কলকাতা: কঠিন সংকটে পশ্চিমবঙ্গের পাটশিল্প। কলকাতার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের পাটকলগুলির অধিকাংশেরই এখন করুণ দশা।
এই শিল্পে যুক্ত প্রবীণ মানুষরা জানাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গের পাটশিল্পের করুণ অবস্থা নতুন নয়। ১৯৪৭-এর পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের পাট শিল্পের উন্নতি অনেকটা থমকে আছে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নানা রকম বাধায় জর্জরিত হয়ে সংকট আরও বাড়ছে।
জানা যায়, টিমটিম করে জ্বলতে থাকা এ শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ১০ লাখ মানুষ।
পাটকল মালিকরা বলেছেন, চলতি বছর ভারতে পাটের উৎপাদন হয়েছে কম। ফলে চাহিদা অনুযায়ী পাট পাওয়া যাচ্ছে না। এতে আগামী এক মাসের মধ্যে বন্ধ হয়ে যেতে পারে ১৫টির বেশি পাটকল। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে বহু মানুষের।
পাটের উৎপাদন কম হওয়ায় দামও বেশ চড়া এবছর। অন্যদিকে একদল অসাধু ব্যবসায়ী পাটের অবৈধ মজুত করে কৃত্রিম চাহিদা তৈরি করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
দেশভাগের পরবর্তী সময়ে পাটখেতগুলি তৎকালীন পূর্ববঙ্গের দিকে চলে যায়। অন্যদিকে পাটকলগুলি ছিলো হাওড়া ও গঙ্গার দু’পারে। দেশ ভাগের সময় থেকেই পাটের যোগানের অভাবে পাটকলগুলির অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। যদিও বাংলাদেশ থেকে পরবর্তী সময়ে পাট আমদানি করতে শুরু করে গঙ্গার দু’পার ধরে গড়ে ওঠা পাটকলগুলি। কিন্তু তারপরেও চাহিদা অনুযায়ী যোগানের ঘাটতি ছিলো সব সবসময়ই।
বিগত বছরগুলিতে পশ্চিমবঙ্গে সেভাবে চাষিদের পাটচাষে উৎসাহিত করা হয়নি। পাটের সংকট নিয়ে পাটশিল্পের মালিকরা একাধিক বৈঠকে বসেছেন। এবছর অতিবৃষ্টির জন্য সমস্যা বেড়েছে বলে মনে করছেন তারা। বাংলাদেশ থেকে আমদানি করার প্রস্তাবও উঠেছে। কিন্তু পাটকলের মালিকের বক্তব্য, আমদানি করে কিছুটা সুবিধা হলেও দাম খুব একটা কমানো যাবে না।
তারা সরকারকে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে সরকারি সূত্রগুলি জানাচ্ছে, আগামী জুলাই-আগস্ট মাসে নতুন পাট ওঠার আগ পর্যন্ত এই সমস্যা থাকবে। কিন্তু তার মধ্যে অতিরিক্ত দামে কাঁচামাল কিনতে বাধ্য হওয়ার ফলে অনেক কারখানাই বন্ধ হয়ে যাবে।
এ অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পাট তাদের উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ার একমাত্র উপায় বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০১৫
ভিএস/এএ