চট্টগ্রাম: ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে আরেকটি বছর। ঘটনা বহুল এই বছরে সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন আসে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও।
সেবা সংস্থা দুটি বিভিন্ন নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হয়েছে বেশ কয়েকবার। তবে ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ’র পরিবর্তন ও দায়িত্ব নেওয়ার পর সিডিএ চেয়ারম্যানের সরকারি খরচে বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত ছিল আলোচনা-সমালোচনায় মুখর।
সরকার পতনের প্রায় তিন মাস পর ৩১ অক্টোবর চেয়ার ছাড়তে হয় চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি ফজলুল্লাহকে। এর ফলে প্রায় ১৫ বছর পর পরিবর্তন আসে ওই চেয়ারে। যদিও এমডিকে চেয়ার থেকে সরাতে কয়েক দফা আন্দোলন করতে হয় বৈষম্যবিরোধীদের। অভিযোগ আছে, প্রকল্পে নয়ছয় সহ নিজের আত্মীয়-স্বজনকে পুনর্বাসনের নামে তিনি চাকরি দিয়েছেন ওয়াসায়।
এছাড়া ভান্ডালজুরি পানি প্রকল্প সময়মত চালু করতে না পারা এবং স্যুয়ারেজ প্রকল্পের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় প্রতিষ্ঠানটিকে। শুষ্ক মৌসুমে পানিতে লবণাক্ততা নিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের দুর্ভোগ পোহাতে হলেও দীর্ঘমেয়াদী কোনো সমাধান দিতে না পারায় বরাবরই ওয়াসা কর্তৃপক্ষ ছিল তোপের মুখে।
অন্যদিকে আরেক সেবা সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ছিল নানা ঘটনায় সমালোচিত। চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল দায়িত্ব গ্রহণ করে পরের মাস ১৮ মে সিডিএ’র ফান্ডের টাকায় দল-বল নিয়ে বঙ্গবন্ধুর মাজার জেয়ারতে যান তৎকালীন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ। যদিও সরকার পতনের পর ৪ সেপ্টেম্বর নতুন চেয়ারম্যান পায় প্রতিষ্ঠানটি। কথিত আছে, মোহাম্মদ ইউনুছ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অফিসের কাজ থেকে রাজনৈতিক কাজকে বেশি গুরুত্ব দিতেন।
এবছর সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নিয়ে। ২০২৩ সালে নির্বাচনের আগে এক্সপ্রেসওয়েটি উদ্বোধন হলেও পূর্ণরূপে চালু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। পুরোপুরি কাজ শেষ না হওয়া, টোল নির্ধারণ এবং র্যাম্প নির্মাণে জটিলতায় দীর্ঘায়িত হয়েছে এক্সপ্রেসওয়ের সুফল ভোগের সময়। শুধু তাই নয়, টাইগার পাস মোড়ে র্যাম্প নির্মাণে গাছ কাটার পরিকল্পনায় সচেতন মহলের সমালোচনার মুখে পড়তে হয় কর্তৃপক্ষকে। যদিও পুনঃনকশায় বাদ দেওয়া হয় এটি। কিন্তু অপরিকল্পিত র্যাম্প নির্মাণ নিয়ে এখনও প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন নাগরিক সমাজ।
বর্ষা এলেই চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিয়ে সরব থাকে গণমাধ্যম। এ জলাবদ্ধতা নিরসনে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিডিএ। এরমধ্যে একটি সেনাবাহিনী ও অন্যটির কাজ করছে সিডিএ। কাজ শেষ না হওয়ায় পুরোপুরি সুফল মিলছে না এসব প্রকল্পের। এমন অবস্থায় জলাবদ্ধতার দায় দিয়ে সিডিএ’র সমালোচনা করেন নগরবাসী।
এছাড়া দুই প্রতিষ্ঠানে (সিডিএ ও ওয়াসা) বছরের বিভিন্ন সময় নানা অনিয়ম নিয়ে চলে দুদকের অভিযান।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪
এমআর/টিসি