু নোমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সবচেয়ে প্রখর মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরাই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যে সুযোগ সুবিধা রয়েছে এগুলো কমানো হলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা কখনো এই পেশার দিকে আকৃষ্ট হবে না। মেধাবী শিক্ষার্থীরা যদি এ পেশায় না আসেন, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মেধাবী হিসেবে বেড়ে উঠবে না।  

চবি ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী বলেন, শিক্ষকদের প্রাপ্য পেনশন থেকে বঞ্চিত করে সার্বজনীন পেনশনের আওতায় নিয়ে আসা একটি গভীর চক্রান্তের ফসল। এ স্কিম চালু হলে আগামীতে মেধাবীরা এ পেশায় আসতে অনীহা প্রকাশ করবে। শিক্ষকদের এত এত কম সুবিধার মধ্যেও আমরা চাকুরি করে যাচ্ছি। কিন্তু এ প্রত্যয় স্কিম চালু হলে বর্তমান মেধাবী শিক্ষার্থীরা শিক্ষকতা পেশায় আসতে চাইবে না।  

শিক্ষক সমিতির সহ সভাপতি অধ্যাপক ড. আলা উদ্দীন বলেন, আমাদের আন্দোলন, কর্মসূচি ক্লাস বর্জন দেখার পরেও উপরমহল থেকে কোনো নির্দেশনা আসছে না দেখে আমি আশাহত হয়েছি। এ প্রত্যয় স্কিমের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালগুলো ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। এখন প্রধানমন্ত্রী  যদি আমাদের দাবি মেনে নিয়ে ক্লাসে ফিরিয়ে না নেন তাহলে আমরা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নির্দেশনা অনুযায়ী কঠোর অবস্থানে যাবো।
 
সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী বলেন, এক বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই নিয়ম এটি কোনো সভ্য দেশে হতে পারে না। আমরা আইনের দ্বারস্থ হতে চাই না৷ এর আগেই সরকার পদক্ষেপ নিবে এমন প্রত্যাশা রাখি।  

অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহামেদ বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহবানে সাড়া দিয়ে দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানিয়েছে৷ এই দাবি বিবেচনায় নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকদের উচিত হবে বিষয়টির সুরাহা করা। সরকার বিষয়টির সমাধান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ যেন সমুন্নত রাখে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৩ মার্চ সরকার সার্বজনীন পেনশনের প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আগামী ১ জুলাই থেকে যেসকল শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারী চাকরিতে যোগ দিবেন তাদের জন্য সার্বজনীন পেনশন স্কিমের 'প্রত্যয় স্কিম' বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে উক্ত প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার জন্য বিদ্যমান অবসর সুবিধা সংক্রান্ত বিধিবিধান প্রযোজ্য হবে না। এর প্রেক্ষিতে গত ২০ মে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার এবং পূর্বের পেনশন স্কিম চালু রাখার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। তারই ধারাবাহিকতায় 'প্রত্যয় স্কিম' বাতিলের দাবিতে কর্মসূচি পালন করে আসছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২৪
এমএ/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।