ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

রোববার ভুটান সফরে যাচ্ছেন মোদী

আউটপুট এডিটর, কো-অর্ডিনেশন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪১ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৪
রোববার ভুটান সফরে যাচ্ছেন মোদী

ঢাকা: ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের তিন সপ্তাহের মাথায় রোববার প্রথমবারের মতো বিদেশ সফরে  যাচ্ছেন নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী। তাও আবার পড়শি দেশ।


অবশ্য শপথ গ্রহণের সময় মোদী তাঁর ভাষণে পড়শি দেশগুলোর গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেছেন। প্রথমবার পড়শি দেশ সফরের মধ্য দিয়ে সেই গুরুত্বই তুলে ধরতে উদ্যোগী মোদী।  

মোদীর সঙ্গে সফরে থাকছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এবং জাতীয় নিরাপত্তা ‍উপদেষ্টা অজিত দোভাল। থিম্পুতে দু’দিনের সফরে গিয়ে মোদী বৈঠক করবেন দেশটির রাজা জিগমে খেসর নামগেয়ল ওয়াংচুক এবং প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোগের সঙ্গে।

এছাড়াও ভুটানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলী এবং ন্যাশনাল কাউন্সিলের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন তিনি। দেখা করবেন বিরোধীদলের নেতাদের সঙ্গে।

মোদী বিদেশ সফরে প্রথম কেন ভুটান যাচ্ছেন তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং। সুজাতা বলেছেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভুটান, তদুপরি কৌশলগত কারণে ভুটান আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

দক্ষিণ এশিয়ার বন্ধু দেশগুলোর মধ্যে আমাদের সঙ্গে ভুটানের ভূমিকা অত্যন্ত ইতিবাচক। আমাদের সঙ্গে তাদের রয়েছে উষ্ণ সম্পর্ক। দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক যোগসূত্র রয়েছে। এই যোগসূত্রই দু’টি দেশকে স্বাভাবিক যোগসূত্র ও অংশীদার দেশে পরিণত করেছে।

তবে দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রের খবর- চীন সম্প্রতি ভুটানের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। যে কারণে মোদী ভুটানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করার উদ্যোগী হলেন।

সূত্রের খবর হল- মোদীর প্রথম বিদেশ সফরের মূল লক্ষ্য থাকবে দু’টি। প্রথমটি অর্থনৈতিক, দ্বিতীয়টি সীমান্ত নিরাপত্তা এবং কৌশলগত বন্ধন জোরদার করা। ভারত-ভুটানের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ গত বছরে ছিল প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা। সে দেশের হাইড্রোকার্বন, তথ্য ও প্রযুক্তি, সিমেন্ট শিল্পে ১৬টি প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে ভারত।

এই বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ককে কোন পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, তা নিয়ে মোদীর সঙ্গে কথা বলবেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী। ভুটানের সঙ্গে ভারতের হাইড্রোকার্বন প্রকল্পের দিকটি তাকালেই বোঝা যায়- এতে দু’পক্ষেরই লাভ হচ্ছে।

এই প্রকল্পে এক দিকে যেমন ভুটানের রফতানি খাতে আয় বাড়ছে, অন্য দিকে ভারত কম খরচে বিদ্যুৎ পাচ্ছে। ২০১৩ থেকে ২০১৮ একাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ভুটানের জন্য আর্থিক সহযোগিতার প্যাকেজ ধার্য হয়েছে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা।

পরিকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, কৃষি, মানবসম্পদ উন্নয়ন, পর্যটনের মতো ক্ষেত্রগুলিতে এই অর্থ কী ভাবে কাজে লাগানো যায়, সে বিষয়ে থিম্পুকে পরামর্শ দেবে নয়াদিল্লি। পাশাপাশি, সে দেশের হাসপাতাল, সেচ ব্যবস্থা, বিদ্যালয়, গ্রন্থাগারের মতো ক্ষুদ্র স্থানীয় প্রকল্পগুলিতেও সহায়তার হাত বাড়াতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী।

মোদী তাঁর সফরে এক দিকে যেমন সে দেশের অর্থনীতির হাত শক্ত করে নিজের দেশেরও মুনাফা বাড়াতে চাইছেন, তেমনই ভুটানের সাহায্য নিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কেএলও এবং উলফা জঙ্গিদের ঘাঁটি ধ্বংস করতেও সমানভাবে উদ্যোগী হতে  আগ্রহ দেখাতে চাইছেন। বিষয়টি নিয়ে ভুটানের নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর বিস্তারিত আলোচনা হবে।

অতীতে ভুটান সেনার সঙ্গে যৌথ ভাবে জঙ্গি-বিরোধী অভিযান করেছে ভারত। অদূর ভবিষ্যতে সে রকম আরও কিছু অভিযান হতে পারে।

এদিকে থিম্পুতে খারাপ আবহাওয়া চলছে । ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সফর যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতে উদগ্রীব সে দেশের সরকার। আর তাই ‘বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি!’ অর্থাৎ বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে বৃষ্টি থামাতে প্রার্থনা করার জন্য।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৭ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।