ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ত্রিপুরায় রেণু-পোনা উৎপাদনে যুবকের ভাগ্য বদল

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০২১
ত্রিপুরায় রেণু-পোনা উৎপাদনে যুবকের ভাগ্য বদল

আগরতলা, (ত্রিপুরা): মাছের রেণু ও পোনা উৎপাদন করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন ত্রিপুরার বিশ্বজিৎ দত্ত। পাশাপাশি করেছেন ১০ জন মানুষের কর্মসংস্থান।

আগরতলার পার্শ্ববর্তী ভূবনবন এলাকার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ। ২০০৯ সালে বাড়ির পাশের পুকুরে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ শুরু করেন। শুরু থেকে মৎস্য দপ্তরের তত্ত্বাবধানে কাজ করেছেন। তাই প্রথম থেকেই হয়েছেন আর্থিকভাবে লাভবান।

২০১৫ সালে দপ্তরের আধিকারিকদের পরামর্শে মাছ চাষের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ নিয়ে রেণু ও পোনা উৎপাদন শুরু করেন তিনি। এ কাজে দারুণভাবে সফলও হন। বিশ্বজিৎ প্রথম দিকে ছোট পরিসরে রেণু উৎপাদন শুরু করেছিলেন। সফলতা পেয়ে এখন একাধিক প্রজাতির মাছের রেণু ও পোনা উৎপাদন করছেন।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে মূলত ক্যাট ফিস প্রজাতির রেণু ও পোনা উৎপাদন করছেন। এর মধ্যে রয়েছে পাবদা, শিং, মাগুর, নোনা টেংরা, ভিয়েতনামের কৈ মাছের রেণু ও পোনা।

বিশ্বজিৎ জানান, বর্তমানে তিনি বছরে সাত থেকে আট লাখ পোনা উৎপাদন করছেন। এসব রেণু ও পোনা ত্রিপুরার বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি প্রতিবেশী রাজ্য আসামের মাছ চাষিরাও নিয়ে যান। এছাড়া ত্রিপুরা সরকারের মৎস্য দপ্তরও কিনে নেয়।

রেণু উৎপাদনের যাবতীয় কাজ- যেমন পুরুষ ও স্ত্রী মাছ নির্বাচন, ইনজেকশন দেওয়া থেকে শুরু করে প্রজনন সংক্রান্ত সবকিছু নিজ হাতে করেন বিশ্বজিৎ। কয়েক বছর টানা কাজ করায় এতটা দক্ষতা অর্জন করেছেন তিনি। এখন রেণু উৎপাদনে সাফল্যের হার প্রায় ১০০ শতাংশ বলে বাংলানিউজকে জানান তিনি।

তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মাছের রেণু ও পোনা উৎপাদনের জন্য রয়েছে আলাদা একটি ঘর। এটি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুসারে তৈরি করেছেন বিশ্বজিৎ। ঘরটির মধ্যে রয়েছে প্রাপ্ত বয়স্ক মাছের জন্য ট্যাংকি, রেণু উৎপাদনের জন্য হ্যাচারি। এর মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে নিষ্কাশন সুবিধা।

ট্যাংকির কোনোটিতে রয়েছে হাজার হাজার নারী-পুরুষ মাছ। কোনোটিতে আলাদা করে রাখা মাছের জোড়া। আবার কিছু কিছু ট্যাংকিতে লিকলিক করছে লাখ লাখ পোনা।

বিশ্বজিৎ জানান, মাছের রেণু ও পোনা উৎপাদনের মৌসুম মার্চ থেকে শুরু হয়। শেষ হয় আগস্ট মাসে। এ সময় দিন-রাত পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। এ সময়টাতে সাতজন লোক কাজ করে। এছাড়া সারা বছর নিযুক্ত থাকে তিনজন লোক।

তিনি জানান, মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তারা সম্প্রতি একটি পাবদা মাছের হ্যাচারি তৈরি করে দিয়েছেন। এছাড়াও ভিয়েতনামের কৈ মাছের চাষ করছি। তিনটি পুকুরে এ মাছগুলো চাষ করা হচ্ছে। আগামী দিনে পুকুরের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।  

বিশ্বজিৎ জানান, সব খরচ বাদ দিয়ে মাছের রেণু ও পোনা থেকে প্রায় ১২ থেকে ১৪ লাখ রুপি আয় করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০২১
এসসিএন/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।