ঢাকা, শুক্রবার, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১৯ মহররম ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সব ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: এমএ লতিফ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৪
সব ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: এমএ লতিফ

চট্টগ্রাম: এ মুহূর্তে সবাইকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে একযোগে কাজ করার পাশাপাশি সব ধরনের ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বন্দর (চট্টগ্রাম-১১) আসনের সংসদ সদস্য এমএ লতিফ।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকেলে শতবর্ষী বাণিজ্য সংগঠন দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিসহ সার্বিক ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়ন বিষয়ক আলোচনা সভায় তিনি এ গুরুত্বারোপ করেন।

নগরের আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এমএ লতিফ বলেন, রাজাকারের দোসররা বারবার দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করে ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে।

এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এজন্য আমাদের নাগরিক দায়িত্বও পালন করতে হবে। আমাদের গভীর সমুদ্রবন্দর ছিল না, ছিল না বন্দরের উল্লেখযোগ্য আধুনিক যন্ত্রপাতি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে দেশে গভীর সমুদ্রবন্দর যেমন হচ্ছে তেমনি দেশে তৈরি হচ্ছে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ ও অবকাঠামোগত সুবিধা। যা নস্যাতে সবসময় সক্রিয় রয়েছে ষড়যন্ত্রকারী অপশক্তি।

দেশের সম্প্রতি অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দ্রুত স্থিতিশীল করার জন্য প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে সবাইকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে একযোগে কাজ করার পাশাপাশি সব ধরনের ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের স্ক্যানার সমস্যা সমাধান ও যন্ত্রপাতি কার্যকর রাখতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি পদক্ষেপ কামনা করেন।  

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি যে ঘটনা হয়েছে তা দেশের ইতিহাসে ন্যক্কারজনক ও নজীরবিহীন। আধুনিক ও সমৃদ্ধ আজকের বাংলাদেশের স্বপ্ন যারা ২০০৯ সালে দেখেনি তারাই তাণ্ডব চালিয়েছে দেশের বিভিন্ন জনবান্ধব স্থাপনায়।

তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির জন্য চট্টগ্রাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখানে রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর এবং দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এজন্য চট্টগ্রামে যাতে কোনো ধরনের নাশকতা না হয় এবং অর্থনীতির গতি স্বাভাবিক থাকে সেজন্য আমরা ব্যবসায়ীসহ সবার সঙ্গে কাজ করছি।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, যারা এসব ন্যক্কারজনক হামলা করেছে তারা রাজাকারের উত্তরসূরি। আমরা তাদের জানি। কিন্তু তাদের উন্মোচন করছি না। আমরা যদি তাদের উন্মোচন না করি এবং আইনের আওতায় না আনি তাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি এই সব অপচেষ্টা শুরুতেই যেন স্বমূলে নির্মূল করতে পারেন সেজন্য সবার দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন।

তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে পণ্য পরিবহন ও নিরাপদ ব্যবসায়িক পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বদ্ধপরিকর।

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাতে কেউ প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে না পারে সেজন্য আমরা তৎপর ছিলাম। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা সবসময় আমাদের পাশে ছিলেন। একই সঙ্গে উৎপাদন যাতে থেমে না থাকে সেজন্য আমরা চট্টগ্রামের কারখানাগুলো দ্রুত চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।

চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ভাংচুরসহ দেশব্যাপী অরাজকতা ও নৈরাজ্যপূর্ণ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রীয় সম্পদের পাশাপাশি বেসরকারি খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে অর্থনীতির প্রাণ দেশের শিল্প উৎপাদন এবং সামগ্রিক আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। দেশবিরোধী চক্র অরাজকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন এবং রপ্তানি খাত ধ্বংসের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নিয়োজিত ছিল। দেশের এমন সংকটময় মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তা, দূরদর্শিতা এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপের কারণে নজীরবিহীনভাবে দেশে স্থিতিশীল অবস্থা ফিরে আসতে শুরু করেছে।

তিনি উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণে পোর্ট ডিউজসহ বিভিন্ন ফি মওকুফের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।

চেম্বার সহ-সভাপতি রাইসা মাহবুব নাশকতার কারণে দেশব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টমস ও ব্যাংকিং খাতের ক্ষতিগ্রস্ত সেবা প্রদান পদ্ধতিকে দ্রুততার সঙ্গে স্বাভাবিক গতিতে ফিরে আনার জন্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

সভায় কাস্টম হাউসের যুগ্ম-কমিশনার মো. তারিক হাসান, চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম, বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, বিকেএমইএর পরিচালক ফৌজুল ইমরান খান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহ-সভাপতি এএম মাহবুব চৌধুরী, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মো. আরিফ, বাফার সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজন, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম আক্তার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু, সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে জহির উদ্দিন আহমেদ, জিপিএইচ ইস্পাতের আলমাস শিমুল, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি সালামত আলী ও জেলার সভাপতি সালেহ আহমেদ সুলেমান, প্রাইম মুভার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক মো. হোসেন এবং আন্তঃজিলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির মো. সুফিউর রহমান টিপু বক্তব্য দেন।

এ সময় চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, মাহফুজুল হক শাহ, আলমগীর পারভেজ, মাহবুবুল হক মিয়া, মোহাম্মদ আদনানুল ইসলাম, মোহাম্মদ মনির উদ্দিন ও আখতার উদ্দিন মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৪
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।