ঢাকা: গৃহবধূর বয়স ২৫ বছর। বিয়ের বয়স চার বছর।
মৃতপ্রায় এ নারীকে এই অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ভারতের পূর্ব পাটনা থেকে। অন্ধকার কূপ থেকে বের হওয়ার পর যখন তার নিজের সন্তান তাকে চিনতে পারছিলো না তখন হৃদয়বিদারক কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
মেয়েটির বিয়ে হয় ২০১০ সালে। শ্বশুরবাড়ি থেকে যৌতুকের চাপ ছিলো প্রথম থেকেই। অর্থসহ বিভিন্ন জিনিস দিয়েও শ্বশুরালয়ের নির্যাতন থেকে রেহাই পায় নি মেয়েটি।
এরপর যখন একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন তখন আটকে রাখা হলো বাথরুমে। সেখানেই থাকা খাওয়া চলতে থাকে তার।
পুলিশ কর্মকর্তা সীমা কুমারী বলেন, গৃহবধূটি এখন সূর্যের আলোয় চোখ খুলতে পারছেন না। অন্ধকার ও ডিম লাইটের আলোর সঙ্গে এই ক’বছরে তিনি মানিয়ে থেকেছেন। তাই আলো অসহ্য। ছোট্ট জায়গায় থাকাও তার অভ্যাস হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ওই গৃহবধূ জানিয়েছেন, তার সন্তানকে তার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হতো না। খেতে দেওয়া হতো উচ্ছিষ্ট খাবার। সেটাও অনিয়মিত। এসব করা হতো আরও যৌতুক না আনতে পারা এবং কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার অপরাধে।
মিস কুমারী বলেন, তিনি কখনো তার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পান নি। যখন তার আত্মীয়-স্বজন তার শ্বশুরবাড়ি পাটনার দারবাঙ্গায় দেখা করতে আসতো তখন তাদের ফিরতি বাড়ির পথ দেখিয়ে দেওয়া হতো।
বাইরে থেকে কেউ তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেত না। ফলে তার নিজের সন্তানও তাকে চিনতে না পারলে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী প্রভাত কুমার সিংকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তার শ্বশুর ধীরেন্দ্র সিং এবং শাশুড়ি ইন্দিরা দেবীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ভুক্তভোগীর পরিবারের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৪