ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

শতাধিক গাড়ি নজরদারিতে, ফেরত না দিলে ব্যবস্থা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০১৬
শতাধিক গাড়ি নজরদারিতে, ফেরত না দিলে ব্যবস্থা

ঢাকা: কার্নেট সুবিধা (শুল্কমুক্ত) সুবিধায় আমদানিকৃত তিন শতাধিক গাড়ির মধ্যে শতাধিকের বেশি গাড়ি ফেরত দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
 
এসব গাড়ি নজরদারিতে রেখেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।

পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার পরও সেগুলো ফেরত না দিলে জব্দ করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
 
সোমবার (০৪ এপ্রিল) রাতে গুলশানে কার্নেট সুবিধায় আমদানিকৃত প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের গাড়ি জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।
 
মঙ্গলবার (০৫ এপ্রিল) শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
 
তিনি জানান, গুলশান-২ এর ১০৪ নম্বর রোডের বাড়ি নং-৫ (জি) কাজী রেজাউল মোস্তফা’র বাড়ি থেকে বিএমডব্লিউ এক্স-৫ গাড়িটি জব্দ করা হয়।
 
ড. মইনুল খান জানান, গাড়িতে পাওয়া নম্বরপ্লেটে রেজিস্ট্রেশন নং ঢাকা মেট্টো-ঘ-১৪-০৩৪৩। গাড়িটি শুধু শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করেই অপরাধ হয়নি। অবৈধভাবে আমদানি করে ভুয়া দলিল দাখিল করে বিআরটিএ থেকে রেজিস্ট্রেশনও নেওয়া হয়েছে এবং প্রতি বছর রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করা হয়।
গাড়িটির চেসিস সিডেন হলেও বিআরটিএতে আরডিআই চেসিস দেখিয়ে জালিয়াতি করে নবায়ন করা হতো। এতেও প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।
 
গাড়িটির অবৈধভাবে শুল্ক করাদি ফাঁকি দিয়ে আনা হয়েছে। যার বর্তমান মূল্য প্রায় তিন কোটি টাকা। অবৈধ গাড়ি কিভাবে বিআরটিএ নবায়ন করে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান মহাপরিচালক।
 
ইন্টারন্যাশনাল কাস্টমস কনভেনশন অনুযায়ী, বাংলাদেশে আসা পর্যটকরা নিজেদের সুবিধার্থে কার্নেট সুবিধায় গাড়ি নিয়ে আসার সুযোগ পান। তবে নির্ধারিত সময় শেষে যেকোনো শুল্ক পয়েন্ট দিয়ে তা নিয়ে যেতে হয়।
 
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের সূত্র মতে, ১৯৬৩ সাল থেকে ২০১২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে কার্নেট সুবিধায় ২৪৩টি গাড়ি আমদানি হয়েছে। কিন্তু ২০০৮ সাল পর্যন্ত ১২২টি ফেরত গেছে।
 
সূত্র মতে, ২০০৯ সালে ১৩টি গাড়ি এলেও ফেরত গেছে ৮টি গাড়ি। ২০১০ সালে ৪৯টি গাড়ি এলেও ফেরত গেছে ৪টি। ২০১১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ৬৬টি গাড়ি এলেও একটিও ফেরত যায়নি। ২০১১ সালের মে থেকে ২০১২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ৯টি গাড়ি এলেও ৮টি ফেরত গেছে। মোট ২৪৩টি গাড়ির মধ্যে ১২১টি ফেরত যায়নি।
 
সূত্র মতে, ২০০৯ সাল থেকে এসব গাড়ি বাংলাদেশে ভুয়া রেজিস্ট্রেশনে হাতবদল হতে থাকে। পরে ২০১৩ সালে এনবিআর এ সুবিধা বাতিল করে দেয়।
 
ড. মইনুল খান জানান, ২০১৩ সাল পর্যন্ত ২৪৩টি বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে ১২১টি গাড়ি জাল দলিল ও ভুয়া রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ব্যবহার করা হচ্ছে।
 
এসব গাড়ি অনেক হাতবদল হয়েছে। সবগুলো আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। আমরা এ পর্যন্ত সাতটি গাড়ি জব্দ করেছি, যার তিনটি হল কার্নেট সুবিধায় আমদানি করা।
 
তিনি বলেন, শতাধিক গাড়ির মধ্যে প্রতিটি গাড়িতে ১ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আমদানি করা হয়েছে। এসব গাড়ি বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে রাস্তায় চলছে।
 
রাস্তা, বাসা-বাড়ি, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ যেসব জায়গায় গাড়িগুলো রয়েছে সেসব জায়গায় আমাদের গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে।
 
গাড়িগুলো ফেরত দিতে আমরা শিগগিরই পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেবো। ফেরত না দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ড. মইনুল খান।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৬
আরইউ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।