ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

উত্তরাঞ্চলের সরিষার বাম্পার ফলন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৬
উত্তরাঞ্চলের সরিষার বাম্পার ফলন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রংপুর: সরিষা ফুলের বাহারী হলুদ বর্ণে বর্ণিল হয়ে উঠেছে উত্তরের জেলা রংপুরের মাঠ-ঘাট। স্বল্প খরচ-পরিশ্রমে অধিক ফলন এবং ফসল বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়ার আশায় সরিষা চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।

ফলে এখানে প্রতি বছর আশাব্যঞ্জকভাবে সরিষা আবাদ বাড়ছে বলে কৃষি বিভাগ জানাচ্ছে। এই সরিষা দিয়েই উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতির চাকা ঘোরানো সম্ভব বলে মনে করেন কৃষি কর্মকর্তারা।
 
উদ্ভাবক গবেষক দলের অন্যতম বিনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এম রইসুল হায়দার জানান, দেশে আমন ধান আবাদযোগ্য জমি রয়েছে ৫৫ লাখ হেক্টর। এর মধ্যে ১০ লাখ হেক্টর জমিতে স্বল্প জীবনকালের বিনাধান-৭ চাষ করা হয়। মৌসুম শেষে সেসব জমিতে বিনা সরিষা-৭ চাষ করে ৬ লাখ টন তেল উৎপাদন সম্ভব। এর মধ্য ‍ দেশের ভোজ্য তেলের ঘাটতি পূরণ করে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জ‍নও সম্ভব।

রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী ও বগুড়া আঞ্চলিক কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে রংপুরসহ উত্তরের ১৬ জেলায় ১ লাখ ৩২ হাজার ১৪৮ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। এই পরিমাণ ২০১৩ সালে এক লাফে উঠে দাঁড়ায় ২ লাখ ৪৯ হাজার ১৭৮ হেক্টরে। ২০১৪ সালে সরিষার আবাদ হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৫৩ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। প্রতি বছরই যার ব্যাপ্তি বাড়ছে।

পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর (২০১৫ সালে) সরিষা চাষিরা প্রতি মণ সরিষা বিক্রি করেছেন ১ হাজার ৮শ’ থেকে ২ হাজার ৩শ’ টাকায়। সে কারণে বাড়ছে সরিষার চাষ। এটি চাষ করে হতাশ হওয়ার শঙ্কা নেই।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, বীজ বোনার দুই মাসের মধ্যে সরিষার ফসল ঘরে তোলা যায় বলে অন্য আবাদের সমস্যা হয় না। সামান্য ইউরিয়া ছাড়া আর কোনো সারের প্রয়োজন হয় না সরিষায়। চারা গজানোর পর আগাছা পরিষ্কার করা ছাড়া তেমন কোনো শ্রমেরও দরকার হয় না।

আমন মৌসুমে আষাঢ় মাসে আগাম জাত বিনাধান-৭’র চাষ করে আশ্বিনশেষে কর্তন করে সাফল্যজনকভাবে বিনা সরিষা-৭ চাষ করা যায় বলে জানায় কৃষি অফিস।

আঞ্চলিক কৃষিঅফিস জানায়, এ বছর এই অঞ্চলে ৩ লাখ ৮ হাজার ৪শ’ ৬৪ মেট্রিক টন সরিষার উৎপাদন হবে। বাজার গত বছরের মতো  থাকলে উৎপাদিত সরিষার বাজারমূল্য দাঁড়াবে ৬১ কোটি ৬৯ লাখ ২৯ হাজার ৬শ’  টাকা।

রংপর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক (দায়িত্বে) কৃষিবিদ আবুল হোসেন জানান, প্রতি বছরই টার্গেটের চেয়েও বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হচ্ছে। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কৃষি বিভাগ এরই মধ্যেই ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে।

রাজশাহী জোনের অতিরিক্ত পরিচালক এস এম নুরুজ্জামান মন্ডল জানান, এই জোনের কৃষকরা আগ্রহ নিয়েই সরিষা আবাদ করেন। বাজারমূল্য ভালো থাকলে সরিষার দিকে কৃষকরা আরও ঝুঁকবেন।

সরিষা দিয়ে দেশের তেল ঘাটতির একটি বড় অংশই পূরণ সম্ভব বলে মনে করে কৃষিবিভাগ।

বাংলাদেশ সময়: ০২৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৬
আইএ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।