কলকাতা: রাত পোহালেই ২১ জুলাই। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।
এমন আবহে প্রতিবারের মতো বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুরে এক ভিডিওবার্তায় সব রাজনৈতিক দলকে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে আসার আহ্বান জানান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এদিন দুপুরে কয়েক মিনিটের ভিডিওবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী দলের কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে আমরা অনেক কর্মীকে হারিয়েছি। তাদের বলিদানকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছর আমরা ২১ জুলাই শহীদ স্মরণে আয়োজন করি।
তিনি বলেন, আমি চারদিক থেকে যে খবর পাচ্ছি, তাতে প্রচুর সংখ্যক মানুষ উপস্থিত হবেন আগামীকালের সমাবেশে। তাই সবাইকে বলব, তাড়াহুড়ো করবেন না। এমনিতেই বর্ষার আবহাওয়া। দুর্ঘটনা এড়াতে বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে প্রত্যেককে। শুধু যারা তৃণমূল করেন, তারাই নন, সমাবেশের মঞ্চে সব রাজনৈতিক দলকে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। আসুন, ২১ জুলাই প্রত্যক্ষ করে যান।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সব দলকে আহ্বান জানিয়ে সর্বভারতীয় স্তরে ফের একবার বিজেপি বিরোধী জোটের ইঙ্গিত দিয়েছেন মমতা। মূলত, বিগত কয়েক বছরের চেয়ে এবারের ২১ জুলাই একটু আলাদা। কারণ, এই মহাসমাবেশের দুদিন আগেই বিজেপির বিরুদ্ধে মহাজোটের বৈঠক বসেছিল বেঙ্গালুরুর কন্নড়ভূমে। উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস সুপ্রিমো সোনিয়া গান্ধী। আর সেই বৈঠকেই মধ্যমণি ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
কাশ্মীর টু কন্যাকুমারীর প্রায় সিংহভাগ বিজেপিবিরোধী দলের নেতারা যোগ দিয়েছিলেন সেই বৈঠকে। ২৬টি রাজনৈতিক দল ‘ইন্ডিয়া’(ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়ান্স) নাম মেনে নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত মমতার ডাকেই সিলমোহর দিয়েছে বিরোধী জোটগুলো। আর সম্ভবত সে কারণে আগামীকাল পশ্চিবঙ্গের বিজেপি বাদে সবকটি রাজনৈতিক দলকে সমাবেশে আহ্বান জানিয়েছেন মমতা।
তবে এবারের একুশের মঞ্চ থেকে কী বার্তা দেন নেত্রী, সেদিকেই নজর থাকবে সবার। ধারণা করা হচ্ছে, বরাবরের মতো ৪২-এ থাকবে মমতার লক্ষ্য। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনই হাসিল করার বার্তা দিতে পারেন একুশের মঞ্চ থেকে।
ইতোমধ্যে ২১ জুলাইয়ের শহীদ দিবসকে ঘিরে বৃহস্পতিবার থেকেই বিভিন্ন জেলার মানুষ কলকাতায় আসতে শুরু করেছেন। দলের পক্ষে বিভিন্ন পয়েন্টে কর্মীদের থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে সভাস্থলের। এলাকাজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। সভাস্থলের আশেপাশে লাগানো হয়েছে প্রচুর সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা। এ ছাড়া ড্রোন দিয়েও চলবে নজরদারি। সভা শুরুর ২৪ ঘণ্টা আগে থেকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা কলকাতা ও সভাস্থলের আশেপাশে।
১৯৯৩ সালের রাইটার্স বিল্ডিং অভিযানে তৎকালীন সরকারের পুলিশের গুলিতে ১৩ জনের কর্মী-সমর্থকের মৃত্যু হয়। মমতা তখন কংগ্রেসের যুবনেত্রী ছিলেন। এরপর তৃনমূল দল গঠন এবং ৩৪ বছর বাম শাসনের অবসান, আজ সব ইতিহাস। এবারে একুশের ৩০ বছর পূর্ণ হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, ২০ জুলাই, ২০২৩
ভিএস/আরএইচ