ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ফার্মগেটে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২৪
ফার্মগেটে  জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

ঢাকা: আর মাত্র এক সপ্তাহ পরেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। আসন্ন রোজার ঈদকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে রাজধানীর মার্কেটগুলোতে জমে উঠেছে কেনাবেচা।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর ফার্মগেটের ফার্মভিউ সুপার মার্কেট, চায়না টাউন, সেজান পয়েন্ট, মাহবুব প্লাজা, চৌরাঙ্গী সুপার মার্কেট, জহির উদ্দিন প্লাজাসহ (বাবু মার্কেট) ফুটপাতের দোকানগুলোতে এ চিত্র দেখা যায়।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে বিক্রেতারা বাহারি ঈদ পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। প্রতিটি দোকানেই দেখা মিলছে রং-বেরঙের বাহারি পোশাক। বিভিন্ন ডিজাইনের শার্ট, প্যান্ট, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা, শাড়ি, কসমেটিকস, শিশুদের পোশাক, জুতা, বেল্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, ব্যাগ, কসমেটিকস কিনতে দোকানগুলোতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন পোশাকের নাম ধরে ডাক দিচ্ছেন বিক্রেতারা। ক্রেতার চাপ সামাল দিতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায় তাদের।

রাজধানীর অন্যান্য জায়গার বিপণিবিতানগুলোর তুলনায় ফার্মগেটে দাম কম হওয়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তরাই এখানে কেনাকাটা করতে আসেন। এজন্য শপিংমলগুলোর তুলনায় এখানকার ফুটপাতেই ক্রেতার ভিড় বেশি দেখা যায়। এছাড়া আশপাশের এলাকার বাসিন্দারই মূলত এসব মার্কেটের মূল ক্রেতা।

বিক্রেতারা বলছেন, পবিত্র রমজানের শুরুর তুলনায় এখন ক্রেতার সংখ্যা ব্যাপক বেড়েছে। প্রতিদিন মধ্যরাত পর্যন্ত তাদের বেচাকেনা চলছে। ঈদ যত এগোবে বেচাকেনা তত বাড়বে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ক্রেতা কম বলেও দাবি করছেন তারা।

ঈদে পুরুষদের যেসব পোশাক বিক্রি হয়, তার ভেতর সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় পাঞ্জাবি। ফার্মগেটের সেজান পয়েন্টের আমিন পাঞ্জাবি নামের দোকানটিতে তাই সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে। এ দোকানে স্বত্বাধিকারী রুহুল আমিন বলেন, বেচাকেনা খুবই ভালো হচ্ছে। ঈদের পাঞ্জাবিই সবচেয়ে বেশি কেনে মানুষ। তাই আমাদের বিক্রি খুবই ভালো হচ্ছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার ক্রেতা কিছুটা কম।

একই কথা বলেন এই মার্কেটের এস এম কসমেটিকস অ্যান্ড গিফট শপের কর্মচারী ইমন। তিনি বলেন, রোজার শুরুতে তো মানুষের কাছে টাকা ছিল না। এখন মানুষের হাতে টাকা এসেছে, বেতন-বোনাস হয়েছে। তাই ক্রেতাও বেড়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার বেচাকেনা ৪০ শতাংশ কম।

তবে সব দোকানেই যে ভালো বিক্রি হচ্ছে, ব্যাপারটা তেমন নয়। ক্রেতাদের এমন ভিড়েও কিছু কিছু দোকান একেবারেই ক্রেতাশূন্য দেখা গেছে। তেমনই একটি দোকান জয়'স। এ দোকানের কর্মচারী রকি মজুমদার বলেন, এবার বেচাকেনা খুবই খারাপ। মানুষের হাতে টাকা নেই। টাকা আছে শুধু উচ্চ বিত্তদের কাছে। আর তারা তো এখানে কেনাকাটা করেন না। তারা বড় বড় শপিংমলে যান। আর নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা খোঁজেন কমদামি জিনিস। সেটা পাওয়া যায় ফুটপাতে। এ কারণে বড় শপিংমলগুলো আর ফুটপাতেই ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। আমাদের মতো মাঝামাঝি জায়গার দোকানে একেবারেই বেচাকেনা নেই। গত বছর এই সময় দৈনিক এক লাখ টাকার ওপর বিক্রি ছিল। কিন্তু এবার এর অর্ধেকও নেই।

চৌরাঙ্গী সুপার মার্কেটের বেবি শপের কর্মচারী সাকিব বলেন, বেচাকেনা অনেক বেড়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার ৩৫ শতাংশ বিক্রি কমেছে। তাও এই দুর্দিনে এটাই ভালো। আশা করছি, আর যে কয়দিন আছে, সেই কয়দিনে বেচাকেনা আরও বাড়বে।

ফার্মগেটের ফুটপাতে জুতা বিক্রি করেন সুমন। ক্রেতাদের ভিড়ে দম ফেলানোর সুযোগ নেই তার। তিনি বলেন, রোজার শুরুর তুলনায় বিক্রি অনেকে বেড়েছে। যদিও টার্গেট পূরণ হয়নি এখনো। ঈদে ৮-১০ লাখ টাকার জুতা বিক্রির প্রত্যাশা। এখনো অর্ধেকও বিক্রি হয়নি। যদিও আরও কয়েকদিন আছে। দেখা যাক কি হয়।

সেজন পয়েন্টে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী রিয়াদ হাসান। তিনি রাজধানীর নাখালপাড়ায় থাকেন। বাংলানিউজকে রিয়াদ বলেন, ঘরের কাছে তাই এখানে আসা। আজ স্ত্রী-সন্তানদের পাশাপাশি ভাগিনা-ভাগনির জন্য কেনাকাটা করবো। আর এখানে তুলনামূলক কম দামে জামা-কাপড় কিনতে পারা যায়। এখানে কেনাকাটার সামর্থ্য আছে, তাই এখানেই এসেছি।

তেজগাঁও থেকে এসেছেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার নাসরিন সুলতানা। তিনি বলেন, এই এলাকার মানুষজন এখান থেকেই কেনাকাটা করেন। এখানে অন্যান্য মার্কেটের তুলনায় কম ভিড় থাকে। নতুনত্ব যে পাওয়া যায় না, তা নয়। অনেক নতুন ডিজাইনের পোশাক পাওয়া যায়। তবে দামটা একটু বেশি মনে হয় আমার কাছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২৪
এসসি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।