বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে রিসিভার নিয়োগের অসংখ্য নজির রয়েছে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রায় প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রেই পরিণতি ভালো হয়নি।
এসব প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের কষ্ট করে দাঁড় করানো ব্যবসায় রিসিভার/প্রশাসক নিয়োগের পর উদ্ভাবন ও বিপণনের ধারাবাহিতা না থাকায় দেখা গেছে, উদ্যোগগুলো ধ্বংসের মুখে পড়েছে।
এতে ঋণ আদায় কিংবা পাওনা পরিশোধ আরো অনিশ্চিত হয়ে গেছে। সম্প্রতি দেশের ১০টি শিল্প গ্রুপে রিসিভার নিয়োগের গুজব ওঠায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও শ্রমিক সবাই।
জানা গেছে, স্বাধীনতা-পরবর্তী ৫৩ বছরে দেশের অর্থনীতিতে ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকগুলোতে প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে সামনের সারিতে বাংলাদেশ।
এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে ব্যবসায়ী ও বৃহৎ শিল্পের অসামান্য অবদান। শুধু অর্থনীতি নয়, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া কিছু দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীদের হেনস্তা করার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিল্প খাত ও অর্থনীতি।
ব্যবসায়ী নেতারা বলেছেন, কোনো ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি কিংবা অপরাধ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নিতে হবে।
কিন্তু ব্যক্তিকে শাস্তি দিতে গিয়ে প্রতিষ্ঠান, কর্মসংস্থান ও অর্থনীতি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটা দেখতে হবে। দেশ ও অর্থনীতির স্বার্থে ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। তা না হলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট খাতের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফা করলেও করপোরেশনের অধীন থাকা বেশির ভাগ কারখানা তা পারছে না। এমনকি কারখানা বন্ধ থাকলেও বছরের পর বছর লোকসান গুনছে একাধিক করপোরেশন।
ফলে সরকারকে প্রতিবছর বিপুল অঙ্কের লোকসানের দায় নিতে হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলো টিকিয়ে রাখতে জনগণের করের টাকায় ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে এই দায় বহনের সুযোগ নেই।
যেসব প্রতিষ্ঠানে প্রশাসক/রিসিভার নিয়োগ
অপরাধলব্ধ সম্পদগুলো যেন নষ্ট না হয় এবং চূড়ান্ত রায়ের পর সম্পদগুলো যেন সহজেই রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা যায়, সে কারণেই আদালত রিসিভার নিয়োগ দেয় বলে জানিয়েছেন দুদকের সাবেক মহাপরিচালক ও সাবেক জেলা জজ মো. মঈদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, রিসিভাররা সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির আয় ও ব্যয়ের হিসাব আদালতে জমা দেবেন। কোনো কারণে সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলে রিসিভার দায়ী থাকবেন। এ ছাড়া চূড়ান্ত রায়ে কোনো কারণে আসামি খালাস পেলে তাঁকে তাঁর সম্পত্তি ফেরত দিতে হবে। ফলে ক্রোককৃত সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় সবাইকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে।
বেক্সিমকো: শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপের সব সম্পত্তি সংযুক্ত করে তা ব্যবস্থাপনায় ছয় মাসের জন্য একজন রিসিভার নিয়োগ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে রিসিভার নিয়োগে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বেক্সিমকো গ্রুপ আপিল করায় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডে রিসিভার নিয়োগ স্থগিত হয়ে যায়। তবে গ্রুপের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে রিসিভার নিয়োগের আদেশ বহাল থাকবে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি এখন কারাবন্দি। জানা গেছে, সম্প্রতি বেতন দিতে না পারায় বেক্সিমকো গ্রুপের একাধিক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
নগদ: ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস ‘নগদ’-এ প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ১৫ দিন পরই গত ২১ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম অফিসে কর্মরত পরিচালক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদারকে নগদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
তবে প্রশাসক নিয়োগের পর নগদের লেনদেন আগের চেয়ে কমে গেছে, প্রাতিষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।
প্রিমিয়ার লিজিং: ২০২০ সালে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে না পারায় ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সে প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে এ রকম বেশ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে অবসায়ন চেয়ে গ্রাহকরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন বিভিন্ন সময়ে।
হলমার্ক গ্রুপ: ২০১১ সালে হলমার্কসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা (হোটেল শেরাটন) শাখা থেকে ঋণের নামে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়, যা নিয়ে তখন বড় আলোচনা তৈরি হয়। সেই ঘটনার বিচারকাজ এখনো চলছে। টাকাও আদায় করতে পারছে না সোনালী ব্যাংক। এই ঘটনায় উভয় পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ ব্যাংকও তার পুরো টাকা ফেরত পায়নি। আবার ব্যবসাও ধ্বংস হয়ে গেছে হলমার্কের।
২০২২ সালে সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আতাউর রহমান প্রধান বলেছিলেন, ‘হলমার্কের যেসব সম্পদ আছে তা আদালতের রায়ের মাধ্যমে ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। আমরা চিন্তা করছি এটি কিভাবে নিষ্পত্তি করা যায়। ’
হলমার্ক গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক শামীম আল মামুন বলেন, ‘এখানে কী হয়েছে তা সবাই জানেন। প্রায় ১৩৭ একর জায়গাজুড়ে নির্মিত হলমার্ক গ্রুপের বিশাল শিল্প পার্কে ৪৩টি কারখানায় প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক কাজ করত। তবে সেখানে এখন আর কিছুই নেই। সব বিক্রি করে দিয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। জমি দখলের পর এখন চলছে বিক্রির অপচেষ্টা। ’
সোনালী ব্যাংকের ঢাকা জোনের একটি শাখাপ্রধান কালের কণ্ঠকে জানান, হলমার্ক গ্রুপ এখন একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রতিষ্ঠান। তাদের ব্যবসাও নষ্ট হয়েছে। ব্যাংকও তার ঋণ ফেরত পায়নি। এমনকি তাদের সম্পত্তি নিলামে তুললে আইনি জটিলতার ভয়ে কেউ সেই সম্পত্তি কিনতে চায় না।
এননটেক্স: এদিকে ঋণখেলাপের পরিপ্রেক্ষিতে জনতা ব্যাংকের গ্রাহক এননটেক্স গ্রুপও রুগ্ণ শিল্পে পরিণত হয়েছে। অনিয়ম, জালিয়াতি ও তথ্য গোপন করে এননটেক্স গ্রুপের ২২ প্রতিষ্ঠানকে ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল সময়ে বিপুল অঙ্কের ঋণ দিয়েছে জনতা ব্যাংক। অনারোপিত সুদ বাদে এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যাংকের পাওনা রয়েছে ছয় হাজার ৫৫০ কোটি টাকা।
এননটেক্স গ্রুপের একজন সাবেক কর্মকর্তা জানান, টঙ্গীতে তাঁদের কারখানা ছিল ২২টি। রহস্যজনক আগুনে পুড়ে দুটি কারখানা তিন-চার বছর আগে বন্ধ হয়েছে। অর্থাভাবে দিন দিন কারখানা কমতে থাকে। এখন চালু রয়েছে মাত্র চার-পাঁচটি কারখানা। কারখানার মালিক ৫ আগস্টের আগে দেশে ছেড়ে যান।
বিসমিল্লাহ গ্রুপ: হলমার্ক কেলেঙ্কারির পর ব্যাংকিং খাতে আরেকটি আলোচিত ঘটনা ছিল টেরিটাওয়েল (তোয়ালেজাতীয় পণ্য) উৎপাদক প্রতিষ্ঠান বিসমিল্লাহ গ্রুপের ঋণ কেলেঙ্কারি। ২০১২ ও ২০১৩ সালে বিসমিল্লাহ গ্রুপ ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ভুয়া এলসির মাধ্যমে তা বিদেশে পাচার করে।
বিসমিল্লাহ গ্রুপের প্রতিষ্ঠিত কারখানাগুলোর মধ্যে একমাত্র গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার বহেরারচালা এলাকায় সাহরিস কম্পোজিট টাওয়েল মিলস লিমিটেড কারখানাই চালু রয়েছে। তবে দিন দিন শ্রমিক-কর্মচারী কমিয়ে উৎপাদন সীমিত রেখে কারখানাটি নামে মাত্র চালু রাখা হয়েছে।
ই-ভ্যালি: ই-কমার্সে ব্যাপক অনিয়মের কারণে পর্ষদ ভেঙে দেওয়ায় ছন্দঃপতন ঘটে অনলাইন মাধ্যমে পরিচালিত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালিতেও। এখন পর্যন্ত সেই প্রতিষ্ঠান আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। আবার টাকাও ফেরত পাইনি হাজার হাজার গ্রাহক।
হাইকোর্টের নির্দেশে ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর ই-ভ্যালির পরিচালনার দায়িত্ব নেয় আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ। ওই পর্ষদ গত তিন মাসে ৯টি বোর্ড সভা করে সফলতা অর্জন করতে না পেরে পর্ষদের সব সদস্য পদত্যাগ করেন।
জাতীয়করণের অভিজ্ঞতাও ভালো নয়
মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সব কিছু জাতীয় করা হয়। আদমজীসহ আরো ৮২টি বেসরকারি পাটকল জাতীয় করে এগুলোর ব্যবস্থাপনার জন্য ১৯৭৪ সালে বিজেএমসি গঠন করা হয়। তাতে কোনো ফল আসেনি। ২০০২ সালে সরকার আদমজী জুট মিল বন্ধ ঘোষণা করে সব শ্রমিক-কর্মচারীকে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে বিদায় করে।
আদমজী জুট মিলের মতোই ২০২০ সালের ১ জুলাই সরকারি মালিকানাধীন ২৬টি পাটকল বন্ধের ঘোষণা এসেছে। আদমজী জুট মিলের মতোই এই পাটকলগুলো বছরের পর বছর লোকসান দিয়ে আসছিল।
বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অধীন ২৬টি পাটকল ২০২০ সালে বন্ধ করে দেয় সরকার। পাটকল বন্ধ হলেও বিজেএমসির লোকসান বেড়েছে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে করপোরেশনটির লোকসান ছিল প্রায় ২১৩ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত লোকসান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২৫ কোটি টাকায়।
চীনে ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি: মাঝেমধ্যেই চীনে দুর্নীতি দমনের ধুয়া তুলে ব্যক্তি খাতের ওপর নানা আক্রমণ চলে। আস্থা হারায় বিনিয়োগকারীরা। ২০২০ সালের শেষ দিকে তাদের সরকার বিভিন্ন প্রযুক্তি কম্পানির নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। তাদের নজরদারি ও বিধি-নিষেধের প্রধান বলি ছিল দেশটির শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স কম্পানি আলিবাবা, শীর্ষস্থানীয় গেম নির্মাতা কম্পানি টেনসেন্ট, ফুড ডেলিভারির কম্পানি মাইতুয়ান, সার্চ ইঞ্জিন কম্পানি বাইদু এবং ই-কমার্স কম্পানি জেডি ডটকম।
সে সময় ব্যাবসায়িক ক্ষেত্রে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করার অভিযোগে কম্পানিগুলোকে জরিমানা করা হয়। সরকারি এই নিয়ন্ত্রণ ১৮ মাস বজায় থাকে। চীনের শীর্ষ পাঁচ প্রযুক্তি কম্পানির শেয়ারমূল্য ৪০.৪ শতাংশ থেকে ৭১ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এতে কম্পানিগুলো সম্মিলিতভাবে বাজার থেকে হারায় ১.১ ট্রিলিয়ন ডলার। এতে নতুন উদ্ভাবনের মাত্রা কমতে থাকে। অনেক কর্মী চাকরিও হারায়।
পোশাক খাতেও প্রশাসক নিয়োগ?
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর গত তিন মাসে বকেয়া বেতন-ভাতা, বোনাসসহ নানা দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলনে অস্থির শিল্পাঞ্চল। নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও বন্ধ হচ্ছে না এই অস্থিরতা। এমন পরিস্থিতিতে বকেয়া বেতন পরিশোধে মালিকপক্ষের সমস্যা পেলে প্রশাসক নিয়োগের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সরকার।
নতুন করে মন্ত্রণালয় পুনর্গঠনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময়সভায় ওই হুঁশিয়ারি দেন।
মালিকরা কী বলছেন?
কর্ণফুলী ইপিজেডের ‘ডেনিম এক্সপার্ট’ গার্মেন্টসের মালিক ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন রুবেলের মতে, ‘ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান যেখানে মালিক আছে সেখানে এভাবে দিয়ে কতটুকু পজিটিভ রেজাল্ট আসবে সেখানে মালিক হিসেবে আমি সন্দেহ পোষণ করি। ’
ডিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ‘দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভালো নেই ব্যবসা-বাণিজ্য। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদের হার এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির সার্বিক প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে। এর মধ্যে বেসরকারি কোনো কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালিকরা রাজনৈতিক আক্রোশে পড়েছেন। লাল তালিকাভুক্ত হয়েছেন। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানে প্রশাসক নিয়োগের আশঙ্কায় মনোবল হারাচ্ছেন তাঁরা। ’
নিট ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘রাজনৈতিক মতাদর্শ যা-ই হোক না কেন, একজন উদ্যোক্তাকে রাজনৈতিক ব্যক্তির পরিবর্তে ব্যবসায়ী হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। বিচার ছাড়াই যদি মিডিয়া ট্রায়ালে আমরা দেশীয় শিল্প ধ্বংস করে ফেলি, তাহলে তা অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ’
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, বেক্সিমকো কয়েক মাস ধরে শ্রমিকদের মজুরি দিতে পারছিল না। সরকার তাদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করছে। গ্রুপটিকে সচল করতে এখন সেখানে রিসিভার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বেক্সিমকোতে রিসিভার দেওয়া মানে বন্ধ নয়; বরং এটা সচল করা হচ্ছে। যেকোনো কোম্পানি বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই না, কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বা শিল্প বন্ধ হয়ে যাক। কারণ সেখানে অনেক কর্মসংস্থান রয়েছে। আবার কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের হিসাব জব্দ করা হয়নি, হবেও না। ’
সৌজন্য: কালের কণ্ঠ
বাংলাদেশ সময়: ১০০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২৪
এমজেএফ