ধর্মতলা (কলকাতা) থেকে: কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্য ধরনের ও আলোচিত এক ক্ষমতার পালাবদল হতে চলেছে আর কিছু সময় পরেই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ৩৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা কমিউনিস্ট সরকারের পর মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মাধ্যমে এ রাজ্যে এলো ‘পরিবর্তন’।
তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১টা ১ মিনিটে মূখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। তিনিই হবেন পশ্চিমবঙ্গের প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী।
মহাকরণের একটি বিশেষ সূত্র জানায়, আজ শুক্রবার ৩৮ জন মন্ত্রী শপথ নেবেন। এদের মধ্যে ২ জন কংগ্রেসের। তৃণমূলের মন্ত্রীদের মধ্যে মমতাসহ ৩২ জন পূর্ণমন্ত্রী, ৪ জন প্রতিমন্ত্রী।
পরে দ্বিতীয় দফায় মন্ত্রী হবেন আরও ৬ জন।
জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী হিসাব কষে বের করা সময় অনুযায়ী তিনি শপথের সময় নির্ধারণ করেছেন বলে জানা গেছে।
রাজ্যের রাজ্যপালের বাসভবন ও দপ্তর ‘রাজভবনে’র লনে প্রথাগতভাবে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়েছেন তিন হাজারের বেশি অতিথি। সমাজের সবস্তরের মানুষকেই এই অনুষ্ঠানের জন্য আমন্ত্রন জানানো হয়েছে। মমতার পক্ষ থেকে দুই জন রিক্শাচালক, দুইজন হকার, দুইজন বস্তিবাসী ও যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করা এনজিও প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে ২ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আসবেন রাজ্যের সদ্য সাবেক হওয়া মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তার আগমন নিশ্চিত করে সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ সেলিম বৃহস্পতিবার রাতে বাংলানিউজকে বলেন, ‘বুদ্ধবাবুসহ আমরা শপথ অনুষ্ঠানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
অনুষ্ঠানের আয়োজনে রাজ্যপালের দপ্তর ছাড়াও পূর্ত মন্ত্রণালয় কাজ করে। রাজ্যের পূর্ত সচিব অজিত রঞ্জন বর্ধন শুক্রবার সকালে বাংলানিউজকে বলেন, ‘সবকিছুই ঠিকঠাক চলছে। আপাতত কোথাও কোনো সমস্যা নেই। এখন শুধু একটা একের অপেক্ষা। ’
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) জাভেদ শামিম জানান, শুক্রবার রাজভবনের তিনটি গেট দিয়ে সকাল দশটার পর থেকে অতিথিদের প্রবেশ শুরু হবে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা:
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে ঘিরে রাজভবনসহ আশেপাশের এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাজভবন, মহাকরণের আশপাশে মোতায়েন থাকবে ‘কুইক রেসপন্স টিম’, অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত কমান্ডোবাহিনী।
রাজভবনের ভেতরে ও আশপাশের রাস্তায় পর্যাপ্ত পুলিশবাহিনী রাখা হয়েছে।
রাজভবনে প্রায় ১ হাজার নিরাপত্তারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য রয়েছেন। পুলিশের পাশাপাশি নিরাপত্তা রক্ষায় বিশেষ বাহিনী যেমন, ইনসাস, র্যাফ ও স্যাফ দায়িত্ব পালন করছে।
রাজভবনের বাইরে তৈরি হয়েছে বাঙ্কার।
শহিদ মিনার ও মহাকরণের আশপাশে পুলিশি ব্যবস্থা ধরলে শুক্রবার সকাল থেকে আরও প্রায় এক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) জাভেদ শামীম শুক্রবার সকালে বাংলানিউজকে জানান, শপথ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তায় পুলিশের ৫ জন উপ-কমিশনার (ডিসি) দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বলেন, ‘রাজভবনের বাইরে দু’জন ডিসি ও ভেতরে তিনজন ডিসি দায়িত্বে রয়েছেন। ’
এছাড়া রাজভবনের প্রতিটি গেটে কলকাতা পুলিশের একজন করে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের নেতৃত্বে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এদিকে ব্যস্ততম মেট্রো চ্যানেল, ডোরিনা ক্রসিং, শহীদ মিনার ময়দানসহ মধ্য কলকাতার ডালহৌসি ও ধর্মতলার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পুলিশের নজরদারি এদিন সকাল থেকেই বাড়ানো হয়।
ধর্মতলা এলাকার কয়েকটি বহুতল ভবনের ছাদেও নিরাপত্তারক্ষীবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১১