ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

‘আজ এক, তবে একশ হতে সময় লাগবে না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫০ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২৩
‘আজ এক, তবে একশ হতে সময় লাগবে না’

কলকাতা: প্রথমবার প্রার্থী হওয়া এবং ভোটে জয়লাভ। আর জিতেই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় পা রেখেছেন বায়রন বিশ্বাস।

সম্প্রতি সাগরদিঘি উপ-নির্বাচনে শাসক শিবিরে কার্যত ধস নামিয়ে জিতেছেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস। শুধু সাগরদিঘির জনপ্রতিনিধি নয়, বায়রন এখন পশ্চিমবঙ্গের বাম-কংগ্রেসের আশার আলো।

গত ২ মার্চ সাগরদিঘি তৃণমূলের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে রাজ্য কংগ্রেস সভাপতির অধীর রঞ্জন চৌধুরীর হুঙ্কার দিয়ে বলেছিলেন, মমতাও অপরাজিত নন, তাকেও পরাজিত করা যেতে পারে, প্রমাণ করল সাগরদিঘি। বাংলায় চোরতন্ত্রে উচ্ছেদ করে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব।  

শনিবার (১১ মার্চ) বায়রন বিধানসভায় আসেন শপথের দিনক্ষণ ঠিক করতে। আর বিধানসভায় পা রেখেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তিনি। এই মুহূর্তে তিনিই বাম-কংগ্রেস শিবিরের একমাত্র মুখ। সে বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতেই আত্মবিশ্বাসী স্বরে তিনি বললেন, এখন তো এক, তবে এক থেকে একশ হতে বেশি সময় লাগবে না। শিগগিরই পরিবর্তন আসছে।

তৃণমূলের তিনবারের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত সাহা মারা যাওয়ায় উপ-নির্বাচন হয় মুর্শিদাবাদ জেলারর সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রে। সেখানে বাম-কংগ্রেস জোট করে নির্বাচনে লড়াই করায় এবার এই আসনে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল। একদিকে মমতার দলের প্রার্থী, অপরদিকে বিজেপি। এর মাঝেই ছিল বাম জোটের প্রার্থী বায়রন। প্রায় ২৩ হাজার ভোটে তিনি পরাজিত করেন শাসক দলের প্রার্থীকে।

একটি উপ-নির্বাচন সাধারণ বিষয় মনে হলেও সাগরদিঘি কিন্তু তা নয়। কারণ মুসলিম সংখ্যালঘু ভোটব্যাংক সবসময় মমতার সঙ্গেই ছিল। এ কারণে তৃতীয়বার পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় ফিরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই সংখ্যালঘু ভোট এখন মমতা বিপরীতে বইছে। এর প্রমাণ সাগরদিঘি। এ কেন্দ্রে ৬৪ শতাংশ ভোটার মুসলিম সম্প্রদায়। তারাই আস্থা রাখেনি মমতা দলের প্রার্থীর ওপর। মূলত এমনই চোরা হাওয়া বইছে রাজ্যের রাজনীতিতে। এর প্রভাব যে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে আরও বড় আকারে পড়তে পারে, তার আন্দাজ পেয়েছে শাসকদলও। একইভাবে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যাওয়া বাম-কংগ্রেসও অনেকটাই অক্সিজেন ফিরে পাচ্ছে।

বায়রনকে যখন প্রশ্ন করা হয়, একা বিরোধী শিবির কীভাবে সামলাবেন? বায়রনের জবাব, কোথাও থেকে তো শুরু হওয়া দরকার। আজ আমি একজন, কিন্তু এক থেকে একশ হতে বেশি সময় লাগবে না। আমার প্রথম কাজ হবে এলাকার উন্নয়ন করা। আমি যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, প্রার্থী হয়ে সেগুলো একে একে পূরণ করব। আশা করছি এ বিষয়ে মমতার সরকারের সহযোগিতা পাব। আমি যেমন বামেদের সমর্থন পেয়েছি, তেমনই তৃণমূলের লোকেরাও আমাকে সমর্থন করেছেন।

তবে কি মমতার দলেরই অনেকে বায়রনকে ভোট দিয়েছেন? তা স্পষ্ট না করলেও, ইঙ্গিত যেন সেদিকেই। তবে তার এই জয় দিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয় সরকারে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রতিনিধি পেল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। আর তাতে বায়রানের একমাত্র সঙ্গী হলেন ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফের) তথা ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ছাড়া বিরোধীদের মধ্যে নওশাদই একমাত্র জিতেছিলেন। আইএসএফ ও বামেদের জোটসঙ্গী।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, ১২ মার্চ, ২০২৩
ভিএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।