কক্সবাজার: প্রতি বৃহস্পতিবার টেকনাফ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গরুর হাট বসে। তবে এবারের হাট অন্যান্য বারের হাটের চেয়ে আলাদা।
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এবার ক্রেতা সমাগম যেমন বেশি, বিক্রেতাও তেমন। টেকনাফের ওই হাটের মতো কক্সবাজার জেলার সব হাটই এখন মায়ানমারের গরুতে সয়লাব। দাম কম ও দেখতে সুন্দর হওয়ায় মায়ানমারের গরুর চাহিদার বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে আমদানিও।
বাজারে গরুর দাম নিয়ন্ত্রণে মায়ানমারের গবাদি পশু ব্যাপক ভূমিকা রাখছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে মায়ানমার থেকে গবাদি পশু আমদানি বেড়েছে। এরই মধ্যে মায়ানমার থেকে কক্সবাজারের বিভিন্ন বাজারে এসেছে অন্তত সাত হাজার গরু, মহিষ ও ছাগল। ঈদের আগে আসবে আরো ১৫ হাজার। এসব পশুর দামও তুলানামূলকভাবে কম।
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ করিডোর হয়ে আনা এসব গরু, মহিষ ও ছাগল থেকে সরকার রাজস্ব পাচ্ছে।
শাহপরীর দ্বীপ করিডোর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বাংলানিউজকে জানান, মায়ানমার থেকে আনা পশুর মাংস গড়ে প্রতি মণ ১৫ হাজার টাকা হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। তবে বড় গরু হলে দাম অনেক কম হয়।
সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে, ভারত থেকে আমদানি করা কিংবা দেশি গরুর চেয়ে মায়ানমারের গরুর দাম অনেক কম।
এ বিষয়ে গরু ব্যবসায়ী টেকনাফের হাশেম বাংলানিউজকে জানান, মায়ানমারের পাঁচ মণ ওজনের একটি গরুর মূল্য প্রায় ৭০ হাজার টাকা। আর একই ওজনের দেশি গরুর দাম পড়বে এক লাখ ২০ হাজার টাকারও বেশি।
টেকনাফ শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করিডোর হয়ে চার হাজার ১৯৪টি গরু, মহিষ ও ছাগল আনা হয়েছে। এসব পশু থেকে রাজস্ব পাওয়া গেছে ২০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
মায়ানমার থেকে চলতি মাসে (সেপ্টেম্বর) প্রায় আড়াই হাজার পশু আমদানি করা হয়েছে। গত বছর মায়ানমার থেকে পশু আনা হয় ২৫ হাজারের মতো।
শাহপরীর দ্বীপের গরু ব্যবসায়ী আব্দুর শুক্কুর বাংলানিউজকে জানান, বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) মায়ানমার থেকে সাত শতাধিক গবাদি পশু এসেছে। প্রতিদিন গড়ে পাঁচশ’ গরু-মহিষ আসছে।
সেপ্টেম্বরের ১ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার পশু আমদানি করা হয়েছে। ঈদের আগে আরো ১৫ হাজার পশু আমদানির টার্গেট রয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানান করিডোর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম।
গরু ব্যবসায়ী আবু সৈয়দ বাংলানিউজকে জানান, কোরবানি উপলক্ষে মায়ানমার থেকে পশু আমদানি বাড়ছে। এসব পশুর মূল্য ক্রয় ক্ষমতার ভেতরেই রয়েছে। মায়ানমার থেকে আমদানি করা পশু শুধু কক্সবাজার নয় চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে।
ব্যবসায়ী মো. শরীফ বাংলানিউজকে জানান, বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখছে মায়ানমারের গরু-মহিষ।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারের কোরবানিতে পশুর দাম লাগামহীন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে ধারণা করছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১১০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৫
এসআই