ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন:

মন্ত্রিশূন্য রাইটার্স বিল্ডিংয়ে অপেক্ষার প্রহর

আনোয়ারুল করিম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৬ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১১
মন্ত্রিশূন্য রাইটার্স বিল্ডিংয়ে অপেক্ষার প্রহর

কলকাতা থেকে: পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকার গঠন কে করবে তা জানা যাবে শুক্রবারের মধ্যেই। রাজ্য সরকারের প্রশাসনের মূল কেন্দ্রবিন্দু কলকাতার ‘মহাকরণ’-এ বৃহস্পতিবার মূখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রিরা কেউই আসেননি।

সচিবসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এলেও সবাই নির্বাচনে কে জিততে চলেছেন তা নিয়েই আলোচনা ও সম্ভাবনা-আশঙ্কায় দিন কাটান লাল রঙয়ের এই ভবনটিতে।  

রাজ্য সরকারের মূখ্যমন্ত্রীসহ অন্যান্য মন্ত্রী-সচিব সবারই দপ্তর ‘রাইটার্স বিল্ডিং’ বলে খ্যাত লাল রঙের ভবনটিতে, যার কাজ বাংলাদেশের সচিবালয়ের মতোই।

শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর কারণে নয়াদিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা কোনো অংশেই কম নয়। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তও বাস্তবায়ন হয় এই রাজ্য প্রশাসনের মাধ্যমেই।

বৃহস্পতিবার মহাকরণ ঘুরে জানা যায়, মন্ত্রীরা এদিন কেউই এখানে আসেননি।

মূখ্যমন্ত্রীও আসেন না বেশ কয়েকদিন হয়ে গেল। মূখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সর্বশেষ গত ২৭ এপ্রিল এসেছিলেন তার দপ্তরে। তাও মাত্র কিছু সময়ের মধ্যেই তিনি চলে যান।

মহাকরণের কর্মীরা জানান, গত কয়েকদিন ধরেই মন্ত্রীরা এসে নিজেদের ফাইল ও অন্যান্য স্বাক্ষরের কিছু কাজ করে গেছেন। মন্ত্রীদের টেবিল এখন ফাঁকা।

বুধবার মন্ত্রীদের অনেকেই অবশ্য মহাকরণে এসেছিলেন। এদের মধ্যে রাজ্যের উত্তরের আলিপুরদুয়ারের প্রার্থী পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী নিজ দপ্তরের কর্মীদের থেকে বিদায় নিয়ে গেছেন।

অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণমন্ত্রী যোগেশ বর্মন বুধবার বিকেলে মহাকরণে কর্মীদের সবার কাছ থেকে বিদায় নেন। তিনি এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হননি। তাই তার তো আর মহাকরণে আসা নাও হতে পারে।

মন্ত্রীরা এদিন না আসায় মহাকরণে কাজও তেমন ছিল না। বিভিন্ন দপ্তরে কর্মচারীরা নিজেরা বিভিন্ন ধরনের আলোচনাতেই ব্যস্ত। বলাই বাহুল্য, এসব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু শুক্রবারের ফল ঘোষণা।

সরকারি চাকরির কারণে কে সরকার গঠন করবে তা নিয়ে উৎকণ্ঠা থাকার কোনো কারণ তাদের নেই বলে মুখে জানালেও আসলে এরা উদ্বিগ্ন পরবর্তী দিনগুলো নিয়ে।

নাম না প্রকাশের শর্তে একজন কর্মকর্তা বললেন, ‘যদি সরকারি দলের পরিবর্তন হয়, তবে আমাদের হয়তো অন্য কোথাও বদলী করা হবে। এটিই আপাতত আমাদের ভাবনা। ’  

স্বরাষ্ট্র দপ্তরের বিশেষ সচিব আনন্দ গোপাল ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ রাজ্যে ৩৪ বছর ধরে একটি রাজনৈতিক আদর্শের শাসনই তো চলছে। তাই কর্মচারীদের অনেকের কাছে নতুন দল বা সরকার কেমন হবে তা নিয়ে কিছুটা জল্পনা থাকতেই পারে। ’

বামফ্রন্ট সরকারের দ্বারা পুনর্নিয়োগপ্রাপ্ত এই বিশেষ সচিব এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘সচিবদেরও নিশ্চয়ই দপ্তর বদল হতে পারে। ’

প্রসঙ্গত, ১৭৭৬ সালে মহাকরণের এই ভবনটি তৈরি হয়েছিল। কলকাতা থেকে রাজধানী দিল্লিতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত এই ভবনটিতেই ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকারের শাসনকাজ চলতো।

সর্বশেষ মূখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ৭ম মূখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।     

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।