আগরতলা (ত্রিপুরা): গতবছর পরীক্ষামূলকভাবে ত্রিপুরা রাজ্যে প্রথম ডিজাইন মুক্তা চাষ করে সাফল্য আসায় এবছর একাধিক চাষী পুকুরে মুক্তা চাষ করছেন। রাজ্যের প্রথম মুক্তা চাষী চিত্ত রঞ্জন দত্ত এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ঝিনুকের অপারেশনের কাজে।
ত্রিপুরা রাজ্যের সিপাহীজলা জেলার বিশালগড় এলাকার যুবক চিত্তরঞ্জন দত্ত গত বছর প্রথমবারের মতো রাজ্য তথা উত্তর-পূর্ব ভারতে ডিজাইনার মুক্তা চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়েছিলেন। পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে প্রথম বছরেই তিনি বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক সাফল্য লাভ করেন।
গত বছর তিনি দেড় হাজার ঝিনুকের মধ্যে ডিজাইনার মুক্তা চাষ করেছিলেন। প্রায় ৩ হাজার পিস মুক্তা উৎপাদন হয়েছিল এই ঝিনুক থেকে। খরচ হয়েছিল প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার রুপি। এগুলো বিক্রি করে খরচ বাদ দিয়ে তার লাভ হয়েছিল প্রায় দেড় লাখ রুপি বলে বাংলানিউজকে জানান। বাণিজ্যিকভাবে প্রথমবারে এত সাফল্য লাভ করায় তিনি দারুণ উৎসাহিত। তাই এবছর তিনি আরো বেশি সংখ্যায় মুক্তা চাষ শুরু করেছেন।
এবছর তার সঙ্গে আরো অনেকেই চুক্তির ভিত্তিতে মুক্তা চাষে যুক্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে এবছর গত বছরের তুলনায় পাঁচ থেকে সাত গুণ বেশি মুক্তা চাষ হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। যদিও এখন পর্যন্ত তিন থেকে চার জনের সঙ্গে এই বিষয়ে চুক্তি হয়েছে। আগামী দিনে আরও কয়েকজনের সঙ্গে চুক্তির হতে পারে। এছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগেও তিনি এবছর গত বছরের তুলনায় আরো বেশি সংখ্যায় মুক্তা চাষ করবেন বলেও জানান।
সবকটাই হচ্ছে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এখন পর্যন্ত সরকারি তরফে এই বিষয়ে কোনো সহায়তা করা হয়নি। তবে ত্রিপুরা সরকারের মৎস দপ্তর থেকে তাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে সরকার এই প্রকল্পের পাশে দাঁড়াবে।
এখন তিনি বাড়িতে বসে বিভিন্ন পুকুর ও খাল-বিল থেকে সংগ্রহ করা ঝিনুকগুলিকে অপারেশন করে মুক্তা তৈরির সহযোগী উপাদান নিউক্লিয়াস ভেতরে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। নিউক্লিয়াসগুলিকে ঝিনুকের পেটের ভেতর ঢুকিয়ে দেওয়ার পর কিছুক্ষণ এন্টিবায়োটিক যুক্ত জলের মধ্যে রাখছেন, যাতে করে কোন ধরনের রোগজীবাণু ঝিনুকের ক্ষতি না করতে পারে। সবশেষে অপারেশন করা ঝিনুকগুলিকে বিশেষ ধরনের জালের মধ্যে পুকুরের জলের তলায় একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে রেখে দিচ্ছি। প্রায় এক বছর এভাবে রাখার পর ঝিনুকের পেটের ভিতর বিভিন্ন নকশার মুক্তা তৈরি হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২১
এসসিএন/এমকেআর