কলকাতা: তৃণমূল কংগ্রেস-বিজেপি সংঘাতের আবহ বজায় রেখেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা বৈঠক এড়ালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে দিল্লিতে সবাইকে আসতে বলেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলে বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
জানা গেছে, এ বৈঠকে যোজনা কমিশনের (প্ল্যানিং কমিশন) পরিবর্তে কী ধরনের সংস্থা হবে তা নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীদের রায় নেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাজির না থাকা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। এ বৈঠকে না যাওয়ায় মোদীর সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাৎ এবারও হবেনা মমতার।
প্রসঙ্গত, উল্লেখযোগ্য ভারতের অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে গিয়েছেন। মনে করা হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি’র মধ্যে নিয়মিত সংঘাত থাকায় প্রধানমন্ত্রীর মুখোমুখি হচ্ছেন না মমতা বন্দোপাধ্যায়। সারদা, খাগড়াগড়ের ঘটনা, পাড়ুই কাণ্ডসহ প্রতিটি বিষয় নিয়েই তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি’র বিরোধ তুঙ্গে।
কংগ্রেসসহ অন্য বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এখন লোকসভায় মোদী ও সরকারের বিরোধিতায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। তৃণমূলের কৌশলগত চাপের কাছে রাজ্যসভাতেও রীতিমত চাপের মুখে বিজেপি সরকার।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গে এবং দিল্লীতে বিজেপিও সারদা কাণ্ড,বর্ধমান বিস্ফোরণ নিয়ে আক্রমণ শাণাচ্ছে তৃণমূলের দিকে। এই সংঘাতের আবহের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর মুখোমুখি হওয়াটা এড়িয়ে গেলেন বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
রোববারের বৈঠকে নরেন্দ্র মোদীর প্রধান আলোচ্য বিষয়, যোজনা কমিশনের জায়গায় যে সংস্থা হবে, তার চেহারা কী হবে, সেটি কী কাজ করবে তা ঠিক করা। সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে এই আলোচনা ভারতের রাজনৈতিক মহল বিজেপি সরকারের তরফে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন তারা।
জাতীয় কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে বিরোধিতা করতে পারেন বলে ধারনা করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবুও তারা তাদের মতামত প্রকাশের জন্য বৈঠকে হাজির থাকবেন বলে জানা গেছে।
বৈঠকে প্রতিটি রাজ্যের সমস্যা নিয়ে কথা হবে। মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলাই মোদীর লক্ষ্য বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে সেখানে একমাত্র বাদ থাকছে পশ্চিমবঙ্গ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছে আগামী দিনে কেন্দ্রের এবং রাজ্যের এই দূরত্বের ফলে ছিট মহল চুক্তি এবং তিস্তা চুক্তিতে প্রভাব পড়তে পারে। যদিও ইতিমধ্যেই ছিট মহল বিনিময় নিয়ে যথেষ্ট উৎসাহ দেখিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত ২২ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক ভবন নবান্নে বাংলাদেশ থেকে আসা সংসদীয় প্রতিনিধি দলকে দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত চুক্তির বিষয়ে অগ্রসর হবার কথা বলেছেন। কিন্তু ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারে মত ছাড়া এই চুক্তি সম্পন্ন করার দিকে এগোতে পারবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭ , ২০১৪