কলকাতা: ভূমিকম্পের পর কলকাতায় আরও বড় রকমের প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কার কথা বলাবলি হচ্ছে গবেষক মহলে। তাদের আশঙ্কা, কলকাতা বয়ে যেতে পারে কাদার স্রোত।
সম্ভাব্য এই পরিস্থিতির কথা জানাচ্ছেন আই আই টি–এর গবেষকরা। বিগত চার বছর ধরে করা তাদের গবেষণায় উঠে এসেছে এমন আশঙ্কার কথা। যদিও গবেষণা এখনও শেষ হয়নি। তারা কলকাতাকে কয়েকটি সিজমিক জোনে ভাগ করেছেন। এই ভাগগুলির মধ্যে কলকাতার পূর্ব অংশের বিধানগর এলাকাকে ভূমিকম্পের সবচে’ ঝুঁকিপ্রবণ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
আগে মনে করা হতো জাপান এবং জাপানের আশপাশের অঞ্চলগুলি এশিয়ার মধ্যে সবচে বেশি ভূমিকম্পপ্রবণ। কিন্তু এই গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, কলকাতা ও তার আশেপাশের কিছু এলাকাও ভূমিকম্পপ্রবণ হয়ে উঠছে।
গবেষকরা আরও জানাচ্ছেন, কলকাতার ভূগর্ভের নিচ দিয়ে চলে গেছে গ্রেভিটি ফল্ট –ইয়াসিন রেঞ্জ। এই ইয়াসিন রেঞ্জের চ্যুতির কারণে ভূমিকম্প হতে পারে শহরে।
নেপালে হওয়া ভূমিকম্পের ফলে কলকাতার অনেক বহুতল ভবনে ফাটল ধরেছে। এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠতে শুরু করছে, উৎসস্থল কলকাতা হলে কি অবস্থা হবে শহরটির?
বিশেষজ্ঞরা আরও জানাচ্ছেন, শহরের নিচেই রয়েছে কাদামাটির চাদর। ভূমিকম্পের ফলে এই কাদামাটির চাদরে কম্পন হতে থাকলে কাদামাটির চাপে উপরের শক্ত মাটি ধসে যেতে বাধ্য। তখন তাসের ঘরের মত হুড়মুড় করে ভেঙে পড়বে শহরের একের পর এক বহুতল ভবন।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, কলকাতার মাটির তলা থেকে যে বিপুল পরিমাণ জল প্রতিদিন তুলে নেওয়া হচ্ছে তার ফলেই জলস্তর নিচে নেমে গিয়ে ঘটতে পারে এহেন বিপর্যয়। শহর কলকাতায় প্রতিদিন মাটির তলা থেকে ৩৪৫ মিলিওন গ্যালন জল উত্তোলন করা হয়। তাই এই মুহূর্তেই সতর্ক না হলে বিপদ বাড়বে।
তবে এই সমস্ত হিসেব নিকেশ এখনও সম্ভাবনার স্তরে আছে। কারণ এখন কোনো বড় মাপের ভূমিকম্প ঘটেনি কলকাতায়। তবে আগামীতে যে তা হবেই না—এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। এমন নিশ্চয়তা বা ভরসা কোনোটাই খুব সাহস করে দিতে পারছেন না কেউ।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯ , ২০১৫
জেএম