ঢাকা: সবজির বাজার চড়া; সেই সঙ্গে মাছ, গরু ও মুরগির মাংসের বাজারেও কোনো সুখবর নেই। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমে প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছিল ১৯০-২০০ টাকায়।
অন্যদিকে কক মুরগি, সোনালি মুরগি, গরুর মাংস, খাসির মাংসসহ সব ধরনের মাছের দাম আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তবে নতুন করে এসব পণ্যের দাম না বাড়লেও আমিষের চাহিদা পূরণ করতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
শুক্রবার (২ জুন) রাজধানীর মেরাদিয়া হাট, খিলগাঁও বাজার এবং সিপাহীবাগ বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ২১০ থেকে ২২০ টাকার নিচে ব্রয়লার মুরগি মিলছে না। কক মুরগি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, লেয়ার মুরগি প্রতিকেজি ৩৮০ টাকা, সোনালি মুরগি প্রতিকেজি ৩৪০-৩৫০ টাকা।
মুরগির মাংসের পাশাপাশি ডিমের দামও এখন বাড়তি। গত সপ্তাহে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম ১৩০-১৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ১০-১৫ টাকা দাম বেড়ে এলাকা ভেদে প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকায়। আর হাঁসের ডিম প্রতি ডজন ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগির ডিম প্রতি ডজন ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পোল্ট্রি বাজারের এমন পরিস্থিতির জন্য বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়ী করছেন পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা।
এসব বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দু’মাস আগেও ব্রয়লার মুরগি কেনা যেতো ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। কিন্তু এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ২১০-২২০ টাকায়। মাস চারেক আগেও যেখানে কক মুরগি বা সোনালি মুরগি প্রতিকেজি ২৫০-২৬০ টাকায় কেনা যেত, তারও দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকায়। দেশি মুরগির বিকল্প হিসেবে আগে কক মুরগির বিক্রি বেশি থাকলেও বর্তমানে দাম বাড়ায় এর বিক্রিতে কিছুটা টান পড়েছে। ফলে মুরগির বাজারে এখন চাহিদার শীর্ষে আছে ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি। বাজারে এক কেজি সোনালি মুরগি কিনতে লাগছে ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা। পাশাপাশি দেশি মুরগির দাম উঠেছে ৫৫০ টাকা কেজি।
বেসরকারি চাকরিজীবী মাকসুদুর রহমান। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি তার, তাই মেরাদিয়া হাটে এসেছিলেন ব্রয়লার মুরগি কিনতে। তিনি বাংলানিউজকে জানান, গত দুই মাসের মধ্যে ব্রয়লার মুরগির দাম অস্বাভাবিক ভাবে ৫০-৭০ টাকা বাড়লেও সে তুলনায় দাম কমে-বাড়ে ১০-১৫ টাকা করে। আগে ব্রয়লার মুরগি খেতে কিছুটা ঝামেলা হত। কিন্তু ব্রয়লারের মতো অন্য সব মুরগির দাম বেড়ে যাওয়াতে এখন কিছুটা কমে ব্রয়লারই কিনতে হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিটি দোকানে ব্রয়লার মুরগি বেশি বেশি বিক্রি হচ্ছে। কারণ আগের থেকে ব্রয়লারের চাহিদা অনেক বেড়েছে।
অন্যদিকে, দু’মাসের ব্যবধানে কেজিতে ২০০ টাকা বেড়ে খাসির মাংস এখন বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা। আর ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৯৫০ থেকে এক হাজার টাকায়। আগের বাড়তি দামেই গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৭৮০-৮০০ টাকায়।
এদিকে মাছের বাজারে হাইব্রিড তেলাপিয়া মাছ গত সপ্তাহে ছিল ২০০ টাকা কেজি। যা এ সপ্তাহে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। পাঙাস প্রতিকেজি ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, দেশি কই মাছ প্রতিকেজি ৪৫০ টাকা, শিং প্রতিকেজি ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আইড় মাছ প্রতিকেজি ১৪০০ টাকা, রুপচাঁদা প্রতিকেজি ১৬০০ টাকা, আকার ভেদে পুঁটি মাছ প্রতিকেজি ৫০০-৭০০ টাকা, বড় সাইজের গলদা চিংড়ি প্রতিকেজি ১৩০০-১৪০০ টাকা, বাইলা মাছ প্রতিকেজি ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মেরাদিয়া হাটের মাছ বিক্রেতা ইদ্রিস আলী বলেন, দেশি নদীর মাছ বাজারে এখন কম আসছে। চাহিদাও বেশি, তাই দেশি সব মাছের দাম বর্তমানে কিছুটা বেশি। আড়াই থেকে তিন কেজির বেশি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা কেজিতে। আড়াই কেজির মধ্যে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৩০-৩৪০ টাকায়।
মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাছের দাম নাগালের মধ্যেই আছে। ক্রেতারা বলছেন, মুরগি ও গরুর মাংসের দাম বাড়ায় মাছের দিকেই ঝুঁকছেন বেশির ভাগ ক্রেতা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৯ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০২৩
ইএসএস/জেডএ