ডালহৌসি (কলকাতা) থেকে: নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের দ্বারা ক্ষমতা থেকে বিদায়ের অপেক্ষায় থাকা বামদলগুলোর নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্থানে হামলার শিকার হচ্ছেন। এসব ঘটনায় তিনজন কমিউনিস্ট নেতা এরই মধ্যে নিহত হয়েছেন।
বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ রাজ্যপালের কাছে একটি স্মারকলিপি তুলে দেন।
রাজভবনে সাক্ষাৎ শেষে প্রতিনিধিদলের নেতা সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ও সাবেক মন্ত্রী মুহাম্মদ সেলিম রাজভবনের বাইরে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাজ্যপাল আমাদের কথা শুনেছেন। তিনি (রাজ্যপাল) নিজেও বলেছেন, কিছু ঘটনা ঘটছে। এতে তিনি উদ্বিগ্ন। ’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালেরও এ ধরনের আশঙ্কা রয়েছেন বলে জানান প্রতিনিধিদলের নেতা।
তিনি বলেন, ‘অন্তবর্তী সময়ের দেখভাল করছেন রাজ্যপাল। তাই তার কাছেই আমরা এসেছি। ’
সেলিম বলেন, ‘রাজ্যপাল আমাদের সঙ্গে বৈঠকের আগেই রাজ্যের পুলিশ প্রধানসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কথা বলেন। সেখানে রাজ্যপাল তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। ’
নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় রাজ্যজুড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের অগণতান্ত্রিক আচরণের বিভিন্ন ঘটনার বিবরণ রাজ্যপালকে জানায় প্রতিনিধিদল।
মুহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘প্রথম ২৪ ঘণ্টায় যা ঘটেছে, তা হয়তো জয়লাভের আতিশয্যে করা হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু পরের ঘটনাগুলো খুবই পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। ’
তিনি বলেন, ‘তিনটি খুন ও গণধর্ষণের ঘটনা ছাড়াও বিভিন্নস্থানে বামফ্রন্টের কার্যালয়গুলো হামলা ও বেদখল হচ্ছে। ’
তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের হামলায় শনিবা মেদিনীপুরের গড়বেতায় খুন হয়েছেন সিপিআই(এম)’র জোনাল কমিটির সদস্য কমরেড জীতেন নন্দী। রবিবার বাঁকুড়ার তালডাংরায় খুন হয়েছেন সিপিআই(এম)’র আঞ্চলিক কমিটির সদস্য অজিত লোহার।
প্রতিনিধিদলের নেতা বলেন, ‘গোটা রাজ্যেই তৃণমূল বাহিনী সন্ত্রাস শুরু করেছে, তবে জঙ্গলমহল ও মেদিনীপুর জেলায় মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকাগুলোর সীমান্তে সন্ত্রাসের পরিমাণ বাড়ছে। কারণ মাওবাদীরা তাদের প্রভাবের এলাকা বাড়াতে চাইছে। ’
মুহাম্মদ সেলিম জানান, আগামী ২৩ মে রাজ্য কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্য থেকে চলে যাবে। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে রাজ্যের পুলিশকে আরও সতর্ক হওয়ার সুপারিশ রাজ্যপালের কাছে করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে গত ১৮ থেকে ১০ মে ৬ দফা নির্বাচনের পর গত ১৩ মে ফল প্রকাশ হয়। এতে ২৯৪ আসনের বিধানসভায় ২২৭ আসন পায় তৃণমূল ও কংগ্রেস জোট। ১০ দলীয় বামফ্রন্ট পেয়েছে ৬২ আসন। এদের মধ্যে সিপিএমের আসন ৪০টি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১১