চট্টগ্রাম: সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতের নজরে আনা হয়েছে।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালতের নজরে আনা হয়।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সংশ্লিষ্ট আদালত অভিযোগপত্র দেখেছেন।
পলাতক দুই আসামির বিষয়ে জানতে চাইলে এডিসি মো. কামরুল হাসান বলেন, পলাতক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও সম্পদ জব্দের পরোয়ানা পরবর্তী আদালত জারি করবেন।
পিবিআই প্রধানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে বাবুল আক্তারের করা মামলার আবেদন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে আমাদের হাইকমান্ড অবগত আছেন। ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মন্তব্য করেছেন। আগামী ১৯ তারিখ শুনানির জন্য ধার্য আছে ৷ বাবুল আক্তার যে আবেদন করেছেন তা জেল কোর্ট অনুসারে হয়নি। কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অথবা নিজে হাজির হয়ে সরাসরি অভিযোগ করতে হয়, ওই প্রক্রিয়ায় আবেদন হয়নি এ বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার ১৩ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে তিনটায় মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ ৭ জনকে আসামি করে আদালতে ২ হাজার ৮৪ পৃষ্ঠার চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। অভিযোগপত্রে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। বাকি ছয় আসামি হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু ও শাহজাহান মিয়া। এ ছাড়া মামলা থেকে শাহ জামান, সাইদুল ইসলাম, নুরুন্নবী, রাশেদুল ইসলাম ও আবু নাছেরকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এদিকে অভিযোগপত্রভুক্ত সাত আসামির মধ্যে কারাগারে আছেন বাবুল, ওয়াসিম, শাহজাহান ও আনোয়ার। জামিনে আছেন এহতেশামুল। আর মুসা ও কালু শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় ওই বছরের ৬ জুন জঙ্গিরা জড়িত দাবি করে মিতুর স্বামী বাবুল আকতার পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। পাঁচলাইশ থানা পুলিশের পর নগর গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে। তারা প্রায় তিন বছর তদন্ত করেও অভিযোগপত্র দিতে ব্যর্থ হয়। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলা তদন্তের ভার পায় পিবিআই। ২০১৬ সালের ২৪ জুন বাবুল আক্তারকে ঢাকার ডিবি পুলিশ কার্যালয়ে এনে প্রায় ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ২০২১ সালের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের জন্য ২০২১ সালের ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়। হত্যাকাণ্ডে বাবুল জড়িত বলে সন্দেহ তৈরি হলে একইদিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন নগরের পাঁচলাইশ থানায় আরেকটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় বাবুল আক্তারসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়। এই মামলায় ২০২১ সালের ১২ মে বাবুলকে গ্রেফতার দেখানো হয়। বাবুলের করা মামলায় পিবিআইয়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর আদালতে নারাজি আবেদন করেন তার আইনজীবী। আদালত ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ না করে পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে নিজের করা মামলায়ও ২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি বাবুলকে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন আদালত। গত ৬ মার্চ মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২
এমআই/টিসি