কলকাতা: মহাভারতে স্বেচ্ছামৃত্যু গ্রহণ করেছিলেন পিতামহ ভীষ্ম। দেহত্যাগের বর্ণনা আছে বিভিন্ন ধর্মের সাহিত্যেও।
একজন রোগী যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছেন, যার সুস্থতা কোনোভাবেই চিকিৎসা বিজ্ঞানের মাধ্যমে সম্ভব নয়, সেই মানুষকে কি স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকার দেওয়া যায়? আবার একজন মানুষ, যিনি নিজে তার জীবন সৃষ্টি করেননি, তার বা তার স্বজনদের ইচ্ছায় কি তিনি মৃত্যুগ্রহণ করতে পারেন? প্রাকৃতিক নিয়মে মৃত্যু না ঘটলে সেই মৃত্যুকে ডেকে আনা কি প্রকৃতির নিয়ম-বিরুদ্ধ হয়ে যায় না? এই আইনের সুযোগ নিয়ে কি অপরাধ প্রবণতা বাড়বে না? আছে এমন নানা হিসাব-নিকাশও।
এই বিতর্ক আর হিসাব-নিকাশের মধ্যেই জানা যাচ্ছে, ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি কমিটি স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে নতুন করে ভাবছে। যদিও দেড় বছর আগে সরকারের স্বেচ্ছামৃত্যু বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব ছিল। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের তরফে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও ‘না’ বলে দেওয়া হয়েছিল। এখন সরকারের পক্ষ থেকেই আইন সংশোধনের কথা ভাবা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, এ লক্ষ্যে গঠিত একটি কমিটি গবেষণা-যৌক্তিকতা তুলে ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
সূত্রটি বলছে, ইনজেকশন দিয়ে স্বেচ্ছামৃত্যুকে বৈধতা দেওয়ার বিষয়ে কমিটির মনোভাব এখনও নেতিবাচক হলেও তারা উদারতা দেখাতে চাইছেন একেবারে আরোগ্য পর্যায়ের বাইরে চলে যাওয়া মানুষটির স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকার দেওয়ার ব্যাপারে। অর্থাৎ সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা নেই এমন চরম পর্যায়ে থাকা রোগীর কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসদানকারী যন্ত্র খুলে নেওয়ার আইনি অধিকার দেওয়ার ব্যাপারে।
যদিও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য এখনও মেলেনি। তবে, সূত্রের খবরটি সামনে আসতেই আলোচনার ঝড় উঠতে শুরু করেছে, তবে কি ভারত সরকার স্বেচ্ছামৃত্যুকে অধিকার বলে স্বীকৃতি দেবে? যদি দেয়, তবে এ নিয়ে তুমুল বিতর্কই হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত নেদারল্যান্ডস ও নিউজিল্যান্ডে স্বেচ্ছামৃত্যু বৈধ।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৬
ভিএস/এইচএ/