ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘প্রাক-বাজেট আলোচনা হয় কিন্তু বাজেটে তার প্রতিফলন দেখা যায় না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০২৪
‘প্রাক-বাজেট আলোচনা হয় কিন্তু বাজেটে তার প্রতিফলন দেখা যায় না’

দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার পথ নানা প্রতিকূলতা ও সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে গুণগতমানের সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা, স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় রাজস্ব আহরণ বাড়ানো ও ব্যাংক খাতের দুরবস্থা দূর করার তাগিদ দিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতা, অর্থনীতিবিদ ও গবেষকরা।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল)  জাতীয় প্রেস ক্লাবে গবেষণা সংস্থা  রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‍্যাপিড) আয়োজিত আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রাক বাজেট আলোচনায় এমন মত দিয়েছিলেন। র‍্যাপিড চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদ সদস্য নাসের শাহরিয়ার জাহেদী।  

বাজেট ও সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী বাজেটের আকার হবে ৮ লাখ কোটি টাকার। নবম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা তৈরি করার কাজ শুরু করেছি। প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, পঞ্চবার্ষিকীসহ অন্যান্য পরিকল্পনা অনুযায়ী বাজেট প্রণয়ন করা হয়। এছাড়া মূল্যস্ফীতি কমানোর প্রক্রিয়া হিসেবে সুদহার বাড়ানো হয়েছে। সরকার কর জিডিপি অনুপাত বাড়াতে আগ্রহী।

আবদুর রাজ্জাক বলেন, বাজেট প্রণয়নে সংখ্যার বাইরে বেরিয়ে গুণগতমানের দিকে নজর দিতে হবে। পাশাপাশি রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে যাতে বাজেট ব্যয় বাড়ানো যায়। বিনিময় হার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। বাজেট ব্যয় ব্যবস্থাপনা আরও বাড়ানোর জন্য সংস্কারের প্রস্তাব দেন এই অর্থনীতিবিদ।  

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র‍্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ। তিনি বলেন, দেশে এখনও পরোক্ষ কর অনেক বেশি। অথচ উন্নত বিশ্বে প্রত্যক্ষ কর বেশি। এতদিন এসব জায়গায় সংস্কার আনা যায়নি। এখন নির্বাচনের পরে সংস্কার করার সুযোগ অনেক বেশি।

তিনি বলেন, ১২০টি দেশে উন্মুক্ত বাজেট ইনডেক্স হয়। তবে বাংলাদেশে অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীদের সঙ্গে অনেক বেশি প্রাক-বাজেট আলোচনা হয়। কিন্তু বাজেটে এর প্রতিফলন দেখা যায় না। এ ক্ষেত্রে বাজেট ফলোআপ থাকলে কাজে আসত। ২০০৯-১০ অর্থবছরের তুলনায় এখন বাজেটের আকার ৮ গুণ বেড়েছে কিন্তু সেই হারে রাজস্ব আয় বাড়েনি। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন নিয়েও উদ্বিগ্ন।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, বাজেটে অনেক বেশি সংস্কার প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সংসদীয় কমিটির সংশ্লিষ্টতা বাড়াতে হবে। যাতে বাজেট বাস্তবায়নের সময় ধরতে পারে। তিনি বলেন, এনবিআরের কর আদায় প্রক্রিয়া অনলাইন করার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সব প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে এনফোর্সমেন্ট বাড়াতে হবে ।

আলোচনায় ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় আগামী বাজেটে বেশ সংস্কারের মাধ্যমে পদক্ষেপ নিতে হবে। যাতে আমরা ব্যবসা করতে পারি। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে না পারলে কর দেওয়ার ক্ষমতা কমে যাবে। তিনি বলেন, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি কর বাড়ানোর জন্য যথার্থ হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০২৪

জেএ/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।