কলকাতা: ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মাওবাদী অধ্যুষিত জঙ্গলমহলের ভোটাভুটি মঙ্গলবার শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। সেইসঙ্গে শেষ হয়েছে রাজ্যের ষষ্ঠ দফার ভোট।
এ পর্বের ভোট শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে ভারতের বিধানসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণও শেষ হল।
কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এদিন জঙ্গমহলের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের ১৪টি আসনের জন্য ভোট নেওয়া হয়। এ সবকটি বিধানসভা অঞ্চল মাওবাদী অধ্যুষিত।
এর মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের ৭টি, বাঁকুড়ার ৩টি ও পুরুলিয়ার ৪টি বিধানসভা রয়েছে।
এদিন সকাল ৭টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকাল ৩টায়।
প্রচন্ড গরমের মধ্যে সকাল থেকেই শহর-প্রত্যন্ত গ্রামের বহু মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
নিরাপত্তার কারণে এখানে অন্য পর্বের তুলনায় ভোট গ্রহনের সময় দু’ঘণ্টা কমিয়ে আনা হয়।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, এ দফায় মোট পড়েছে ৮৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
এর মধ্যে পুরুলিয়ায় ৭৬ দশমিক ১৭ শতাংশ, বাঁকুড়ায় ৮৪ দশমিক ১৮ শতাংশ ও পশ্চিম মেদিনীপুর ৭৬ দশমিক ১৭ শতাংশ।
ভোট শান্তিপূর্ণ ও অবাধ হয়েছে বলেও ইসির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
ইসি আরও জানিয়েছে, গতবারের চেয়ে এবার দুই শতাংশ বেশি ভোট পড়েছে। এর মধ্যে ৯১ দশমিক ৭২ শতাংশ ভোট পড়েছে শালবনি কেন্দ্রে।
এদিন ভোটের পর দেখা যাচ্ছে রাজ্যে সবকটি দফা মিলিয়ে মোট ভোট পড়েছে প্রায় ৮৪ শতাংশ।
এদিন, পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডির বিন্দ্যা গ্রামের একটি বুথে এক হাজার ৭৫ জনের মধ্যে মাত্র ৩ জন ভোট দিয়েছেন। এখানে মাওবাদীদের ভয়ে মানুষ ভোট দিতে আসছেন না। প্রশাসন থেকে তাদের বোঝানোর কাজ চলছে।
তালডাংরায় বেলগোরিয়ো গ্রামে ৩০০ ভোটার ভোট বয়কট করেছেন। ভোট নির্বিঘেœই চলছে।
সিপিএম’র পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, বলরামপুরে ৫টি বুথে, নয়াগ্রাম-২ অঞলে বেশ কয়েকটি বুথে, বিনপুরে ৩৯টি বুথে, গোপিবল্লভপুরে ৩০টি বুথে তারা এজেন্ট দিতে পারেননি।
এখানে ২টি বুথে প্রিসাইডং অফিসারের সামনে এজেন্টদের মারধোর করা হয়েছে।
ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে একটি অঞ্চলে ঘরছাড়া ১০০ জন মানুষ ভোট দিতে পারছেন না।
নেতাই ও কাঞ্চনডাঙ্গা গ্রামেও এজেন্ট দিতে পারেনি সিপিএম।
এদিকে, গড়বেতায় খড়কুসমায় শ্যামল চৌধুরী নামে এক ভুয়া মাইক্রো পর্যক্ষেককে গ্রেপ্তার করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
এ কেন্দ্রেই ভোটারদের প্রভাবিত করা অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৩ সিপিএম সমর্থক।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, তারা কয়েকটি বুথে এজেন্ট দিতে পারেনি। ছোট আঙ্গারিয়া কংগ্রেস প্রার্থীর এজেন্টকে মারধোর করে বুথ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
কাল যাদের ভাগ্য নির্ধারিত হল তার মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ, অনগ্রসর কল্যাণমন্ত্রী দেবলীনা হেমব্রম, আইনমন্ত্রী রবিলাল মৈত্র, ঝাড়খ- পার্টির বিনুপুরের বিধায়ক চুনিবালা হাঁসদা ও জঙ্গলমহলে বির্তকিত জনসাধারণের কমিটির জেলবন্দি নেতা নির্দল প্রার্থী ছত্রধর মাহাতো।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১১