ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

কাঁচা লিচুই শিশু মৃত্যুর কারণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৬ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৪
কাঁচা লিচুই শিশু মৃত্যুর কারণ

কলকাতা: কাঁচা লিচুর টক্সিনে দ্রুত ‘সুগার ফল’ হওয়ার কারণে শিশুদের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রমা ভট্টাচার্য।

মালদা জেলায় ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়া বেশ কয়েকজন শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় বিধান সভার অধিবেশনে এ দাবি করেন তিনি।



তবে এই বক্তব্যের সরাসরি বিরোধিতা করে বিরোধী দলনেতা চিকিৎসক সূর্যকান্ত মিশ্র।

প্রতিমন্ত্রীর এ দাবির বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, কাঁচা লিচুতে টক্সিন থাকে এই তত্ত্ব মন্ত্রী কোথা থেকে পেলেন?

ঘটনার পর ভারতসহ বিদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে কাঁচা লিচু খেয়ে শিশুদের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়। যদিও এর প্রামাণ্য কোনো তথ্য এখনও প্রকাশ হয়নি।

এতে শুধু রাজ্যে নয়, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও। তবে কাঁচা লিচুর টক্সিন তত্ত্বকে স্বীকৃতি দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা।

কলকাতার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের সাবেক প্রধান সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলানিউজকে জান‍ান, তার চিকিৎসা জীবনের অভিজ্ঞতায় এমন কথা বা তত্ত্ব শোনেন নি।

কাঁচা লিচুর টক্সিন জীবন কেড়ে নেওয়া সংক্রান্ত কোনো গবেষণা থাকলে তা প্রকাশের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

তবে চিকিৎসকরা বলছেন, যে কোনো ফল কিনে এনে অন্তত কিছুক্ষণ জলে ভিজিয়ে রেখে তারপর খাওয়া ভালো। এর ফলে চাষের সময় যে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয় তার প্রভাব কিছুটা কমে আসে।

জানা গেছে, মূলত দুই ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা হয় লিচু চাষে। প্রথমত লিচু গাছের পাতায় এক ধরনের পোকা বাসা বাঁধে।

এ জন্য এক কীটনাশক গাছের পাতায় ছিটিয়ে দেওয়া হয়। আর সরাসরি লিচুর ওপরেও কীটনাশক দেওয়া হয়।

জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে বর্ষার আগমন হয়ে গেলে এক ধরনের পোকা লিচুর খোসার উপর বাসা বাঁধে।

পরে এরা ফলের ভেতর প্রবেশ করে। এই পোকার উৎপাত কমাতে এক ধরনের বিশেষ কীটনাশকও ব্যবহার করা হয়।

কিন্তু এতে ফলের ভেতর রাসায়নিক প্রবেশ করার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা তথা চিকিৎসক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, কাঁচা লিচুতে টক্সিন আছে বলে মন্ত্রী জানালেও বিষয়টি মোটেই পরিষ্কার নয়।

এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে হলে একমাত্র ন্যশানাল ইনিস্টিটিঊট অফ ভাইরোলজি-এর মত প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞদের মতামত জানা দরকার বলেও মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৪ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।