ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মন্ত্রী না পেয়ে হতাশ পশ্চিমবঙ্গবাসী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৪ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৪
মন্ত্রী না পেয়ে হতাশ পশ্চিমবঙ্গবাসী

কলকাতা: মন্ত্রীসভা গঠন করেছেন ভারতের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শপথ নিয়েছেন ৪৫ জন মন্ত্রী।

গোটা দেশে লক্ষ লক্ষ লাড্ডু বিতরণ হয়েছে। পশ্চিমবাংলাও বাদ যায়নি এ উৎসব থেকে। কিন্তু একজনও মন্ত্রী হননি পশ্চিমবঙ্গের। আর এই নিয়েই কিছুটা হলেও বিষন্ন-হতাশ পশ্চিমবঙ্গবাসী।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে দুটি আসন জিতেছে বিজেপি। একটি আসানসোল, অপরটি দার্জিলিং। আসানসোলের জনসভায় এসে মোদী বলেছিলেন, ‘মুঝে বাবুল চাইয়ে’। মোদীর ডাকে সাড়া দিয়ে বলিউডের গায়ক বাবুল সুপ্রিয়কে দিল্লি পাঠিয়েছেন আসানসোলবাসী। বিজেপির জয়ের পর থেকেই কানে আসছিল, পশ্চিমবঙ্গ থেকে একজন মন্ত্রী হলে বাবুল সুপ্রিয়ই সেই জায়গা পাবেন।

শুধু রাজ্যবাসীই নয়, কিছুটা আশাহত বিজেপির রাজ্য নেতারাও। গড়ে ১৭ শতাংশ ভোট পেয়ে পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের জমি তৈরি করার চেষ্টা করছে বিজেপি। সে সময় রাজ্য থেকে একজন মন্ত্রী থাকলে বেশ সুবিধা হতো বলে মনে করেন দলের রাজ্য নেতারা। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে স্বাভাবিকভাবেই কেউ মুখ খোলেননি।

এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের মতো একটি বড় রাজ্য থেকে কোনো মন্ত্রী হবে না সেটা নিয়েও কিছুটা হতাশ রাজ্যবাসী! তবে অনেকেই বলছেন, মাত্র দুটি আসন পেয়েছে বিজেপি। সে দিক থেকে দেখলে কথাটা যুক্তিপূর্ণ। অন্যদিকে ছোট মন্ত্রীসভা রেখে ব্যয় কমানোর পথে হেঁটেছেন নরেন্দ্র মোদী, এটাও ভাবছেন রাজ্যের নেতারা।
এর আগে অটল বিহারী বাজপেয়ী জমানায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন বিজেপির ২ জন সংসদ সদস্য। তপন শিকদার ও সত্যব্রত মুখার্জি। এদের দু’জনকেই মন্ত্রী করা হয়েছিল। পূর্ণমন্ত্রী ছিলেন না, তবু সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তারা কিছু কাজ করতে পেরেছিলেন। এরমধ্যে টেলিকম নিয়ে তপন শিকদারের কাজ উল্লেখযোগ্য।

তবে আরও একটা ফর্মুলার কথা শোনা যাচ্ছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে। সেটি হচ্ছে, যদি ৪ জনের কম সংসদ সদস্য থাকে তবে সেই রাজ্য কোনো মন্ত্রী পাবে না।

কিন্তু এই ফর্মুলার কথা মাথায় রেখে ৪৫ জন মন্ত্রীর তালিকাতে চোখ ফেলতেই ধরা পড়ল গলদ। ওড়িশা এবং তামিলনাড়ুতে একটি করে আসন পেয়েছে বিজেপি। আর সেই দুই রাজ্যই পেয়েছে একজন করে মন্ত্রী।

দার্জিলিং আসনটি জিততে বিজেপির সাহায্যের দরকার পড়েছিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার। কিন্তু প্রায় একটি অসম লড়াই জিতে আসানসোলে বাবুল সুপ্রিয় প্রমাণ করছেন রাজনীতির ময়দানে তিনি নতুন হলেও বিচক্ষণ।

পশ্চিমবঙ্গবাসীর মধ্যে কেন্দ্রের মন্ত্রিসভায় বাঙালিদের জায়গা নিয়ে একটা না-পাওয়ার অনুভূতি সবসময়ই কাজ করে। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন এর ব্যতিক্রম।

১৯৯৬ সালে যখন সিপিআইএম জানালো জ্যোতি বসু প্রধানমন্ত্রী হবেন না। সেই সময়ও বাঙলার একজন প্রতিনিধি ছিলেন মন্ত্রিসভায়। তিনি সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ইন্দ্রজিত গুপ্ত।

তবে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, আরও বেশ কিছু মন্ত্রী যুক্ত হতে পারেন মোদী সরকারে। কিন্তু তার সঠিক দিনক্ষণ কেউই জানেন না। তবে নতুন প্রধানমন্ত্রীর কাছে পশ্চিমবঙ্গবাসীর দাবি, বাবুল সুপ্রিয়কে নেওয়া হোক মন্ত্রিসভায়। আর সেটা তার যোগ্যতার নিরিখেই।

কারণ, নির্বাচনকালীন সময়ে বাবুল সুপ্রিয়র মধ্যে গোটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ দেখেছিলেন চারিত্রিকভাবে ঋজু কিন্তু শান্ত, সাহসী কিন্তু নিয়ন্ত্রিত তারুণ্যে ভরপুর এক বিচক্ষণ রাজনীতিককে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৯ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।